বাজারে নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে চাহিদা বেড়েছে জীবাণুনাশক পণ্যের। আর এ চাহিদাকে পুঁজি করেই চট্টগ্রাম নগরীতে বিক্রি হচ্ছে নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার। প্রসাধনী কিংবা সুগন্ধির দোকান থেকে শুরু করে ফার্মেসির দোকানে তৈরি হচ্ছে নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে সোমবার (১৫.৬.২০২০) প্রায় ১০০ লিটার নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার জব্দ করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে চাহিদা বেড়েছে জীবাণুনাশক পণ্যের। আর এ চাহিদাকে পুঁজি করেই চট্টগ্রাম নগরীতে বিক্রি হচ্ছে নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার। প্রসাধনী কিংবা সুগন্ধির দোকান থেকে শুরু করে ফার্মেসির দোকানে তৈরি হচ্ছে নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার।  

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত গত তিন দিনে অভিযান চালিয়ে অন্তত সাত জনকে ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। এসময় জব্দ করা হয়েছে প্রায় এক হাজার লিটার নকল ও মানহীন হ্যান্ড স্যানিটাইজার।

নগরীর হাজারী গলি, সদরঘাট, কালুরঘাট ও কতোয়ালীসহ বিভিন্ন এলাকায় এসব নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিরীন আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরডিতে কোন ধরনের নিয়ম-নীতি মানা হচ্ছে না। প্রসাধনী কিংবা সুগন্ধির দোকান থেকে শুরু করে ফার্মেসির দোকানের মালিকরাই বাজার থেকে কেমিক্যাল কিনে এসব নকল হ্যান্ড সেনিটাইজার তৈরি করছেন।

তিনি বলেন, ‘আজ সোমবার বিকালে খাতুনগঞ্জ এলাকায় শাহ আমানত ও যমুনা স্টোর নামে দুটি সুগন্ধির দোকানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১০০ লিটার নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ধ্বংস করা হয়। একই সঙ্গে দুই দোকানদারকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গত তিন ধরে পরিচালিত অভিযানে অন্তত এক হাজার লিটার নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার জব্দ করা হয়েছে।’

অভিযানের সময় ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যাওয়ার কারণে অনেক ব্যবসায়ীকেই জরিমানার আওতায় আনা যায়নি বলে জানান তিনি।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ী এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজেরাই হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রস্ততকারক বনে গেছেন। এসব নকল স্যানিটাইজার ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখেছি এতে ক্ষতিকারক অনেক উপাদান রয়েছে। যা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক।

নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিক্রির দায়ে হাজারী গলির রূপসজ্জা কসমেটিকসকে গতকাল ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

দোকানের মালিক আমিনুল ইসলাম দাবি করেন, সঠিক পরিমাণেই সব উপদান ব্যবহার করে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করা হয়েছে। বাজারে সংকট থাকায় নিজেরাই বিভিন্ন কেমিক্যাল কিনে তা তৈরি করা হয়েছে বলেও দ্য ডেইলি স্টারকে জানান তিনি।

এসময় তিনি হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরির লাইসেন্স না থাকার কথাও স্বীকার করেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, একই রকম উপায়ে নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরির দায়ে শাহ আমানত সুগন্ধি হাউজ, যমুনা স্টোর, রফিক কসমেটিক্স, হক ক্যাপ হাউস, ইলিয়াস কালেকশন ও রাশেদ ক্যাপ হাউসকে জরিমানা করা হয়েছে।

হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈইর পূর্বে ঔষধ প্রশাসন অধিপ্তর থেকে অনুমোদন নেয়া প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন দপ্তরটির চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক হোসেন মোহাম্মদ ইমরাম।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, হ্যান্ড স্যানিটাইজর তৈরির জন্য একজন দক্ষ কেমিস্ট প্রয়োজন। যে কেউ যদি তা তৈরি করেন এবং তাতে যদি সঠিক মাত্রায় উপাদান না থাকে তাহলে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে। নগররীর বিভিন্ন স্থানেই এসব নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিক্রির অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা জেলা প্রশাসনের সাথে অভিযান পরিচালনা করেছি। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago