করোনা আপডেট: শরীয়তপুর, লালমনিরহাট, নোয়াখালী, রাজবাড়ী
শরীয়তপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নোয়াখালীতে আরও ২৬ জন ও রাজবাড়ীতে নতুন ২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। অন্যদিকে লালমনিরহাটে মারা যাওয়া ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধির নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট করোনা পজিটিভ এসেছে।
শরীয়তপুরে আরও ৪৩ জনের করোনা শনাক্ত
শরীয়তপুরে আরও ৪৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট ২৪৭ জনের করোনা শনাক্ত হলো।
আজ রোববার সন্ধ্যায় জেলা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. মো. আবদুর রশিদ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ডা. রশিদ বলেন, ‘আজ আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) থেকে জেলার ৪৩ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ এসেছে। জেলায় করোনা শনাক্তের হিসেবে এটাই সর্বোচ্চ।’
তিনি আরও বলেন, জেলায় এ পর্যন্ত ১০৯ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন এবং চার জন মারা গেছেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, নতুন শনাক্তদের মধ্যে সদর উপজেলার ১১ জন, জাজিরা উপজেলার ১০ জন, নড়িয়া উপজেলার চার জন, ভেদরগঞ্জ উপজেলার নয় জন, গোসাইরহাট উপজেলার তিন জন ও ডামুড্যা উপজেলায় ছয় জন।
লালমনিরহাটে মারা যাওয়া বিক্রয় প্রতিনিধি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের বাড়াইপাড়া গ্রামে মারা যাওয়া ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। আজ লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নিহতের বাড়ি ও বাড়ির আশেপাশে কয়েকটি বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। নিহতের সংস্পর্শে আসা স্বজনদের নমুনা সংগ্রহ করে রংপুর মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।
স্বাস্থ্য বিভাগ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ জুন করোনা উপসর্গ জ্বর, সর্দি ও গলাব্যথা নিয়ে নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ওই ব্যক্তি। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা মেডিকেল টিম ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজে পিসিআর ল্যাবে পাঠায়। তিনি চট্টগ্রামে একটি ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। জ্বর, সর্দি ও জন্ডিস নিয়ে গত ৭ জুন পরিবারসহ গ্রামের বাড়িতে আসেন। তিনি বাড়িতেই চিকিৎসা নেন।
নোয়াখালীতে আরও ২৬ জনের করোনা শনাক্ত
নোয়াখালীতে পুলিশ, স্বাস্থ্যকর্মী ও একই পরিবারের ৪ জন সহ আরও ২৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হলো ১ হাজার ৩৪০ জন। নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মো. মোমিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ও করোনা ফোকাল পার্সন ডা. নিলিমা ইয়াছমিন বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় উপজেলায় আরও ১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে এক জন চিকিৎসক আছেন। এ ছাড়াও, সোনাপুর এলাকার একই পরিবারের তিন নারীসহ চারজন আছেন। আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থার প্রেক্ষিতে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হবে। তাদের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।’
চাটখিল উপজেলা করোনা ফোকাল পার্সন ডা. তামজীদ হোসাইন বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে ১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৪ জন পুলিশ সদস্য ও ১ জন সহকারী চিকিৎসক ও তার স্ত্রী আছেন। আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের মাইজদী কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসক সহকারী ও তার স্ত্রীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।’
আজ বিকেলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মোমিনুর রহমান বলেন, ‘নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সদরে ১৪ জন ও চাটখিল উপজেলার ১২ জন আছেন। জেলায় মোট আক্রান্ত ১ হাজার ৩৪০ জন।’
রাজবাড়ীতে চিকিৎসকসহ আরও ২০ জনের করোনা শনাক্ত
রাজবাড়ীতে নতুন করে এক চিকিৎসক আরও ২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১১৫।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন মো. নুরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের তথ্যমতে, নতুন করে জেলায় যে ২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এদের মধ্যে রাজবাড়ী সদর উপজেলার ছয় জন, বালিয়াকান্দি উপজেলার সাত জন, কালুখালী উপজেলার চার জন ও গোয়ালন্দ উপজেলায় নতুন করে আরও তিন জন আক্রান্ত হয়েছেন।
বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাফিন জব্বার বলেন, ‘বর্তমানে আমিসহ মোট চার জন চিকিৎসক উপজেলায় কর্মরত আছি। তার মধ্যে একজন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রাধুনী আক্রান্ত হয়েছেন। এখানে চিকিৎসা নেওয়া এক জনের করোনা শনাক্ত হওয়ায় বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরতদের করোনা আক্রান্ত হওয়ায় আশঙ্কা আছে। এ জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসা সেবা সীমিত করা হয়েছে। এখন থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শুধুমাত্র জরুরি চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চলবে। নতুন করে আর কোনো রোগী ভর্তি নেওয়া হবে না। বহির্বিভাগেও আপাতত চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে না।’
Comments