ঠাকুরগাঁওয়ে সড়কের পাশে অস্থায়ী কোচস্ট্যান্ডের কারণে জনদুর্ভোগ

ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তা-বাসস্ট্যান্ড সড়কের পাশে অস্থায়ী কোচ কাউন্টারের কারণে দিনের পর দিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীসহ বিভিন্ন বাহনের যাত্রীদের।
Thakurgaon Bus counters.jpg
দুপুরের পর থেকে রাত প্রায় এগারটা পর্যন্ত অস্থায়ী কাউন্টারগুলোর সামনে সড়কের প্রায় অর্ধেক জায়গা জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকে বাস। ছবি: স্টার

ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তা-বাসস্ট্যান্ড সড়কের পাশে অস্থায়ী কোচ কাউন্টারের কারণে দিনের পর দিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীসহ বিভিন্ন বাহনের যাত্রীদের।

দুপুরের পর থেকে রাত প্রায় এগারটা পর্যন্ত এই অস্থায়ী কাউন্টারগুলোর সামনে সড়কের প্রায় অর্ধেক জায়গা জুড়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, চট্টগ্রামগামী কোচগুলোর অবস্থানের কারণে শহরের চৌরাস্তা থেকে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত যানজট লেগেই থাকে। সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় বিভিন্ন বাহনের যাত্রীসহ পথচারীদের।

ঠাকুরগাঁও পৌরসভার পক্ষ থেকে বার বার মটর মালিক সমিতি এবং পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের নেত্রীবৃন্দকে কোচ স্ট্যান্ডগুলো শহরের ভেতর থেকে সরিয়ে বাস টার্মিনালে নেওয়ার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তারা ভ্রুক্ষেপ করছেন না বলে অভিযোগ পৌর কর্তৃপক্ষের। 

গত কয়েকদিন সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের আমতলা মোড় (অগ্রণী ব্যাংকের সামনে) থেকে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত সড়কের পাশে অস্থায়ীভাবে কোচ কাউন্টার করা হয়েছে। এসব কাউন্টার থেকে তুলনামূলক কম ভাড়ায় স্বল্প আয়ের মানুষেরা যাতায়াত করেন। 

একটি কাউন্টারে দুই-তিনটি করে বাসের টিকিট দেওয়া হয়। ফলে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত সড়কের একপাশে প্রায় অর্ধেক জায়গা দখল করে থাকে ৩০/৩৫টি কোচ।

এখান থেকে যাত্রী নিয়ে তাদের গন্তব্যে রওনা দেওয়ার কারণে রাস্তার পরিধি সংকুচিত হয়ে পড়ে। শুরু হয় যানজটের মধ্যে পথচারীসহ বিভিন্ন বাহনের যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল।  

এই স্থানে থাকা একটি কাউন্টার পরিচালনা করেন আব্দুস সালাম। তার কাউন্টার থেকে সাফিনা, রয়েল ও তাজ এন্টারপ্রাইজ নামে তিনটি গাড়ি গাজীপুর, ঢাকা ও কুমিল্লা রুটে চলে। বাস টার্মিনালের পরিবর্তে রাস্তার ধারে কাউন্টার করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টার্মিনাল থেকে যাত্রী পাওয়া যায় না।’

তবে শ্রমিক নেতারা যদি সব গাড়ির কাউন্টার টার্মিনালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তবে তাদের যেতে আপত্তি নেই বলে জানান তিনি।

ইউনাইটেড গাড়ির এজেন্ট মো. বাবুল জানান, শ্রমিক নেতারাই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।

শহরের ঘোষপাড়ার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাস্তার অর্ধেক জায়গাজুড়ে বাসগুলো থাকার কারণে দুপুরের পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলাচল করা কষ্টকর হয়ে যায়। বছরের পর বছর ধরে পথচারীসহ বিভিন্ন বাহনের যাত্রীদের যে দুর্ভোগ, তা নিরসনে কারো যেন কোনো মাথাব্যথা নেই।’  

শহরের প্রধান সড়কে রাস্তার পাশে গাড়ির কাউন্টার থাকায় যাতায়াতে অসুবিধার কথা স্বীকার করে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র মির্জা ফয়সাল আমিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত দুই-তিন বছরে বেশ কয়েকবার বাস টার্মিনালে এসব গাড়ির কাউন্টার নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে সফল হতে পারিনি। এসব গাড়ির জন্য টার্মিনালে কাউন্টার করে দেওয়া হবে এবং কোনো ফি দিতে হবে না, এমন প্রস্তাবনার পরেও অদৃশ্য কারণে তারা কাউন্টার স্থানান্তরে রাজি হয় না।’   

‘জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বেশ কয়েকবার শহরের ভেতর থেকে কাউন্টার সরানোর বিষয়টি উত্থাপন করেও কোনো লাভ হয়নি’, বলেন তিনি। 

ঠাকুরগাঁও জেলা মটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জব্বার বলেন, ‘সেখানে কুমিল্লাগামী পাঁচটি গাড়ি অবস্থান করে বিকাল তিনটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত। অন্যান্য গাড়িগুলো রানীশংকৈল ও বালিয়াডাঙ্গী থেকে এসে যাত্রী নিয়ে চলে যায়।’

তবে, বাস টার্মিনালে কাউন্টার স্থায়ীভাবে নিয়ে যাওয়া নিয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।

জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘জনদুর্ভোগ এড়াতে শ্রমিক নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ 

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago