আটলান্টায় পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যু, পুলিশ প্রধানের পদত্যাগ
যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশী হেফাজতে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর চলমান বর্ণবাদবিরোধী উত্তাল আন্দোলনের মধ্যেই আটলান্টায় পুলিশের গুলিতে রেইশার্ড ব্রুকস নামে আরেক কৃষ্ণাঙ্গ নিহত হয়েছেন।
বিবিসি জানায়, শুক্রবার, রাতে ২৭ বছর বয়সী ওই তরুণ নিহত হন। এরপরই পদত্যাগ করেছেন আটলান্টার পুলিশ প্রধান।
জানা গেছে, ব্রুকস শুক্রবার রাতে ওয়েন্ডির একটি ফাস্টফুড রেস্তোরাঁর কাছে তার গাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। রেস্তোরাঁর কর্মীরা পুলিশকে ফোন করে অভিযোগ জানান যে, এভাবে ঘুমিয়ে থাকার কারণে তাদের গ্রাহকরা ওই লেনে গাড়ি চালাতে পারছেন না।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণের পর আটলান্টা পুলিশের এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ‘কর্মকর্তাদের সঙ্গে হাতাহাতির মধ্যে ব্রুকস এক পুলিশকর্মীর বন্দুক কেড়ে নিয়ে পালাতে চেষ্টা করেন। কর্মকর্তারা তাড়া করলে তিনি পুলিশের দিকে বন্দুক তাক করেন। তখন পুলিশকর্মী গুলি চালাতে বাধ্য হন।’
ব্রুকসকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অস্ত্রোপচারের পরে তিনি মারা যান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজনের ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, রেস্তোরাঁর সামনের রাস্তায় দুই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে ধস্তাধস্তি করছেন ব্রুকস। এরপর মুক্ত হয়ে পার্কিং লট দিয়ে দৌঁড়ে যাচ্ছেন, এ সময় তার হাতে পুলিশের একটি টেইজার গান ছিল বলে মনে হয়েছে।
রেস্তোরাঁর সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা দ্বিতীয় আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, দৌঁড়ানো অবস্থায় ঘুরে পেছনে আসা দুই পুলিশ কর্মকর্তার মধ্যে একজনের দিকে সম্ভবত টেইজার গান তাক করছেন ব্রুকস। এরপর দুই পুলিশের মধ্যে কোনো একজনের গুলিতে তিনি রাস্তায় লুটিয়ে পড়ছেন।
শনিবার, এ ঘটনায় আটলান্টার মেয়র কেইশা লান্স বটমস জানান, ব্রুকসের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নগরীর পুলিশ প্রধান এরিকা শিল্ডস তাৎক্ষণিকভাবে পদত্যাগ করেছেন। পুলিশ বিভাগের অন্য পদে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
আইনজীবীর দাবি, ব্রুকস পুলিশের বিরুদ্ধে টেইজার গান ব্যবহার করলেও আটলান্টা পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করার কোনো অধিকার ছিল না, কারণ টেইজার প্রাণঘাতী কোনো অস্ত্র নয়।
এর আগে গত ২৫ মে মিনিয়াপোলিসে পুলিশি হত্যাকাণ্ডের শিকার হন জর্জ ফ্লয়েড। এর বিরুদ্ধে গত তিন সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ চলছে। পুলিশের গুলিতে ব্রুকসের মৃত্যুতে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের বিক্ষোভকারীরা।
শনিবার আটলান্টার একটি সড়ক বন্ধ করে তারা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। ওয়েন্ডির ওই রেস্তোরাঁটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
Comments