‘গোস্ট রাইটার’ পেলেন ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের বইয়ের স্বত্ব

নজিরবিহীন ঘটনায় গত রোববার বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস ‘গোস্ট রাইটার’ শেখ আবদুল হাকিমকে ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি বইয়ের স্বত্ব দিয়েছে।

নজিরবিহীন ঘটনায় গত রোববার বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস ‘গোস্ট রাইটার’ শেখ আবদুল হাকিমকে ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি বইয়ের স্বত্ব দিয়েছে।

এর ফলে এই সিরিজের বই পুনরায় মুদ্রণ করা হলে তিনি এর থেকে রয়্যালটি পাবেন।

চার দশকেরও বেশি সময় ধরে গুপ্তচরবৃত্তি-থ্রিলারভিত্তিক মাসুদ রানা সিরিজটির বই লিখেন গোস্ট রাইটার। জনপ্রিয় এই সিরিজের বেশিরভাগ আগ্রহী পাঠক জানেন যে প্রথম কয়েকটি বইয়ের বাইরে মূল লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন আর কোনো বই লেখেননি।

অনেক পাঠক বলে থাকেন যে কাজী আনোয়ার কোন বইটি লেখেছেন আর কোনটি লেখেননি তা তারা পড়েই বলতে পারেন। ১৯৬৬ সালে এই সিরিজের প্রথম দুটি বই ‘ধ্বংস পাহাড়’ ও ‘ভরতনাট্যম’ প্রকাশিত হয়। এই বই দুটি কাজী আনোয়ারের নিজস্ব লেখা এবং এখন পর্যন্ত এই সিরিজের সবচেয়ে জনপ্রিয় বই।

এরপর থেকে আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় বিভিন্ন গুপ্তচরভিত্তিক উপন্যাসের ছায়া অবলম্বনে লেখা মাসুদ রানা সিরিজের বই প্রকাশিত হচ্ছে। এই বইগুলো গোস্ট রাইটার দিয়ে লেখা এবং সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত।

প্রতি বছর মাসুদ রানা সিরিজের বেশ কয়েকটি বই প্রকাশ পেত। গত তিন বছর ধরে প্রতি বছর চারটি, ২০১৬ সালে ছয়টি এবং ২০১৫ সালে সাতটি বই প্রকাশিত হয়েছিল।

বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা গোস্ট রাইটার শেখ আবদুল হাকিমকে কপিরাইট দিয়েছি। কারণ প্রথম বইয়ের জন্য কিছু টাকা পেলেও পুনরায় মুদ্রণের জন্য তিনি কোনো রয়্যালটি পেতেন না। আব্দুল হাকিম কপিরাইট পাবেন না বা বইটি লেখার জন্য তাকে এককালীন অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে এমন কোনো চুক্তি তার সঙ্গে হয়নি।’

মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি বইয়ের পাশাপাশি আব্দুল হাকিমকে কুয়াশা সিরিজের ৫০টি বইয়ের কপিরাইটও দেওয়া হয়েছে।

জাফর রাজা চৌধুরী আরও বলেন, ‘২০১০ সালে প্রথম অভিযোগটি করা হয়েছিল কিন্তু এর সমাধান হয়নি। তাই আব্দুল হাকিম গত বছরের ২৯ জুলাই একটি নতুন অভিযোগ দায়ের করেন।’

আব্দুল হাকিম ২০০৮ সাল পর্যন্ত সেবা প্রকাশনীর জন্য লিখেছেন। এরপর আর এই প্রকাশনীর জন্য তিনি লিখেননি।

লেখক বুলবুল চৌধুরী, বিশিষ্ট অনুবাদক শওকত হোসেন, মাসুদ রানা সিরিজের বইয়ের প্রচ্ছদ শিল্পী হাশেম খান ও সেবা প্রকাশনীর সাবেক বিক্রয় ব্যবস্থাপক ইসরায়েল হোসেন খান সাক্ষী হিসেবে বক্তব্য দিয়েছেন।

রেজিস্ট্রার বলেন, ‘আমরা দুজনের (লেখকের) মধ্যে সম্পর্ক কী তা জানতে চেয়েছিলাম। আমরা দেখেছি তাদের মধ্যে সম্পর্ক লেখক ও প্রকাশকের। প্রায় ৩৯ বছর ধরে তারা এক সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। আব্দুল হাকিম কোনো কর্মী বা কর্মচারী ছিলেন না এবং তার সঙ্গে ফ্রিল্যান্সার হিসেবেও কোনো চুক্তি ছিল না।’

‘গত ১১ সেপ্টেম্বর প্রথম শুনানি হয়। সব মিলিয়ে মোট তিনটি শুনানি হয়েছে যেখানে আব্দুল হাকিম ও কাজী আনোয়ারের আইনজীবীরা মুখোমুখি হয়েছিলেন,’ যোগ করেন তিনি।

আব্দুল হাকিম কপিরাইট বোর্ডের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইতে পারেন জানিয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘বেশিরভাগ মাসুদ রানা বইয়ের ছয়টি সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে। তবে তিনি শুধুমাত্র প্রথম সংস্করণের জন্য কিছু অর্থ পেয়েছেন এবং পরবর্তী কোনো সংস্করণ থেকে কোনো রয়্যালটি পেতেন না। শুরুর দিকে (সিরিজের) প্রতি অংশের জন্য তিনি ৮০০ টাকা এবং শেষের দিকে প্রতি অংশের জন্য তিনি ৪০০০ টাকা পেতেন।’

Comments

The Daily Star  | English
Metro now connects Uttara with Motijheel

Uttara-Motijheel Metro: 8am-8pm service not before April

Commuters may have to wait until July for service until midnight on the entire Uttara-Motijheel section, hints Metro rail authorities

6h ago