নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার

প্রজনন মৌসুমে সামুদ্রিক মাছ রক্ষায় গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। গত ২০ মে থেকে শুরু হওয়া নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে ২৪ জুলাই।
মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চলছে মাছ শিকার। ছবিটি কুয়াকাটার গঙ্গামতি এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার (২৫.৬.২০২০) তোলা । ছবি: সোহরাব হোসেন

প্রজনন মৌসুমে সামুদ্রিক মাছ রক্ষায় গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। গত ২০ মে থেকে শুরু হওয়া নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে ২৪ জুলাই।

সরকারের মৎস্য বিভাগ সংশ্লিষ্ট এলাকায় গণসচেতনতায় মাইকিংসহ নানামুখি প্রচার চালায়। তবে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ছোট-বড় ট্রলার নিয়ে অবাধে চলছে মাছ শিকার। পটুয়াখালীর কুয়াকাটা এলাকায় বঙ্গোপসাগরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

মাছ শিকারে জেলেদের নিরাপত্তা দেয়ার নামে একটি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ আছে। তারা ট্রলারের আকারভেদে ২ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার সকালে কুয়াকাটা, গঙ্গামতি, কাউয়ার চর, লেম্বুর চর এসব এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সাগর থেকে মাছ শিকার শেষে ফিরছে অনেকে। আবার কেউ যাচ্ছে মাছ শিকারে। অন্তত অর্ধশত ইঞ্জিনচালিত ছোট ছোট নৌকা, স্থানীয়ভাবে ‘খুটা’ জেলে বলে পরিচিত, সৈকতের অদূরে মাছ শিকার করছে। গভীর সমুদ্র থেকে মাছ ধরার বড় একটি ট্রলারও মহিপুর মৎস্য বন্দরে ভীড়তে দেখা গেছে।

গঙ্গামতি এলাকার খুটা জেলে আবু বকর বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন চলছে। ৫ সদস্যের পরিবার নিয়ে সমস্যায় আছি। সাগরে মাছ না ধরলে চুলায় তো হাঁড়ি চড়ে না। নিষেধাজ্ঞার কথা জানি কিন্তু ঘরে বসে থাকলে খাব কী? তাই সাগরে না গিয়ে উপায় নাই’।

লতাচাপলী এলাকার জেলে বসির উদ্দিন জানান, ‘করোনার কারণে লকডাউনে আমরা মাছ শিকার করতে পারিনি। তারপরে ঘূর্ণিঝড় আম্পানেও আমরা নিঃস্ব, এরপর শুরু হয়েছে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা।’

জেলেদের জন্য বরাদ্দ করা সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন অনেক জেলে।

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সাগরে মাছ ধরার সুযোগ করে দিতে একটি চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে নগদ টাকা। প্রতি খুটা জেলে নৌকা থেকে ২ হাজার এবং মাঝারি ট্রলার থেকে ৫ হাজার ও বড় ট্রলার থেকে ১০ হাজার টাকা করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলেরা জানিয়েছেন, আড়তেই এই টাকা কেটে রাখা হয়।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মহিপুর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফজলু গাজী বলেন, ‘সরকারের দেয়া নিষেধাজ্ঞা মেনেই আমরা মাছ শিকার করি ও ব্যবসা পরিচালনা করি’। সাগরে কোন ট্রলার মাছ শিকার করতে যায় না বলেও তিনি দাবি করেন। তবে মাছ ধরা ট্রলারের ফেরার ছবি তাকে দেখানো হলো তিনি আর কোনও মন্তব্য করেননি।

সাগরে অবৈধ মাছ শিকারের বিষয়টি শুনেছেন বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন মহিপুর থানার ওসি মনিরুজ্জামান। প্রমাণ সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে, জনবল ও জলযান সংকটের কথা বলেছেন কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান। দ্রুত অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

৬৫দিন মাছ ধরা বন্ধ রাখার বিষয়ে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিংসহ নানা ধরনের প্রচার চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন, পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ। এ পর্যন্ত ২৯ টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এসময় ৩১০ কেজি মাছ, ৯৪ হাজার ৬০০ মিটার জাল জব্দ এবং ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কেউ যেন নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

1h ago