সেভিয়ার মাঠে গোলশূন্য ড্র করল বার্সেলোনা
পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা দলের সঙ্গে তৃতীয় স্থানে থাকা দলের লড়াই। নিঃসন্দেহে হাইভোল্টেজ ম্যাচ প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তু ম্যাচে তার ছিটেফোঁটাও খুঁজে পাওয়া গেল না। গতিহীন ফুটবল খেলেছে বার্সেলোনা। অন্যদিকে জমাট ডিফেন্সে কাতালানদের খোলসে আটকে রাখতে সমর্থ হয় সেভিয়া। ফলে বার্সেলোনা ও সেভিয়ার ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ড্র হয়।
আগের দুই ম্যাচের দারুণ ছন্দে থাকা বার্সা অধিনায়ক মেসিকে এদিন প্রায় বাক্সবন্দী করে রাখে হুলেন লোপেতেগির দল। সে সুযোগ নিতে পারেননি তার সতীর্থরাও। অথচ সেভিয়ার বিপক্ষে বরাবরই জ্বলে ওঠেন এ তারকা। এ দলটির বিপক্ষেই এর আগে গোল করেছেন ৩৭টি। কিন্তু ৭০০তম গোলের মাইলফলকের সামনে থাকা এ তারকাকে এদিন আটকে রাখতে সমর্থ হয় দলটি।
একেবারেই যে ভালো কিছু সুযোগ পায়নি কোনো দল, তাও নয়। দুই দলই কিছু গোল করার মতো সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ফরোয়ার্ডরা। বল দখলের লড়াইয়ে অবশ্য এগিয়ে ছিল বার্সেলোনাই। ৬৪ শতাংশ বল পায়ে রাখে তারা। কিন্তু অ্যাটাকিং থার্ডে কাঁপন ধরাতে পেরেছে বেশি সেভিয়াই। বেশ কিছু দারুণ সুযোগ তারা পেয়েছিল। কিন্তু বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রেস টের স্টেগেনের দারুণ কিছু সেভে হার এড়ায় দলটি।
এ ড্রয়ের পরও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আছে বার্সেলোনা। ৩০ ম্যাচে ৬৫ পয়েন্ট তাদের। তবে রোববার রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে জিতলেই তাদের হটিয়ে শীর্ষে জায়গা নেবে রিয়াল মাদ্রিদ। ৩০ ম্যাচে তৃতীয় স্থানে থাকা সেভিয়ার সংগ্রহ ৫২ পয়েন্ট।
সেভিয়ার মাঠে শুক্রবার ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই গোল দেওয়ার সুযোগ ছিল বার্সেলোনার। নেলসন সেমেদোর পাস থেকে লুইস সুয়ারেজের নেওয়া দুর্বল শট সহজেই ধরে ফেলেন গোলরক্ষক। গোল দেওয়ার ভালো সুযোগ প্রথমে পেয়েছিল সেভিয়াই। একাদশ মিনিটে হুল কুইন্দির নেওয়া কোণাকোণি শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
২১তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো বার্সেলোনা। মেসির নেওয়া ফ্রিকিক একেবারে গোললাইন থেকে ফেরান কুইন্দি। দুই মিনিট পর আরও একটি ফ্রিকিক নিয়েছিলেন মেসি। তবে এবারে তার শট সহজেই ধরে ফেলেন গোলরক্ষক টমাস ভাসলিক।
২৫তম মিনিটে সুয়ারেজের কাটব্যাক ঠিক হবে ধরতে না পারায় বিপদ প্রায় ডেকে এনেছিলেন সেভিয়া গোলরক্ষক। সামনেই ছিলেন মার্তিন ব্র্যাথওয়েট। তবে বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি তিনি। ফিরতি বলে সুযোগ ছিল ইভান রাকিতিচেরও। তবে তার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে সুয়ারেজকে ফাউল করা নিয়ে দুই দলের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। অনেকটা হাতাহাতিতে মেতে ওঠে দুই দলের খেলোয়াড়রা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুই দলের একজন করে খেলোয়াড়কে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি।
দ্বিতীয়ার্ধে বেশ গোছানো ফুটবল খেলতে থাকে সেভিয়া। চার মিনিটের মধ্যেই এগয়েও যেতে পারতো তারা। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ান টের স্টেগেন। বদলী খেলোয়াড় এভার বানেগার জোরালো শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দেন তিনি। ৫৫তম মিনিটে তো অবিশ্বাস্য স্টেগেন। দ্রুত ফ্রিকিক নিয়ে অকোম্পাসকে পাস দিয়েছিলেন জেসুস নাভাস। দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে দারুণ শটও নিয়েছিলেন অকোম্পাস। কিন্তু দারুণ এক সেভ করে দলকে রক্ষা করেন স্টেগেন।
৫৭ মিনিটে আরও একবার দলের ত্রাতা স্টেগেন। নিজেদের অর্ধ থেকে বাড়ানো বল পেয়ে বাঁ প্রান্ত থেকে দারুণ এক কোণাকোণি শট নিয়েছিলেন বার্সেলোনার সাবেক খেলোয়াড় মুনির। তবে গোলরক্ষক টের স্টেগেন এবারও হতাশ করেন স্বাগতিকদের।
৭৩তম মিনিটে মেসির নেওয়া ফ্রিকিক ফিস্ট করে ফিরিয়ে দেন সেভিয়া গোলরক্ষক। ১০ মিনিট পর বানেগার থ্রু বলে দারুণ এক শট নিয়েছেন অকোম্পাস। এবারও দারুণ দক্ষতায় তা ফিরিয়ে দেন বার্সা গোলরক্ষক। ৮৮তম মিনিটে নিজেদের সেরা সুযোগটি পেয়েছিলেন সুয়ারেজ। জর্দি আলবার ক্রস থেকে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে যান এ উরুগুইয়ান তারকা। কিন্তু বল মারেন উড়িয়ে।
ম্যাচের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে অবিশ্বাস্য এক মিস করেন সেভিয়ার সের্জিও রেগুলন। ডি-বক্সের মধ্যে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে যান তিনি। কিন্তু জোরালো শট নিতে পারেননি। ফলে সহজেই সে বল ধরে ফেলেন টের স্টেগেন।
এরপরও বেশ কিছু আক্রমণ করেছিল দুই দল। তবে কোনো দলই গোল না পাওয়ায় ড্র মেনেই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
Comments