মায়োর্কাকে পেলে কেন এমন তেতে ওঠেন মেসি?
৯৯ দিন পর মায়োর্কার বিপক্ষে ফের মাঠে নেমেছিলেন লিওনেল মেসি। কিন্তু লম্বা সময়ের বিরতিতে মাঠের পারফরম্যান্সে এতোটুকু ধার কমেনি তার। পুরো ম্যাচ জুড়ে অসাধারণ শৈলী উপহার দিয়ে গোল করেছেন, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেনও। ম্যাচ সেরার পুরষ্কারও মিলে তার। যেমনটা পেয়েছিলেন প্রথম লেগেও। সে ম্যাচে তো করেছিলেন হ্যাটট্রিকই। তাতেই প্রশ্ন ওঠে মায়োর্কাকে পেলেই কেন তেতে ওঠেন মেসি?
এ প্রশ্নের উত্তরটা দিয়েছেন মায়োর্কা কোচ ভিসেন্তো মোরেনো।
গত ৭ ডিসেম্বর প্রথম লেগের ম্যাচে মায়োর্কার বিপক্ষে ম্যাচ খেলে বার্সেলোনা। সে ম্যাচের প্রথমার্ধে মায়োর্কা কোচ মোরেনোর সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন মেসি। বোঝাই যাচ্ছিল কিছু একটা বলে প্রতিপক্ষ কোচকে শাসাচ্ছেন তিনি।
মূলত, সে ম্যাচে শুরু থেকেই মেসিকে বেশ কয়েকবার শারীরিক আঘাত হানেন মায়োর্কার খেলোয়াড়রা। কয়েকবার ব্যথা পান মেসি। প্রাথমিক শুশ্রূষা নিয়েছেন। শঙ্কা ছিল অন্য দিকে। তার কিছু দিন আগেই মাত্র ইনজুরি থেকে উঠেছিলেন মেসি। প্রতিপক্ষের এমন একের পর আক্রমণে এমনিতেই রেগে আছেন, তার উপর রেফারি ফাউল ধরায় তার প্রতিবাদ করেন মায়োর্কা কোচ। তাতেই ক্ষেপে যান মেসি। রীতিমতো তর্কে লিপ্ত হন এ আর্জেন্টাইন তারকা।
সম্প্রতি এদু পিনোর ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মায়োর্কা কোচ বলেছেন, 'একটি অ্যাকশন সবাই মিস করে গেছে। সেটা ছিল মেসির। ওইখানে কিছু ফাউল হয়েছিল। পরে আমরা দেখেছি যে ওইটা ফাউল ছিল। আমি মেনেও নিচ্ছি। তবে, তখন আমার কাছে মনে হয়েছিল এটা ফাউল না। এই জন্য রেফারি ও মেসিকে বলেছিলাম আমার মনে হয় না ফাউল। সেখানে এর বেশি কিছু হয়নি।'
বিষয়টি সেখানেই শেষ হয়নি। বিরতির সময় মোরেনোকে আরও এক দফা কথা শুনিয়ে দিয়েছিলেন মেসি। মোরেনোর ভাষায়, 'মূল কাহিনীটা হয় ড্রেসিং রুমের করিডোরে। মেসি আমাকে বলে সে আমাদের ৭ গোল দিবে। সে তখন সুয়ারেজকে বলছিল, যে করেই হোক ওদের ৭ গোল দিতে হবে।'
পরে অবশ্য ৭ গোল দিতে পারেননি মেসি। তবে কমও যাননি। ৫টি গোল দিয়েছেন যার মধ্যে ৩টি ছিল মেসির। বেচারা মোরেনো মেসির কাছে শাসানী খেয়েছেন, দেখেছেন মেসির জেদ কতোটা কঠিন হতে পারে। পরে আবার নিজের শিষ্যদের কাছ থেকেও এক প্রকার বকুনিই খেয়েছেন। হারের দায় সবাই তাকে দিয়েছেন বলে জানালেন মায়োর্কা কোচ, 'আমার খেলোয়াড়রা পরে সবাই আমাকে ওই হারের জন্য দায়ী করেছে। ওরা বলেছে আমি নাকি মেসিকে খেপিয়ে দিয়েছি।'
এতো কিছু হয়ে যাওয়ার পরও মেসির উচ্ছ্বসিত প্রশংসাই করেন মোরেনো, 'সে বিশ্বের সের খেলোয়াড়। তার চরিত্রের দিকে তাকালেই বুঝবেন।'
মেসি হয়তো সেদিনের কথা ভুলে যাননি। দ্বিতীয় লেগেও পুরো বিশ্ব দেখে তার জাদু। লম্বা সময় পরে মাঠে নেমে আবারও সেই একই পারফরম্যান্স। এবারও তো প্রায় সেই হ্যাটট্রিকই। দলের গোলে হ্যাটট্রিক পরিমাণ অবদান রেখেছেন তো রেকর্ড ছয় বারের বলন ডি'অর জয়ী এ তারকা।
Comments