ঘুরে দাঁড়িয়ে জুভেন্টাসকে উড়িয়ে দিলো মিলান
প্রথমার্ধে দুদল বেশ কয়েকটি সুযোগ পেল। গোলের দেখা অবশ্য মিলল না। দ্বিতীয়ার্ধের চিত্র পুরো উল্টো। বিরতির পর খেলা শুরুর আট মিনিটের মধ্যে দুবার উল্লাস করল জুভেন্টাস। তবে মর্যাদার লড়াইয়ে দমে গেল না এসি মিলান। ঘুরে দাঁড়িয়ে গুণে গুণে চারবার লক্ষ্যভেদ করে স্মরণীয় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল তারা।
মঙ্গলবার রাতে ইতালিয়ান সিরি আর ম্যাচে জুভেন্টাসকে ৪-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে মিলান। অতিথিদের দুই গোলদাতা আদ্রিয়েন র্যাবিও ও ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। সান সিরোতে স্বাগতিকদের হয়ে নিশানা ভেদ করেন জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ, ফ্রাঙ্ক কেসি, রাফায়েল লেয়াও ও আন্তে রেবিচ।
২০১৬ সালের পর এই প্রথম ইতালির শীর্ষ লিগে জুভেন্টাসকে হারানোর স্বাদ নিল মিলান। অন্যদিকে, টানা সাত জয়ের পর খালি হাতে ম্যাচ শেষ করল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। চলতি আসরে মাউরিজিও সারির শিষ্যদের এটি চতুর্থ হার।
ম্যাচের প্রথমার্ধের উল্লেখযোগ্য সুযোগগুলো পেয়েছিল জুভরা। ১৩তম মিনিটে রোনালদোর শট লক্ষ্যে থাকেনি। পাওলো দিবালার নিষেধাজ্ঞায় শুরুর একাদশে সুযোগ পাওয়া গঞ্জালো হিগুয়াইনও অচলাবস্থা ভাঙতে পারেননি। যোগ করা সময়ে তার শট ঝাঁপিয়ে পড়ে লুফে নেন মিলান গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুমা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যায় জুভেন্টাস। ৪৭তম মিনিটে একক নৈপুণ্যে মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে এগিয়ে গিয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের জোরালো শটে জাল খুঁজে নেন র্যাবিও। তুরিনের বুড়িদের জার্সিতে এটি ফরাসি মিডফিল্ডারের প্রথম গোল।
ছয় মিনিট পর মিলানের দুই ডিফেন্ডার একইসঙ্গে কলম্বিয়ান উইঙ্গার হুয়ান কুয়াদ্রাদোর উঁচু করে বাড়ানো বল হেড করে বিপদমুক্ত করতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন। সহজ সুযোগ পেয়ে কাজে লাগান পর্তুগিজ তারকা রোনালদো। চলতি লিগে এটি তার ২৬তম গোল। ২৯ গোল নিয়ে মৌসুমের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় তার সামনে আছেন কেবল লাৎসিওর চিরো ইম্মোবিলে।
৬২তম মিনিটে সুইডিশ স্ট্রাইকার ইব্রাহিমোভিচের সফল স্পট-কিকে ব্যবধান কমায় মিলান। লিওনার্দো বোনুচ্চির হাতে বল লাগায় ভিএআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন রেফারি।
খেলার ধারার বিপরীতে হজম করা এই গোলের পর যেন খোলসে বন্দি হয়ে পড়ে জুভেন্টাস। অন্যদিকে, তেতে উঠে তাদেরকে তছনছ করে দেয় মিলান। পরের পাঁচ মিনিটের মধ্যেই লিড নিয়ে নেয় তারা।
৬৬তম মিনিটে দর্শনীয় গোছানো আক্রমণ থেকে মিলানকে সমতায় ফেরান কেসি। ইব্রাহিমোভিচের পাসে ডি-বক্সে ঢুকে দুই ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে জুভ গোলরক্ষক ভোইচেখ স্ট্যান্সনিকে পরাস্ত করেন আইভরিকোস্টের এই মিডফিল্ডার।
পরের মিনিটে স্কোরলাইন ৩-২ করেন বদলি পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড লেয়াও। পাল্টা আক্রমণে রেবিচের কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকে কাছের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
৮০তম মিনিটে জাল খুঁজে নেন ম্যাচজুড়ে অসাধারণ খেলা রেবিচ। এই গোলের পুরো দায় অবশ্য ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার অ্যালেক্স সান্দ্রোর। নিজেদের ডি-বক্সে তার বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বদলি মিডফিল্ডার জিয়াকোমো বোনাভেনচুরা পাস দেন রেবিচকে। ফাঁকায় দাঁড়ানো ক্রোয়েশিয়ান ফরোয়ার্ড কোনো ভুল করেননি।
হারলেও ৩১ ম্যাচে ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই আছে জুভেন্টাস। টানা নবম শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে এগোনো দলটির কিছুটা উপকার করেছে অবনমন অঞ্চলের দল লেচে। রাতের আগের ম্যাচে তাদের কাছে ২-১ গোলে হেরে গেছে দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাৎসিও। ৩১ ম্যাচে দলটির পয়েন্ট ৬৮।
অন্যদিকে, দুর্দান্ত জয়ে ৩১ ম্যাচে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে মিলান। তবে আগামী মৌসুমের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সম্ভাবনা তাদের নেই বললেই চলে। এক ম্যাচ কম খেলে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে চারে আছে আতালান্তা।
Comments