চীনের নতুন বিপদ প্লেগ

ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে ছড়ায় বিউবোনিক প্লেগ। ছবি: সংগৃহীত

চীনের স্বায়ত্তশাসিত ইনার মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে ‘বিউবোনিক প্লেগে’ আক্রান্ত একজন রোগী শনাক্ত হওয়ায় সেখানে যাওয়া পর্যটকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বেইজিংয়ের রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের উপপরিচালক প্যাং জিংহোউ বলেন, ‘বন্যপ্রাণীর কাছে যাওয়া বা তা খাওয়া উচিত নয়।’ একইসঙ্গে ওই অঞ্চলের তৃণভূমিতে রাতে ক্যাম্প করে থাকা উচিত নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি।

কারো শরীরে যদি তাপমাত্রা দেখা দেয়, তাহলে ওই অঞ্চলটিতে তার ভ্রমণের বিস্তারিত বা কোনো প্রাণীর সংস্পর্শে গিয়ে থাকলে সেটির বিস্তারিত চিকিৎসককে জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্যাং।

চিকিৎসক ও নার্সদেরকে প্লেগ রোগের উপসর্গের বিষয়ে জানার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রোগীদের সতর্কতার সঙ্গে দেখতে হবে এবং তাদের ভ্রমণ ইতিহাস জানতে হবে। যাতে করে সঠিকভাবে ও সঠিক সময়ে এটি শনাক্ত করা যায় এবং নিয়ন্ত্রণ করা যায়।’

আজ চীনা সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

গত ৪ জুলাই ইনার মঙ্গোলিয়ার বায়ানুর শহরের উরাদ মিডল ব্যানারের একটি হাসপাতালে বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত প্রথম এই রোগীকে শনাক্ত করা হয়। ওই পশুপালক রোগী এখন স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে তিনি কীভাবে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

প্লেগ রোগী শনাক্ত হওয়ায় ইতোমধ্যে তৃতীয় সস্তরের সতর্কতা জারি করেছে ইনার মঙ্গোলিয়া কর্তৃপক্ষ। সতর্কতায় বলা হয়েছে, এখন থেকে প্লেগের জীবাণু বহনে সক্ষম প্রাণী শিকার ও খাওয়া নিষিদ্ধ এবং কারও বিউবোনিক প্লেগের উপসর্গ দেখা দিলে তা তাৎক্ষণিক জানাতে আহ্বান করা হচ্ছে।

এই প্লেগটি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে ছড়ায়। এটি প্রাণঘাতী হতে পারে। তবে সাধারণভাবে পাওয়া অ্যান্টিবায়োটিকের সাহায্যে এর চিকিত্সা করা যেতে পারে।

এর আগে, এই রোগ মাদাগাস্কারে ছড়িয়ে পড়েছিল। ২০১৭ সালে মাদাগাস্কারে ৩০০ এর মতো রোগী পাওয়া যায়।

গত বছরের মে মাসে মঙ্গোলিয়ায় এই প্লেগে আক্রান্ত হয়ে দুজন মারা যান। তারা মারমোটের (এক ধরনের বুনো ইঁদুর) কাঁচা মাংস খাওয়ার মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

চতুর্দশ শতাব্দীতে ‘ব্ল্যাক ডেথ’ মহামারি হিসেবে পরিচিত এ রোগে আফ্রিকা, এশিয়া ও ইউরোপে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়।

১৬৬৫ সালে লন্ডনে ‘গ্রেট প্লেগ’ এর প্রকোপ এতোটাই ভয়াবহ ছিল যে, সেসময় শহরটির প্রায় পঞ্চমাংশ মানুষের মৃত্যু হয়। উনিশ শতকে চীন ও ভারতে প্লেগের প্রাদুর্ভাবে প্রায় এক কোটি ২ লাখ লোক মারা যান।

আরও পড়ুন:

করোনার মধ্যেই চীনে এবার প্লেগ, তৃতীয় স্তরের সতর্কতা জারি

Comments

The Daily Star  | English

A transitional budget for troubled times

Govt signals people-centric priorities but faces tough trade-offs

2h ago