স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হযবরল দশার মূল কোথায়?

মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার বেহাল অবস্থাটা বেআবরু হয়ে পড়েছে।
করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে এসে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করে ক্লান্ত অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা আবু সাঈদ রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালের বাইরে দুটি অ্যাম্বুলেন্সের মাঝখানে বসে পড়েন। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা করাতে ব্যর্থ হয়ে দুপুরের দিকে তাকে ফিরে যেতে হয়। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট না থাকায় বেশ কয়েকটি ক্লিনিক তার জ্বর, সর্দি এবং ডায়াবেটিসের চিকিৎসা করেনি। ৫ জুন ২০২০। ছবি: আনিসুর রহমান

মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার বেহাল অবস্থাটা বেআবরু হয়ে পড়েছে।

অনেকে বলছেন, মহামারির কারণে অন্যান্য উন্নত দেশেও এই অবস্থা। আমি তা মনে করি না। স্পষ্ট করতে নিজের কোভিড-পূর্ব অভিজ্ঞতা দিয়ে শুরু করি।

২০১৬ সালে আমার সঙ্গী হৃদরোগে আক্রান্ত হলে মধ্যরাতে তাকে ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে নিয়ে যাই। জরুরি বিভাগে ইসিজি করার পরই তাকে স্ট্রেচারে তুলে নিয়ে হাসপাতালের দুই কর্মী দ্রুত এক ফ্লোর ওপরে সিসিইউতে দৌড়ায়। রাতে লিফট বন্ধ! হৃদরোগ হাসপাতালে রোগীরা বেশীরভাগ সময় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকেন। এক-দুই মিনিট সেখানে অনেক দামি। আর সেখানে লিফট বন্ধ!

যাই হোক, সিসিইউতে পৌঁছা মাত্র চিকিৎসক নিরুদ্বিগ্ন মুখে রোগীকে পরীক্ষা করে স্ট্রেচারেই ওষুধ খেতে দেন। আশে-পাশে তাকিয়ে দেখলাম আরও কয়েকজন রোগীর চিকিৎসা চলছে স্ট্রেচারেই। ওষুধ খাওয়ার সময়ই রোগী জ্ঞান হারায়। এক্যুইট মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশন। চিকিৎসক দুই হাত দিয়ে রোগীর বুকে চাপ দিতে থাকলেন। স্ট্রেচার নড়ে যাচ্ছিলো। রোগী চোখ মেলে তাকালেও বারবার জ্ঞান হারান। একজন পুরুষ নার্স এসে সর্বশক্তি দিয়ে রোগীর বুকে জোরে দুমদাম কিল মারতে থাকেন। জ্ঞান আসে, আবার যায়। মনিটরে দেখা যায় স্ট্রেইট লাইন। প্রায় ঘণ্টাখানেক যমে-মানুষে টানাটানি। হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে থাকতে হলো আট-নয় দিনের মতো। হৃদপিণ্ডে বসানো হলো একটি স্টেন্ট।

সেখানে দেখলাম, সিসিইউতে রোগীর পর রোগী আসছেন, কোনো শয্যা খালি নেই। কিন্তু, কাউকেই ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। রোগীদের দুই শয্যার মাঝে মেঝেতে ফোম বিছিয়ে শোয়ার ব্যবস্থা। ফলে সেখানে চলাচলই মুশকিল।

প্রথম ধাক্কা কাটিয়ে অনেক ধরাধরি, পরিচয় ব্যবহার ইত্যাদির পর কেবিন পাওয়া গেল। কিন্তু, কেবিনে নিজস্ব অক্সিজেন ব্যবস্থাসহ কোনো জীবন রক্ষাকারী উপকরণই নেই। জরুরি পরিস্থিতির উদ্ভব হলে পাশের সিসিইউতে যেতে হবে। যারা আমাদের মতো কপাল করে সেখানে যাননি আর ওয়ার্ডেও জায়গা পাননি, তাদের করিডোরের ফ্লোরেই থাকতে হয়। কেবিনে অক্সিজেনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি স্থাপনের ইনবিল্ট ব্যবস্থা ঠিকই ছিল, কিন্তু তাতে অজানা কারণে বাকি সব সুবিধাদির সংযোগ দেওয়া হয়নি।

অস্ত্রোপচারের আগে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন অনেকেই পরামর্শ দিয়েছিলেন যাতে সুবিখ্যাত কোনো প্রাইভেট হাসপাতালে চলে যাই। অথচ দিন শেষে এখানেই চিকিৎসকের দক্ষতা যেমন দেখেছিলাম, তেমনই দেখেছিলাম অস্ত্রোপচারের পর রক্তনালীর রক্তপাত বন্ধ করতে পুরুষ নার্সের দক্ষতা।

একই সঙ্গে দেখেছি সিসিইউতে ৫০ থেকে ৬০ জন রোগীর আত্মীয়-স্বজনের জন্য একটি মাত্র টয়লেট। যা শুধু অপরিষ্কারই না, সেখানে বেসিন কাজ করে না। অথচ সেখানেই রোগীর খাবারের তৈজষপত্র ধুতে হয়। রোগীর দেখাশুনা করার জন্য একজন আত্মীয়কে থাকতেই হয়। রোগীর বিছানার পাশে খাবার রাখলে মুহূর্তেই সে খাবারে হানা দেয় তেলাপোকা।

সফল চিকিৎসা শেষে নৃবিজ্ঞানের প্রশিক্ষণ পাওয়া এই মনে অনেকগুলো প্রশ্ন নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলাম। এত ভালো চিকিৎসক ও চিকিৎসা সহায়ক থাকার পরও অবকাঠামোগত এই অব্যবস্থাপনা কেন? কোনো রোগী যেখানে আক্ষরিক অর্থেই ফেরানো হয় না, সেখানকার কাঠামোগত সক্ষমতা এত কম কেন? কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা হচ্ছে সরকারের এই টক-ঝাল-মিষ্টি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার মধ্যেই।

১৯৭৫ সাল থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত মূলত দাতা সংস্থাগুলোর অর্থায়নের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তার মধ্যে বিশ্ব ব্যাংকের নেতৃত্বই ছিল প্রধান। আমরা জানি বিশ্ব ব্যাংক ঋণ দিলে সঙ্গে দেয় শর্ত, যা মানতে হয়।

১৯৯৮ সাল পর্যন্ত দেখা যায়, তাদের অর্থায়নের ক্ষেত্র ছিল মূলত জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের প্রকল্পে। এর সঙ্গে ধীরে ধীরে যুক্ত হয় পারিবারিক স্বাস্থ্য প্রকল্প ও সবশেষে পারিবারিক শব্দটি বাদ দিয়ে হয় স্বাস্থ্য প্রকল্প।

এরই মধ্যে দেখলাম ৮০-র দশক থেকে বেসরকারি চিকিৎসা সেবার পরিসরকে উৎসাহিত করা হতে থাকে। যার ওপর এখন বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার সিংহভাগ নির্ভরশীল।

১৯৭৩ সালে অসফল প্রচেষ্টার পর ১৯৮২ সালে বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় ওষুধনীতি গ্রহণ করা হয়। ফলে এদেশে ওষুধশিল্প বিশেষভাবে প্রসারিত হতে থাকে। জরুরি ওষুধের তালিকা নির্দিষ্ট করা হয়। সেসব ওষুধের দামও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।

তবে ২০০৫ ও ২০১৬ সালে এই নীতিতেও পরিবর্তন আনা হয়। যেখানে এই তালিকা ও দাম শিথিল করা হয়। ফলে অনেক জরুরি ওষুধের দাম এখন আর নিয়ন্ত্রণে নেই।

রাষ্ট্রের নিজস্ব সমন্বিত স্বাস্থ্যনীতির অভাব প্রকট। রাষ্ট্রের অর্থায়ন যত কমই হোক, তার নিজের দেশের মানুষের রোগ-শোক-মৃত্যু মোকাবিলায় কী কী ব্যবস্থা করা যায়, তার নীতিমালা গ্রহণে ব্যর্থতা দেশের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিকাশকে ভঙ্গুর করেছে।

অন্যদিকে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মুনাফাভিত্তিক বিকাশ হয়েছে বল্গাহীন।

এদিকে, দাতারা প্রকল্পভিত্তিক পরিকল্পনার দূর্বলতা আবিষ্কার করে ১৯৯৫ সাল থেকে দেশের সরকারকে সঙ্গে নিয়ে নতুন কৌশল গ্রহণের প্রস্তুতি নেয়। ১৯৯৮ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত খাত-ভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণ করে। ফলশ্রুতিতে, বাংলাদেশ সরকার স্বাস্থ্যনীতি হিসেবে তিন দফায় স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা কর্মসূচি হাতে নেয়। যার মধ্যে শেষ দুই দফায় স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যার সঙ্গে পুষ্টির ধারণা যোগ করা হয়। যাতে রাষ্ট্রের অর্থায়ন ছিল ৭০ ভাগ, বাকিটা বিশ্ব ব্যাংকের নেতৃত্বে দাতাদের সহায়তা।

বলা বাহুল্য, খাত-ভিত্তিক কার্যক্রম জরুরি ছিল দাতা সংস্থার সঙ্গে সরকারের সংযোগ এবং দাতাদের ও সরকার উভয়ের অর্থায়নে কোনো একটা খাতের (শিক্ষা বা স্বাস্থ্য) বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্যে সমন্বয়ের জন্য।

এসব প্রকল্পের মধ্য দিয়ে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, শিশু ও মাতৃ মৃত্যু কমানো, শিশুর টিকাদান কর্মসূচি, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান, পয়ঃসুবিধা, সুপেয় ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশেষ অগ্রগতি অর্জন করেছে বলে সরকার ও দাতা সংস্থাদের বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।

এছাড়াও দেখা যায়, সরকারের স্বাস্থ্যসেবা বিকেন্দ্রীকরণের জন্য কমিউনিটি, উপজেলা, জেলা এবং উচ্চতর ও বিশেষায়িত চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনেক অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে। এর সবই এই সময় পর্যন্ত বিভিন্ন সরকারের অর্জন। তা সত্ত্বেও আমি যে অভিজ্ঞতা দিয়ে এই আলোচনা শুরু করেছিলাম সেই অভিজ্ঞতা খোদ ঢাকা শহরের মানুষের কাছে অপরিচিত মনে হবে না।

বলা হয় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের চিকিৎসাই সর্বশ্রেষ্ঠ। কিন্তু সেখানকার সার্বিক সেবা, সুবিধাদি ইত্যাদি প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুলতা। পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালগুলোর পরিবেশের মান প্রসঙ্গে মানুষের অসন্তুষ্টি সারা দেশে সর্বজনবিদিত।

অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবার সিংহভাগ পাওয়া সম্ভব বেসরকারি খাত থেকে। এই খাতও সরকারের দেখভালের বাইরে রাখা হয়েছে ৮০-র দশকের শুরু থেকেই। এই সেবা ভীষণভাবে ব্যয়বহুল এবং বেশিরভাগ মানুষের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।

দেখা যাচ্ছে দাতাদের মর্জিমাফিক স্বাস্থ্যখাতের বেসরকারিকরণ হয়েছে। সরকারের সব মনোযোগ ছিল দাতাদের পছন্দের প্রকল্প বাস্তবায়নে। সরকারি খাতে কিছু বিনিয়োগ হলেও এই খাত ও বেসরকারি খাতকে এলেবেলেভাবে দীর্ঘকাল ফেলে রাখা হয়েছে।

এরপর, জনগণের জন্য স্বাস্থ্যখাত ব্যয়বহুল— এই অজুহাতে স্বাস্থ্যখাতে টেকসই অর্থের যোগানের স্থায়ী উৎস নিশ্চিত করতে ২০১২ সালে ‘জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা অর্থায়ন কৌশল ২০১২-৩২’ গৃহীত হয়।

দাতা সংস্থার আগ্রহেই ২০১৬ সালে টাঙ্গাইলের তিনটি উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে পাইলট প্রকল্প হিসেবে ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি’ নামে সামাজিক ইনস্যুরেন্সের ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে। যেখানে সহায়তা করছে জার্মান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন। এই কর্মসূচিতে গরিবদের বিনা পয়সায় স্বাস্থ্য কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। সরকার গরিবদের এই কার্ডের জন্য ভর্তুকি দেবে। দেখে-শুনে মনে হয়, জার্মানির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা মডেলের সঙ্গে এই প্রকল্পের মিল রয়েছে।

জার্মানিতে সফলভাবে সামাজিক ইনস্যুরেন্স ব্যবস্থা চালু আছে বহুদিন ধরে। কিন্তু, সেখানকার ব্যবস্থাটি বহুমুখি। ‘সমাজের সবার (অসচ্ছলদেরও) সমান চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার আছে’ এই ধারণায় বিশ্বাসী হয়ে চাকরিজীবী সবাই তাদের আয়ের একটা নির্দিষ্ট অংশ সরকারি কোষাগারে জমা দেন। এরপর ধনীরা চাইলে এই ইনস্যুরেন্স থেকে বের হয়ে বাণিজ্যিক ইনস্যুরেন্সও নিতে পারে।

যথেষ্ট সংখ্যক সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতাল ব্যবস্থাও রয়েছে সেখানে। সমাজের সব স্তরের রোগী যে কোনো হাসপাতালে পছন্দ অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা নিতে পারেন। সরকার সামাজিক ইনস্যুরেন্সের অধীনে রোগীদের চিকিৎসা অনুযায়ী অর্থ হাসপাতালের দাবি অনুযায়ী পরিশোধ করে।

হাসপাতালগুলো রোগীকে মানসম্পন্ন সেবা দিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করে। সরকার ও মিডিয়া হাসপাতালগুলোকে সেবা প্রশ্নে কঠিন নজরদারির মধ্যে রাখে। বহুদিন ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে জার্মানি নিজেদের জন্য এই সার্থক ব্যবস্থা দাঁড় করিয়েছে। যা করতে তাদের রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বাসযোগ্য স্থিতিশীল রাজনৈতিক চর্চা।

বাংলাদেশে এই ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, আবারও, দাতাদের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী। যেখানে দেশের একটা ইনস্যুরেন্স প্রতিষ্ঠানকে পাইলট এলাকার মানুষদের তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যার নিজের ব্যবসা ও মুনাফার উদ্দেশ্য রয়েছে, তাকে এই কাজ দিলে তার স্বার্থের সঙ্গে দেশের স্বার্থের দ্বন্দ্ব হবে না?

ইথিওপিয়ার সাফল্যকে এই ব্যবস্থা প্রয়োগের পেছনের কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। দাতারাই ‘উন্নয়নশীল দেশে’ নানা মডেল প্রয়োগ করে নানা গুণগান হাজির করে। আমাদের দেশের কিছু মানুষ তাদের সহযোগী হয়ে একই সুর তোলেন। এ যাবৎ দেখেছি তাতে দেশের কোনো লাভ হয় না। মাঝখান থেকে হযবরল অবস্থায় ব্যক্তি মালিকাধীন হাসপাতালের পাশাপাশি এখন ব্যক্তি মালিকানাধীন ইনস্যুরেন্স ব্যবসা আরও রমরমা হয়ে ওঠার সম্ভাবনাই বেশি।

সুশাসনের অভাবে ব্যক্তিরা ফুলে ফেঁপে উঠতে পারেন। এদিকে সুশাসনের জন্য দেশে বহুদিন ধরেই ন্যায্য ও জনগণের কল্যাণের উদ্দেশ্যে নিবেদিত রাজনৈতিক চর্চা নাই। নিজের দেশের প্রয়োজন ও স্বার্থ অনুযায়ী স্থিতিশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থা জারি না করে, দেশের ভেতরের রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্কের মধ্য দিয়ে কোনো নীতিমালা গ্রহণ না করলে দেশের আপামর মানুষ তার কোনো সুবিধাই পায় না।

বর্তমান মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্যব্যবস্থা তার জ্বলন্ত উদাহরণ। তারা নিজেদের অতীতের সফল স্বাস্থ্যব্যবস্থা বাদ দিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের চাপে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে বাড়তে দিয়ে জনগণের ওপর অপ্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য খরচের ঝুঁকি চাপিয়ে দিয়েছে।

বাংলাদেশে সুস্থ ও সহনশীল রাজনৈতিক চর্চা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে স্বচ্ছ তর্ক-বিতর্কের মধ্য দিয়ে দাতা সংস্থাগুলোর মাতব্বরিকে একপাশে রেখে জনগণ ও দেশের স্বার্থে বাস্তব সম্মত স্বাস্থ্য ও ওষুধনীতি এবং কল্যাণমূলক অর্থায়ন ব্যবস্থা প্রণয়ন করা যায়। তবেই বিদ্যমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সম্ভব। যা মানুষের স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের অভিজ্ঞতাকে বদলে দিতে পারে।

মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

(দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, দ্য ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার দ্য ডেইলি স্টার নেবে না।)

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago