সুনামগঞ্জে আবারও বন্যা, প্রবল গতিতে বাড়ছে নদীর পানি
সুনামগঞ্জে গত জুনের শেষ দিকে বন্যার পর ও কয়েকদিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফা বন্যায় হাওর এবং লোকালয়ে পাহাড়ি ঢলের পানিতে জেলার বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রবল গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে যাদুকাটা নদীর পানি। ফলে গরু, ছাগল ও গৃহপালিত পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন নানা প্রান্তে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান বলেন, ‘সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৩৯ সেন্টিমিটার ও আজ দুপুর ১২টার সময় যাদুকাটা নদীর পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। শেষ আপডেটে দেখা যায় পানি ১১১ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ২৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।’
তাহিরপুর উপজেলার টাংগুয়ার হাওর পাড়ের বাসিন্দা জসিম মিয়া বলেন, ‘প্রথম দফা বন্যার পানি এখনো ঠিকমতো সরেনি। এরই মধ্যে দ্বিতীয় দফা বন্যায় বসত বাড়িতে পানি উঠে গেছে। গত ১০ দিনের ব্যবধানে দু’বার বন্যায় প্লাবিত এই এলাকা ফলে চরম ক্ষতি আর দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন গবিব, অসহায় ও দিন মজুর পরিবার। হাওর পাড়ে ঢেউ ও নদীর প্রবল স্রোতের পানি আর বাতাসের শো শো আওয়াজে ভীত হয়ে পড়েছেন হাওর পাড়ে বসবাসকারীরা।’
নিচু এলাকার ঘর-বাড়িতে আবারও বন্যার পানি প্র বেশ করছে। করোনা ও বন্যায় বিপন্ন মানুষের জন্য আরও সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার দাবি জানিয়ে বিশ্বম্ভপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা গ্রামের বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, ‘সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর-শক্তিয়ারখলা সড়কের দু’কিলোমিটার জায়গা খুব নিচু করে তৈরি করায় প্রতিবছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করায় পানির তোড়ে সড়কে শতশত গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। যানবাহন চলাচল একবারেই বন্ধ আছে।’
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এরশাদ মিয়া বলেন, ‘করোনার মধ্যেই গতমাসের শেষের দিকে প্রথম দফা বন্যা শুরু হয়েছিল। করোনার প্রভাবে নিম্ন আয়ের লোকজনের আয় রোজগার নেই। এর মধ্যে দুই দফা বন্যা অসহায় পরিবারের মানুষ জন চরম দুর্ভোগে আছেন। তাদের জন্য সহায়তা কার্যক্রম আরও বাড়ানো প্রয়োজন।’
জেলা প্রশাসক আব্দুল আহাদ বলেন, ‘বন্যায় দুর্গতদের জন্য প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার ও অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি উপজেলার বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।’
Comments