হিরালালের আদর্শ মৎস্য খামার, কর্মসংস্থান হচ্ছে স্থানীয়দের

সাবেক জেলা রেজিস্টার হিরালাল রায়। তিনি ২০১৭ সালের আগস্টে চাকরি থেকে অবসর নেন। তবে, অবসরের পরে নিজেকে থামিয়ে রাখেননি। গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাট সদরের মকড়া ঢঢোগাছ গ্রামে শুরু করেন মৎস্য চাষ।
আগ্রহী তরুণদের পরামর্শ দিচ্ছেন হিরালাল রায়। ছবি: এস দিলীপ রায়

সাবেক জেলা রেজিস্টার হিরালাল রায়। তিনি ২০১৭ সালের আগস্টে চাকরি থেকে অবসর নেন। তবে, অবসরের পরে নিজেকে থামিয়ে রাখেননি। গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাট সদরের মকড়া ঢঢোগাছ গ্রামে শুরু করেন মৎস্য চাষ।

অল্প সময়ের মধ্যে তার মৎস্য খামার হয়ে ওঠে আদর্শ মৎস্য খামারে। এখানে কিছু মানুষের কাজেরও সুযোগ তৈরি হয়। এই মৎস্য খামারের সুবাদে তিনিও হয়ে ওঠেন জেলার শ্রেষ্ঠ মৎস্য চাষি।

২০১৭ থেকে নিজের ও লিজ নেওয়া মোট ২৫ একর জমির পুকুরে মাছ চাষ করছেন তিনি। তার মৎস্য খামারটি আর দশ জন চাষির চেয়ে আলাদা। এটি জেলার আদর্শ মৎস্য খামার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

মাছের পাশাপাশি তার খামারে হাঁসও পালন করা হয়। এখানে আছে দেশি-বিদেশি জাতের হাঁস। ফলে, খামারটি পরিণত হয়েছে মকড়া ঢঢোগাছ গ্রামের দর্শনীয় স্থান।

হিরালাল রায় বলেন, ‘আয় করার জন্য মৎস্য চাষ শুরু করিনি। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর অবসরকালীন সময় নিজেকে ব্যস্ত রাখা এবং গ্রামের কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা কারার পরিকল্পনা নিয়ে খামার শুরু করি। জেলায় এখনো পুষ্টির ঘাটতি আছে। মাছ হলো পুষ্টি চাহিদা পূরণের একটি বড় অংশ। আমার মাছ চাষের এটাও একটি উদ্দেশ্য।’

‘এই থামার থেকে আয় করে তা নিজের জন্য ব্যয় করি না। এখানে কর্মরতদের বেতন ও মজুরি দিয়ে যা অবশিষ্ট থাকে তা সামাজিক কাজে ব্যয় করছি’, বলেন তিনি।

স্থানীয় জীবন রায় জানান, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এখানকার প্রায় অর্ধশত মানুষের জীবিকা নির্বাহের পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে হিরালাল রায়ের মৎস্য খামার। এখানে কিছু মানুষ কাজ করছেন মাসিক বেতনে আবার কিছু মানুষ দৈনিক মজুরিতে।

অনেক স্থান থেকে শিক্ষিত বেকার যুবকরা তার খামারে আসেন মাছ চাষের উপর পরামর্শ নিতে। হিরালাল রায় আগ্রহী যুবকদের তার খামার ঘুরে দেখান এবং পরামর্শ দেন।

স্থানীয় যুবক মুহিন রায় বলেন, ‘আমি মাছ চাষে পরামর্শের জন্য হিরালাল রায়ের কাছে যান এবং পরামর্শ নেন। তিনি আন্তরিকভাবে সবাইকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তার পরামর্শগুলো আধুনিক আর উৎপাদনমুখী।’

লালমনিরহাট সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহমুদুন্নবী বলেন, ‘হিরালাল রায় তার মৎস্য খামারে নানা কার্প জাতীয় মাছ চাষ করছেন। এর সাথে দেশি প্রজাতির নানা মাছের চাষও শুরু করেছেন। তার মতো আদর্শ মাছ চাষি তৈরি করে পুষ্টির চাহিদা পূরণে ভুমিকা রাখার প্রস্তুতিও নিয়েছে মৎস্য বিভাগ।’

হিরালাল রায়ের মতো আগ্রহী মানুষ চাকরি থেকে অবসরে নেওয়ার পর বসে না থেকে মাছ চাষে এগিয়ে এলে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ অনেক সহজ হবে বলে জানান এই মৎস্য কর্মকর্তা।

শুধু মৎস্য চাষ নয় অবসরের পরে নিজেকে অনেক সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত করেন হিরালাল রায়। তাকে সনাতন জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় ও সামাজিক কেন্দ্র শ্রীশ্রী গৌরীশঙ্কর গোশালা সোসাইটির সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এ ছাড়াও, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka requests Yunus-Modi talks during UNGA

India yet to decide on the request; sources say the meeting is unlikely as Yunus's comments in a PTI interview were not well received in New Delhi

1h ago