প্রবাস

ব্রেন্ডন টেইলর: ক্রিকেট অঙ্গনের এক অভাগা রাজপুত্রের গল্প!

অভিজ্ঞ সব ক্রিকেটারকে হারিয়ে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট তখন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার পথে। হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, এলটন চিগাম্বুরা, চামু চিবাবা, টাটেন্ডা টাইবুর মতো তরুণরা সে সময় হাল ধরলেন বিশ্ব ক্রিকেট মঞ্চে জিম্বাবুয়েকে কোনোভাবে টিকিয়ে রাখার জন্য। তবুও কিছুই যেন হচ্ছিল না। উপায়ান্তর না দেখে শেষ পর্যন্ত মাত্র আঠারো বছর বয়সী টেইলরকে নামানো হলো দেশটির ক্রিকেটের শেষ ভরসার প্রতীক হিসেবে।
Brendon Taylor
ছবি: রয়টার্স

ক্রিকেটকে অনেক কিছুই দিয়েছেন কিন্তু ক্রিকেট যেন প্রত্যেক বারই খালি হাতে ফিরিয়েছে ব্রেন্ডন টেইলরকে। জিম্বায়ুয়েতে জন্ম। এজন্য বোধহয় কেউ তাকে সেভাবে স্মরণ রাখেও না। তবে আজকের দিনে সত্যিকারের ক্রিকেটবোদ্ধা যারা রয়েছেন, সবাই একবাক্যে জিম্বাবুয়ের এ ব্যাটসম্যানকে লিজেন্ডদের একজন হিসেবে উল্লেখ করবেন। ক্রিকেট অঙ্গনের সত্যিকারের এক অভাগা রাজপুত্র বলা চলে ব্রেন্ডন টেইলরকে।

সময়টা ২০০৪ সাল। জিম্বাবুয়ের সে সময়কার প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের ঘোষিত বেশ কিছু বর্ণবিদ্বেষী নীতি এবং একই সঙ্গে দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির কারণে ক্রিকেট থেকে ততদিনে একে একে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, গ্রান্ট ফ্লাওয়ার, হেনরি ওলোঙ্গা, নেইল জনসন, অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলসহ নামিদামি সব তারকারা। রাতারাতি আকাশে উড়তে থাকা এক উদীয়মান পরাশক্তির যেন হঠাৎ করে মৃত্যু ঘটে সে বছর। এক নিমিষে বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি দল সর্বস্ব খুঁইয়ে হয়ে পড়ল খর্বশক্তির সাধারণ মানের একটি দল। অভিজ্ঞ সব ক্রিকেটারকে হারিয়ে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট তখন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার পথে। হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, এলটন চিগাম্বুরা, চামু চিবাবা, টাটেন্ডা টাইবুর মতো তরুণরা সে সময় হাল ধরলেন বিশ্ব ক্রিকেট মঞ্চে জিম্বাবুয়েকে কোনোভাবে টিকিয়ে রাখার জন্য। তবুও কিছুই যেন হচ্ছিল না। উপায়ান্তর না দেখে শেষ পর্যন্ত মাত্র আঠারো বছর বয়সী টেইলরকে নামানো হলো দেশটির ক্রিকেটের শেষ ভরসার প্রতীক হিসেবে।

জিম্বাবুরের এক সময়কার বিখ্যাত টেস্ট ক্রিকেটার ক্যাম্পবেলের বাবা ইয়ান ক্যাম্পবেলের পরিচালিত লিল ফোর্ডা স্কুল থেকে ক্রিকেট প্রশিক্ষণ নেওয়া এ তরুণের খুব বেশি ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট ম্যাচে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতাও ছিল না। বয়স যে মূল নয়, নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আর মানসিক দৃঢ়তা থাকলে যে কোনো অসাধ্যকে সাধন করা যায়, সেটা প্রমাণ করলেন টেইলর। মূলত ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেক হলেও দলের প্রয়োজনে একটা সময় টাইবুর অনুপস্থিতিতে উইকেটরক্ষকের ভূমিকাও পালন করেছেন।

২০০৪ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের বিপক্ষে টেইলরের টেস্ট অভিষেক হয়। একই বছরের ৬ মে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের মধ্য দিয়ে রঙিন জার্সিতেও মাঠে নামার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন তিনি। প্রথম চার ওয়ানডেতে ব্যর্থ হলেও ক্যারিয়ারের পঞ্চম ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭৪ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেন তিনি। ঠিক এক মাস পর শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরির মধ্য দিয়ে নিজেকে আরও একবার মেলে ধরেন তরুণ টেইলর। তবে প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরির স্বাদ পেতে তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল পাঁচ বছর।

২০০৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১১৮ রানের এক অপরাজিত ইনিংসের মধ্য দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম শতক পূর্ণ করেন টেইলর, যদিও সে ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ১ উইকেটে বাংলাদেশের কাছে জিম্বাবুয়ে পরাজিত হয়। এক বছরের মাথায় দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কার মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষেও সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব অর্জন করেন তিনি। ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অপরাজিত  ১৪৫ রানের ইনিংসটি তার ক্যারিয়ারের সেরা ওয়ানডে ইনিংস।

২০১১ সালের অগাস্ট মাসে প্রায় পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট ফেরে জিম্বাবুয়েতে। একই বছর অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে ব্যর্থতার দরুণ চিগাম্বুরাকেও অধিনায়কের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর টেইলরকে সকল ফরম্যাটে জিম্বাবুয়ের নতুন অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়। নেতৃত্ব পেয়েই প্রায় পাঁচ বছর পর মাঠে গড়ানো টেস্টকে স্মরণীয় করে রাখেন নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্ৰথম ইনিংসে ৭২ রানের পাশাপাশি দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির পাশাপাশি বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৩০ রানের বিশাল জয় যেন রাজকীয়ভাবে টেইলরের অধিনায়কত্ব ও পাঁচ বছর পর জিম্বাবুয়ের টেস্ট ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনকে বরণ করে নেয়।

একই বছরের অক্টোবরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত তিন ম্যাচের দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১২৮* ও দ্বিতীয় ম্যাচে ১০৭* রানের দুইটি অসাধারণ ইনিংস খেলেন টেইলর। ফলে জিম্বাবুয়ের ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরির কৃতিত্ব অর্জন করেন তিনি। তবে সতীর্থ ব্যাটসম্যানদের দুর্বল পারফরম্যান্সের কারণে একা দলকে জেতানো সম্ভব হয়নি তার। সিরিজের তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচে ৬৫ বলে ৭৫ রানের দ্রুতগতির ইনিংসের মধ্য দিয়ে নিউজিল্যান্ডের ৩২৮ রানের বিশাল বাধা টপকে হোয়াইটওয়াশের হাত থেকে দলকে বাঁচাতে বড় ভূমিকা রাখেন তিনি। টেইলরের ৩১০ রান ছিল তিন ম্যাচের দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজে কোনো ব্যাটসম্যানের এককভাবে সংগ্রহ করা সবচেয়ে বেশি রান। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজে কিউই ব্যাটসম্যান মার্টিন গাপটিল এই রেকর্ডটি ভেঙে দেন্। ২০১১ সাল ছিল টেইলরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সেরা বছরগুলোর মধ্যে একটি। সে বছর বর্ষসেরা ক্রিকেটার ও বর্ষসেরা ব্যাটসম্যানের সংক্ষিপ্ত তালিকায়ও তিনি স্থান পান।

