গ্রামবাংলার পুরাতন ঐতিহ্য ‘হ্যাঙ্গা’ জালে মাছ ধরা
কেউ বলেন ‘হ্যাঙ্গা জাল’ আবার কেউ বলেন ‘ঠেলা জাল’। ত্রিকোণা বিশিষ্ট এ জাল দিয়ে মাছ ধরার চিত্র গ্রামবাংলার একটি পুরাতন ঐতিহ্য। বর্ষা এলে গ্রামে গ্রামে এ জালের প্রচল বেড়ে যায়। শিশু, তরুণ থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষ এ জাল দিয়ে মাঝ ধরতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। অনেকে এই জাল দিয়ে নিজের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার ইটাপোতা গ্রামের ননীগোপাল বর্মণ (৭৫) বলেন, ‘হ্যাঙ্গা জাল তিন ধরনের হয়ে থাকে। ছোট, মাঝারি ও বড়। ছোট হ্যাঙ্গা দিয়ে শিশুরা এমনকি গ্রামের মহিলারাও মাছ ধরে তাকে। মাঝারি হ্যাঙ্গা দিয়ে তরুণরা মাছ ধরে আর বড় হ্যাঙ্গা দিয়ে স্বাভাবিক বয়সের মানুষ এবং পেশাজীবিরা মাছ ধরে থাকে।’
একটি হ্যাঙ্গা জাল তৈরি করতে তিনশ থেকে দুই হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।
একই গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন (৭০) বলেন, ‘হ্যাঙ্গা জাল দিয়ে মাছ ধরা পুরাতন একটি ঐতিহ্য। সাধারণত দেশি জাতের মাছ ধরা হয়ে এ জালে। বৃষ্টির পানি নামলে গ্রামের খালে বিলে হ্যাঙ্গা দিয়ে মাছ ধরা হয়। তবে, কেউ কেউ নদীতেও এ জাল দিয়ে মাছ ধরে।’
সদর উপজেলার কর্ণপুর গ্রামের চতুর্থ শ্রেনির ছাত্র মাইদুল ইসলাম বলে, ‘হ্যাঙ্গা জাল দিয়ে মাছ ধরার মজাই আলাদা। খুব ভালো লাগে, আনন্দ লাগে। আধা কেজি থেকে এক কেজি পযর্ন্ত মাছ সে ধরা যায় সহজেই।’
ওই গ্রামের গৃহবধু সিনথিয়া বেগম (২৭) জানান, তারাও এই সময় বাড়ির পাশে হ্যাঙ্গা দিয়ে মাছ ধরেন। বর্ষাকালে বাড়ির আশেপাশে চারদিকে পানি উঠায় মাছের বিচরণ বেড়ে যায়। ছোটবেলা হ্যাঙ্গা জাল দিয়ে মাছ ধরার অভ্যাস গড়ে উঠে তাদের।
Comments