সুনামগঞ্জে বন্যার কারণে কম দামে বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশু

বন্যার কারণে কোরবানির জন্য পালিত গরু ও ছাগল নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন সুনামগঞ্জের মানুষ। কারণ, এসব পশু কোরবানি ঈদে বিক্রি করে বাড়তি আয়ের আশা ছিল তাদের। বন্যার কারণে তাদের সেই আশা বিফলে গেছে। বন্যার পানিতে ডুবে থাকা মাঠে নেই সবুজ ঘাস, সংরক্ষণে থাকা খড়ও পঁচে গেছে। ফলে, গরুর ও ছাগলের খাবার যোগান দিতে পারছে না মানুষ। তাই বাধ্য হয়েই কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন।
ছবি: সংগৃহীত

বন্যার কারণে কোরবানির জন্য পালিত গরু ও ছাগল নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন সুনামগঞ্জের মানুষ। কারণ, এসব পশু কোরবানি ঈদে বিক্রি করে বাড়তি আয়ের আশা ছিল তাদের। বন্যার কারণে তাদের সেই আশা বিফলে গেছে। বন্যার পানিতে ডুবে থাকা মাঠে নেই সবুজ ঘাস, সংরক্ষণে থাকা খড়ও পঁচে গেছে। ফলে, গরুর ও ছাগলের খাবার যোগান দিতে পারছে না মানুষ। তাই বাধ্য হয়েই কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন।

তাহিরপুরের শ্রীপুরের বাসিন্দা সাজেন মিয়া বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও বন্যার সময় আমরা মোটা চালের ভাত ও আলু সিদ্ধ খাচ্ছি। কোরবানির ঈদে বিক্রি করার জন্য এবার তিনটি গরু খুব যত্ন নিয়ে পেলেছি। কিন্তু, গো খাদ্যের অভাব দেখা দেওয়ায় দুটি গরু বিক্রি করে দিয়েছি। দুটি গরুর দাম ৮০ হাজার টাকা হলেও আমাকে বিক্রি করতে হয়েছে মাত্র ৪৫ হাজার টাকায়। আরেকটা গরুর শারীরিক অবস্থা ভালো না। নানা অসুখ লেগেই আছে। বন্যার কারণে সরকারি কর্মকতা ও চিকিৎসকরা আসছেন না। কীভাবে এটাকে সুস্থ করবো তাও জানি না।’

সাজেন মিয়ার প্রতিবেশী মুকুন্দ দাশ বলেন, ‘প্রায় সব এলাকাতে একই সমস্যা। এজন্য কোনো উপায় না পেয়ে নিজের গরুটাও বিক্রি করেছি।’

সুনামগঞ্জ সদরের মল্লিকপুর এলাকার দুটি গাভীর মালিক শামসুল মিয়া বলেন, ‘দিন মজুরির পাশাপাশি গরু পালন করে দুধ বিক্রির মাধ্যমে সংসার চালিয়েছি। কিন্তু, এখন সব পানির নিচে। সবুজ ঘাসের অভাব আর দীর্ঘ সময় ধরে পানিতে দাঁড়িয়ে গরুর পায়ে ঘা হয়ে গেছে। এখন দুধ দেয় না বললেই চলে। পশু চিকিৎসক না আসায় চিকিৎসাও দিতে পারছি না।’

সুনামগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান খান বলেন, ‘আমরা ১৫টি মেডিকেল টিম গঠন করেছি। তারা সেবা দিচ্ছে।’

প্রত্যন্ত অঞ্চলে মেডিকেল টিম যাচ্ছে না এমন অভিযোগে তিনি বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে একটু সমস্যা হতেই পারে।’

তিনি বলেন, ‘বছরের প্রথম থেকে গরু মোটাতাজাকরণে বিভিন্ন রকমের সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে যাতে কোরবানি ঈদে কৃষক ভালো টাকা আয় করতে পারেন।’

গোখাদ্য অভাবের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমরা হাই অফিসিয়ালকে গোখাদ্যে বরাদ্দ দেওয়ার ব্যাপারে একটি আবেদন পাঠিয়েছি।’

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান জানান, ভারতের মেঘালয় চেরাপুঞ্জিতে গত ৭২ ঘণ্টায় ৯০২ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। যা এই মৌসুমের সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১২১ মিলিমিটার বৃষ্টি এবং এর আগের ৭২ ঘণ্টায় ২৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এ কারণে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমা ৯ সেন্টিমিটার  উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি ভাল রয়েছে, নদী ও হাওরের পানি কমতে শুরু করেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

 

 

 

 

 

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

5h ago