২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে যৌথভাবে আয়োজিত বিশ্বকাপ ক্রিকেটে  নিজেকে আরও একবার বিশ্ব মঞ্চে তুলে ধরেন কিংবদন্তিতুল্য ব্যাটসম্যান টেইলর। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাসে জিম্বাবুয়ের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরির স্বাদ গ্রহণ করেন তিনি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৯১ বলে ১২১ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলার পরের ম্যাচে শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে ১১০ বলে ১৩৮ রানের ঝড়ো ইনিংসের মধ্য কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমীর হৃদয়ে স্থান করে নেন তিনি। ওই বিশ্বকাপে তার ব্যাট থেকে আসে ৪৩৩ রান, যা ছিল সে আসরে কোনো ব্যাটসম্যানের সংগ্রহ করা চতুর্থ সর্বোচ্চ রান। এমনকি সেবারের বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটারদের স্কোয়াডেও তিনি জায়গা করে নেন। একই বছর তিনি ইংল্যান্ডের ক্রিকেট ক্লাব নটিংহ্যাম্পশায়ারের সঙ্গে তিন বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। তাই তিন বছর তাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে হয়। এ সময় তার অবসর নিয়েও গুঞ্জন উঠছিল।

২০১৭ সালের অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ দিয়ে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে ফিরে আসেন টেইলর। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের চার ইনিংসের মধ্যে একটিতে অর্ধশতকের দেখা পান তিনি। 

ক্রিকেটের সবচেয়ে আধুনিক সংস্করণ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও দারুণ কার্যকরী ব্যাটসম্যান টেইলর। ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ে হারিয়েছিল অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, ম্যাথু হেইডেন, অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস, রিকি পন্টিং, শেন ওয়াটসনদের নিয়ে গড়া সে সময়ের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে। টেইলর খেলেছিলেন ৪৫ বলে অপরাজিত ৬০ রানের আগ্রাসী ইনিংস। এ পর্যন্ত তিনি সর্বমোট আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ৪০টি, যেখানে ২৫.৮২ গড়ে ও ১২০.১০ স্ট্রাইক রেটে তার সংগ্রহ ৮৭৮ রান।

দীর্ঘ প্রায় ষোলো বছর ক্রিকেট অঙ্গনে পদচারণা থাকলেও খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি টেইলর। এখন পর্যন্ত ১৯৬ ওয়ানডে ম্যাচে ৩৫.১৪ গড়ে তার মোট সংগ্রহ ৬,৩২৬ রান। সেঞ্চুরির সংখ্যা দশ ও হাফসেঞ্চুরির সংখ্যা ৩৮। ৩১ টেস্ট ম্যাচে ৩৫.৪৩ গড়ে তার সংগ্রহ ২,০৫৫ রান। সেঞ্চুরির সংখ্যা ছয় ও হাফসেঞ্চুরির সংখ্যা দশ। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর ১৭১।

পরিসংখ্যান বিবেচনায়, আজকের দিনের অনেক তারকা ব্যাটসম্যানের ক্যারিয়ারও এরকম সমৃদ্ধ নয়। জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট ইতিহাসেও তার সমতুল্য ব্যাটসম্যান কেউ নেই। ওডিআই ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ের হয়ে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডটি তার দখলে। ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচের দুই ইনিংসে ১৭১ ও ১০২* রান সংগ্রহের মধ্যে দিয়ে বিশ্ব ক্রিকেট ইতিহাসের ৭২তম এবং জিম্বাবুয়ের ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট ম্যাচের উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরির স্বাদ নেন তিনি।

গত বছর দুর্নীতির অভিযোগ এনে আইসিসি জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ডকে সাসপেন্ড করেছিল। ফলে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের সঙ্গে সঙ্গে তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারও অন্ধকারের অতল গহ্বরে পতিত হয়। তবে ক্রিকেটে ফিরে তারা কয়েক মাস আগেই বাংলাদেশের সঙ্গে সিরিজ খেলেছে। এ ছাড়া, ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেটের প্রসারতার কারণে এবং একইসঙ্গে ক্রমবর্ধমান স্পন্সরভিত্তিক ক্রিকেট কাঠামোর কারণে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, নিউজিল্যান্ডের মতো বড় দলগুলোও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ আয়োজনে আগের মতো আর আগ্রহ দেখায় না। এমনকি আমাদের বাংলাদেশের জাতীয় দলের একজন ক্রিকেটার এক বছরে যতগুলো ম্যাচ খেলতে পারেন, জিম্বাবুয়ের একজন ক্রিকেটারের পক্ষ দুই কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে তিন বছরেও এতগুলো ম্যাচ খেলার সৌভাগ্য হয় না।

