‘পুলিশ শুধু বলে তদন্ত করছি, কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না’

Lalmonirhat poor woman
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা গ্রামে বাঁশ দিয়ে খাঁচা বানাচ্ছেন মমিনা বেগম। ছবি: সংগৃহীত

‘ঘুষ নিয়েও’ ঘর না দিয়ে মমিনা বেগম (৪৮) নামের এক অস্বচ্ছল, অসহায় গৃহহীন নারীকে কিলঘুষি দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাটের হাতীবান্দা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই নারী।

পুলিশ অভিযোগটির তদন্ত করছে বলে জানায়। চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ‘এটা সাজানো ঘটনা।’

মমিনা বেগম ওই গ্রামের মমিনুর রহমানের স্ত্রী। স্বামী-স্ত্রী দুজনে বাঁশের জিনিসপত্র তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালান। তাদের নিজেদের ঘর নেই। থাকেন মেয়ের ভাঙা ঘরে।

মমিনার নামে সাত শতাংশ জমি রয়েছে। কিন্তু, ঘর তৈরি করার সামর্থ্য নেই তার।

মমিনার অভিযোগ, একটি সরকারি ঘর পেতে তিনি অনেকদিন চেয়ারম্যানের কাছে ধর্না দিয়েছিলেন। বিনা টাকায় চেয়ারম্যান ঘর দিবেন না— এটা জানতে পেয়ে তিনি টাকা সংগ্রহ করেন। নিজের জমানো ৫ হাজার টাকা ও মেয়ের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা আর সুদে নেওয়া ১০ হাজার টাকা— মোট ২০ হাজার টাকা তুলে দেন চেয়ারম্যানের হাতে। কথা হয়, চেয়ারম্যান একটি সরকারি ঘরের ব্যবস্থা করে দিবেন। ছয় মাস পরও চেয়ারম্যানের কোনো সাড়া না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন মমিনা।

গত ২১ জুন সন্ধ্যায় মমিনা চেয়ারম্যানের বাড়িতে গিয়ে তার কাছে ‘ঘুষের’ ২০ হাজার টাকা ফেরত চান। সে সময় বৈঠকে থাকা চেয়ারম্যান ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন। তিনি ও তার লোকজন চড়াও হয়ে মমিনাকে মারধর করেন।

আহত অবস্থায় মমিনা বেগম সেদিনই ভর্তি হন হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তিন দিন চিকিৎসা নেওয়ার পরও সুস্থ না হলে তিনি ভর্তি হন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তিন দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি আসেন।

গতকাল রোববার মমিনা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি ২৪ তারিখ (জুন) চেয়ারম্যানসহ নয় জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। পুলিশ শুধু বলে তদন্ত করছি, তদন্ত করছি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

থানায় অভিযোগ করায় চেয়ারম্যানের লোকজন তাকে ও তার স্বামীকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছে বলেও অভিযোগ করেন মমিনা।

অভিযুক্ত টংভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান গতকাল ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পুরো বিষয়টি মিথ্যা, সাজানো ঘটনা।’

‘সরকারি ঘর বন্দোবস্ত করার নাম করে ঘুষ নেওয়ার কোনো প্রশ্নই উঠে না। ওই নারী কোনদিনই আমার কাছে আসেননি। স্থানীয় রাজনীতির কোন্দলের কারণে একটি পক্ষ ওই নারীকে ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে’ বলে যোগ করেন তিনি।

হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মমিনার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ তা তদন্ত করছে। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। তাই পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করছে।’

তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নিবে বলেও জানান ওসি।

Comments

The Daily Star  | English

Large-scale Chinese investment can be game changer for Bangladesh: Yunus

The daylong conference is jointly organised by Bangladesh Economic Zones Authority and Bangladesh Investment Development Authority

42m ago