ফুলগাজী-পরশুরামে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ১৯ গ্রাম প্লাবিত
ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে পানির চাপে মুহুরী ও কহুয়া নদীর ৯টি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে উজানের পানিতে দুই উপজেলার ১৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
গতকাল রোববার রাতে পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার মুহুরী ও কহুয়া নদীর বিভিন্ন এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। পাহাড়ি উজানের পানিতে দুটি উপজেলার প্রায় ১২শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা প্রশাসন, পাউবো ও স্থানীয়রা জানায়, গত রাতে পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢল ও উজানের পানির চাপে ফুলগাজী উপজেলার উত্তর দৌলতপুর অংশে ৩টি, কিসমত ঘনিয়া
মোড়া ও মুচিবাড়ি সংলগ্ন ২টি স্থানে এবং পরশুরাম উপজেলার মুহুরী নদীর দক্ষিণ শালধর, দুর্গাপুর ও কহুয়া নদীর বক্স মাহমুদ ইউনিয়নের কিসমত টেটেসর এলাকাসহ ৯টি স্থানে
বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে করে ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় পরশুরাম উপজেলার সাথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়রা আরও জানায়, পাহাড়ি উজানের পানিতে দুটি উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা, ফসলি জমি, আমনের বীজতলা সহ পানিতে ভেসে গেছে পুকুরে মাছ।
ফুলগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, বন্যায় উপজেলার ২৯ হেক্টর আমনের বীজতলা তলিয়ে গেছে।
জেলা প্রশাসক মো.ওয়াহিদুজ্জামান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহির উদ্দিন ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানান, মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের ঘনিয়া মোড়া, কিসমত ঘনিয়া মোড়া, পূর্ব ঘনিয়া মোড়া, উত্তর দৌলতপুর, বৈরাগপুর, সাহাপাড়া, উত্তর বরইয়াসহ অন্তত সাতটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, তার ইউনিয়নের চিথলিয়া গ্রাম, দুর্গাপুর, রতনপুর, রামপুর, দক্ষিণ শালধর, মালিপাথর ও পাগলীরকুল গ্রাম, উত্তর ধনীকুন্ডা, মধ্যম ধনীকুন্ডা, রাজষপুর উত্তর শালধর, নোয়াপুরসহ ১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহির উদ্দিন জানান, গত রোববার সন্ধায় মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সোমবার দুপুরে বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ভেঙে যাওয়া দুই উপজেলার বেড়িবাঁধের সংস্কারসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
Comments