আল জাজিরায় সাক্ষাৎকার দেওয়ায় বাংলাদেশির ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করল মালয়েশিয়া
অভিবাসীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরায় সাক্ষাৎকার দেওয়ায় বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিক রায়হান কবিরের ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করেছে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ।
আজ রবিবার মালয়েশিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
মালয় মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার পুলিশ মহাপরিদর্শক তান শ্রী আবদুল হামিদ বদর ২৫ বছর বয়সী রায়হান কবিরের ওয়ার্ক পারমিট বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রায়হান এখন থেকে দেশটিতে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে থাকছেন।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর আগে রায়হানকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।’
মালেশিয়ায় লকডাউন চলাকালে অভিবাসীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার নিয়ে আল জাজিরার ‘১০১ ইস্ট প্রোগ্রাম’ এর একটি পর্বে কথা বলেছিলেন রায়হান। এরপরই কর্তৃপক্ষের নজরে আসেন তিনি।
‘লকড আপ ইন মালয়েশিয়া’স লকডাউন’ পর্বটি গত ৩ জুন প্রচারিত হয়। ওই পর্বে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রেডজোনে অভিযান চালানোর সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ও সমালোচনা তুলে ধরা হয়।
তথ্যচিত্রটি প্রচারের পর এর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটির মন্ত্রী, ইমিগ্রেশন বিভাগ ও পুলিশ।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দাতুক সেরি ইসমাইল সাবরি ইয়াকব সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে ‘মিথ্যা খবর পরিবেশন’ এর জন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান।
ওই পর্ব নিয়ে কাতারভিত্তিক নিউজ চ্যানেলটির বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার পুলিশ রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির অভিযোগ তদন্ত করেছে।
পর্বটি প্রচারিত হওয়ার পর, ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক খায়রুল যাইমি দাউদ বিদেশিদের সতর্ক করেন যে, মালয়েশিয়ার বিষয়ে নেতিবাচক বক্তব্য দেওয়ার কারণে তাদের পারমিট প্রত্যাহার করা হতে পারে।
এর এক দিন পরই ইমিগ্রেশন বিভাগ রায়হানের অবস্থান সম্পর্কে কারও কোনো তথ্য জানা থাকলে তা কর্তৃপক্ষকে জানাতে আহ্বান জানায়।
বাংলাদেশি অভিবাসীর ব্যক্তিগত বিবরণ দিয়ে জনগণের কাছে তার খোঁজ জানাতে অনুরোধ করায় ইমিগ্রেশন বিভাগের ফেসবুক পেজে ব্যাপক সমালোচনা হয়। অনেকেই একে ‘অভিবাসী বিরোধী মনোভাব’ হিসেবে সমালোচনা করেন।
আইনজীবীদের বরাতে মালয় মেইল জানায়, ইমিগ্রেশন বিভাগের ওই হুমকি বেআইনি নয়। তবে, এটি একটি ‘চরম’ পদক্ষেপ।
গত ১০ জুলাই, আল জাজিরার অন্তত ছয় কর্মীকে তদন্তের সুবিধার্থে আইনজীবীসহ বুকিত আমন পুলিশ সদর দপ্তরে ডাকা হয়।
Comments