উইকেটকিপিংয়ের পাশাপাশি মাঝে-মধ্যে অফ স্পিন বলও করেছেন টেইলর, টেস্ট ক্রিকেটে তার শিকার করা উইকেটের সংখ্যা ৯টি। বল হাতে সফল হতে পারেননি, তবে টেইলরের ব্যাটিং যারা পরখ করেছেন, এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, আমরা আজকের দিনে বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যান বলতে যাদেরকে বুঝি, তাদের থেকে কোনো অংশে তিনি কম যান না।

জিম্বাবুয়েতে জন্ম না নিলে কিংবা জিম্বাবুয়ের পরিবর্তে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড কিংবা ভারতের মতো বড় দলের হয়ে যদি তিনি প্রতিনিধিত্ব করতেন, হয়তো আজ বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ প্রোফাইলসম্পন্ন ব্যাটসম্যানদের তালিকায় টেইলরের নাম থাকত। ওয়ানডেতে এখনই তার যে পরিসংখ্যান, বড় কোনো দলের হয়ে খেলার সুযোগ পেলে অনায়াসে তিনি দশ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারতেন, এ দাবিটি কোনো ধরনের সঙ্কোচ ছাড়াই প্রকাশ করা যায়।

জানি না কোনো দিন জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের সেই সোনালি সময়ে আবার ফিরে আসতে পারবে কি-না। তবে সত্যি যদি আবারও সে দিনগুলো ফিরে আসে, তখন দেশটির ভবিষ্যতের সেই ক্রিকেট প্রজন্মের তারকাদের কাছে তিনি ঠাঁই পাবেন একজন আলোর দিশারীরূপে। কী নেই তার মাঝে? শুধু জিম্বাবুয়েতে খেলার কারণে এবং নিজের সেরাটা দিলেও সমকক্ষ কোনো ক্রিকেটারকে পাশে না পাওয়ায় বারবার নিজ দলের পরাজয় অবলোকন করতে হয়েছে তাকে। এর থেকে বেদনার আর কী হতে পারে?

জিম্বাবুয়ে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক টেস্ট অধিনায়ক ক্যাম্পবেল তাই বলেছেন, গত সাত কিংবা আট বছর ধরে দেশটির ক্রিকেট একজন টেইলেরর হাত ধরেই বেঁচে আছে। যতটুকু খেলার সৌভাগ্য হয়েছে, ততটুকু বিবেচনা করলে, অন্তত ওডিআই ফরম্যাটে ড্যারেন লেম্যান কিংবা স্টিভ ওয়াহকে টেক্কা দেওয়ার মতো প্রোফাইল তার রয়েছে। কিন্তু সেই একই গল্প ঘুরে-ফিরে। ‘জিম্বাবুয়ে’ শব্দটি তার কপালে কালির প্রলেপ দিয়ে রেখেছে এবং এ কারণে তাকে সেভাবে আলোচনায়ও আনা হয় না। ক্রিকেট অঙ্গনের একজন কিংবদন্তি রাজকুমার টেইলর যাকে হয়তো কেউই মনে রাখেনি, ভবিষ্যতেও রাখবে না। ক্রিকেটের এ বিস্ময় হারিয়ে যাবেন কালের অতল গহ্বরে।

রাকিব হাসান রাফি, শিক্ষার্থী, ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন ফিজিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স, ইউনিভার্সিটি অব নোভা গোরিছা, স্লোভেনিয়া

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

56m ago