খুলনায় রোগীর স্বজনদের হামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. রকীবের মৃত্যুর অভিযোগ

রোগী মৃত্যুর ঘটনায় খুলনার গল্লামারী এলাকার রাইসা ক্লিনিকের মালিক চিকিৎসক ডা. আব্দুর রকীব খানকে (৫৯) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ওই রোগীর স্বজনের বিরুদ্ধে।
Dr. Abdur Rakib Khan-1.jpg
ডা. আব্দুর রকীব খান। ছবি: এফডিএসআর

রোগী মৃত্যুর ঘটনায় খুলনার গল্লামারী এলাকার রাইসা ক্লিনিকের মালিক চিকিৎসক ডা. আব্দুর রকীব খানকে (৫৯) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ওই রোগীর স্বজনের বিরুদ্ধে।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

ডা. আব্দুর রকীব খান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন পরিচালক ও বাগেরহাট সরকারি মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) অধ্যক্ষ।

নিহতের ছোট ভাই মো. সাইফুল ইসলাম খান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত রোববার সকালে গল্লামারীর মুহাম্মদ নগর এলাকার সন্তানসম্ভবা এক নারীকে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করেন স্বজনরা। ওই নারীর কিছু জটিলতা থাকায় ওইদিন বিকেলে সিজারের মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব করানো হয়। প্রথম দিকে বাচ্চা ও মা দুইজনই ভালো ছিলেন। কিন্তু রাতে মায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। সকালে ওই রোগীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য সুপারিশ করা হয়।

সাইফুল ইসলাম খান বলেন, ‘সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সেখান থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন সেখানকার চিকিৎসকরা। দুপুরের দিকে সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে ওই নারী মারা যান। এরপর রাত ৯টার দিকে ওই নারীর স্বজনরা মরদেহ নিয়ে ক্লিনিকের সামনে এসে ডা. রকীব খানকে মারধর করেন। এসময় ভারী কিছু দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হয়।’

‘মারধরের পর কয়েকবার বমি করেন ডা. রকীব খান। অবস্থা গুরুতর হতে থাকলে রাত ২টার দিকে তাকে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকালের দিকে সিটিস্ক্যান করে দেখা যায় তার মাথায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। সেখান থেকে দুপুরের দিকে তাকে শেখ আবু নাসের হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যার দিকে তিনি মারা যান’, বলেন তিনি।

এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানিয়েছেন সাইফুল ইসলাম খান।

বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন খুলনার সভাপতি গাজী মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ডা. রকীব খান একজন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক। যেখানে করোনাকালে সবাই প্রাইভেট ক্লিনিক বন্ধ রেখেছেন, সেখানে তিনি ঝুঁকি নিয়ে তা চালু রেখে মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন। এর চেয়ে মহৎ কাজ আর কী হতে পারে! কিন্তু তাকেই রোগীর স্বজনদের হাতে মার খেয়ে মারা যেতে হলো। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কোনো ঘটনা হতে পারে না।’

ডা. রকীব খানের মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি রাইটস অ্যান্ড রেসপন্সসিবিলিটি (এফডিএসআর)।

সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক ডা. রাহাত আনোয়ার চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগে কোনো আইনি ব্যবস্থা না নিয়ে এবং বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলে অভিযোগ না করে এভাবে সন্ত্রাসী হামলা করে একজন চিকিৎসকের প্রাণনাশ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’

দ্রুততম সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে ওই রোগীর স্বজনদের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা করা যায়নি।

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago