জুরাছড়ির দুর্গম দুমদুম্যা ইউনিয়নে পৌঁছালো সরকারি খাদ্য সহায়তা

ছবি: সংগৃহীত

প্রতি বছরের এই সময় রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি উপজেলার দুর্গম দুমদুম্যা ইউনিয়নে খাদ্য সংকট দেখা দেয়। চলতি করোনা পরিস্থিতিতে সেই সংকট আরও তীব্র হয়েছে। গতকাল ওই ইউনিয়নে দ্বিতীয় দফায় সরকারি খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার জুরাইছড়ির উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহফুজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘গতকাল ২৫ জুন দুমদুম্যা ইউনিয়নের ছোট করাইদিয়া ও বগাখালীতে পৃথকভাবে এসব সহায়তা প্রদান করা হয়। এ সময় সাতশ পরিবারের মাঝে ২০ কেজি করে ১৪ মেট্রিক টন চাল ও শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়। এসব চাল দুমদুম্যা ইউপি চেয়ারম্যান সাধন কুমার চাকমার নেতৃত্বে ৬ সদস্যর একটি টিম ঘরে ঘরে গিয়ে পৌঁছে দিয়েছে।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, সেখানে যে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়।

তারা জানান, প্রতি বছর মে মাসে জুমে ধানের বীজ বপন করার পর জুমের ধান না পাকা পর্যন্ত এই ইউনিয়নের অনেক পরিবার খাদ্য সংকটে থাকে। চলতি বছর করোনার কারণে সামাজিকভাবে লকডাউনের কারণে খাদ্য সংকটের তীব্রতা বেড়েছে। এ সংকট স্থায়ীভাবে মোকাবিলার জন্য বোরো চাষাবাদে অসমতল জমি সমতলকরণ, মৎস্য চাষাবাদে বেড়িবাঁধ, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে জুম চাষাবাদে প্রশিক্ষণ ও উৎসাহিতকরণ প্রকল্প গ্রহণের জন্য আবেদন জানিয়েছেন পার্বত্য মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা।

লাটুয়াম পাড়া এলাকার মানিক্যে চাকমা (৪০) বলেন, ‘গতমাসে আমাদের ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, সেগুলো ১০-১৫ দিন পর শেষ হয়ে যাওয়ার পর দুবেলা বনের আলু খেয়ে, এক বেলা ভাত আধপেটে খেয়ে কোনো মতে জীবন বাঁচাতে হচ্ছে। আজ এ সহায়তা পেয়ে একবেলা হলেও মন খুশিতে খেতে পারবো।’

ইউনিয়নের ঘিলালুদি মোন এলাকার বিমল চাকমা বলেন, ‘আমাদের কঠিন সময়ে সরকারের এই সহযোগিতা আশাকরি ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।’

দুমদুম্যা মৌজার হেডম্যান সমূর পাংখোয়া বলেন, ‘প্রতি বছর আমাদের এলাকায় এ সংকট দেখা যায়। এ সংকট মোকাবিলায় সরকারকে আরও আন্তরিক হওয়ার অনুরোধ করছি।’

দুমদুম্যা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) সাধন কুমার চাকমা বলেন, ‘এ সংকট মোকাবেলায় জুম চাষাবাদের পাশাপাশি সমতল জমি সৃষ্টি করে বোরো চাষ করতে হবে। এ ছাড়া, মাছ চাষসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প ও প্রশিক্ষণ প্রদান করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে।’

জুড়াছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসন ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে দ্বিতীয় দফায় ১৪ মেট্রিক টন চাল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এই দুর্গম ইউনিয়নে ভবিষ্যতেও এ রকম সহযোগিতা অব্যহত থাকবে।’

গত ৭ মে প্রথম দফায় এই ইউনিয়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে নয়শ পরিবারকে সহায়তা প্রদান করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Rizwana reaffirms that election will be held between December and June

"People may have many expectations, but to fulfill them, the enabling environment must be in place"

2h ago