কাঠকচু চাষ করে লাভবান লালমনিরহাটের কৃষক
কাঠকচুর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে এবং সেই সঙ্গে এর দামও বেড়েছে কয়েকগুণ। এতে করে এই সবজী চাষি করে লাভবান হচ্ছেন লালমনিরহাটের কৃষক।
কাঠকচু উৎপাদনে ছয় থেকে সাত মাস লেগে যায় বলে অনেক কৃষক এই সবজী চাষে উৎসাহী নন। তবে, যারা চাষ করেছেন তারা ভালো ফলন ও সন্তোষজনক আয় পেয়ে খুশি।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মন্ডলেরহাট এলাকার চাষি মোবারক হোসেন (৫৮) বলেন, ‘কাঠকচুকে কোনো কোনো এলাকায় বাক্সকচু বলে। কাঠ গাছের মতো লম্বা আকার হওয়ায় এ কচুকে কাঠকচু বলা হয়ে থাকে।।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ নিচু এলাকা, যেখানে বানের পানি জমতে পারে, সেখানে কাঠকচু চাষ করা হয়। বানের পানিতে এ ফসলের কোনো ক্ষতি হয় না। বরং পানিতে কাঠকচু ভালোভাবে বেড়ে উঠে। বাজারে এ কচুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে একটি কচু ১০ টাকা থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।’
একই গ্রামের চাষি মহির উদ্দিন (৬২) বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে সাড়ে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার পর্যন্ত কাঠকচুর চারা রোপণ করা যায়। প্রায় সবগুলো চারাগাছ থেকেই ফলন পাওয়া যায়। বছরের ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে কাঠকচুর চারা রোপণ করতে হয়। আর ফলন আসে জুলাই ও আগস্ট মাস জুড়ে। এক বিঘা জমিতে কাঠকচু চাষ করতে খরচ হয় আট থেকে ১০ হাজার টাকা। বিক্রি হয় ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকায়।’
এ ফসল দীর্ঘ মেয়াদি হওয়ায় খুব কম কৃষকই কাঠকচু চাষ করেন। যারা চাষ করেন তারাও কম পরিমাণ জমিতে চাষ করে থাকেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কাঠকচু চাষে পরিবারের সবজির চাহিদাও মেটে আর এর সঙ্গে মোটামুটি ভালো আয়ও আসে।’
আদিতমারী উপজেলার কমলবাড়ী গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম (৫৫) বলেন, ‘কাঠকচুর চাহিদা অনেক বেড়েছে। আগের চেয়ে তিনগুণ বেশি দামে এ সবজী বিক্রি হয় বাজারে।’
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ১২০ হেক্টর জমিতে কাঠকচু চাষ হয়েছে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এনামুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কাঠকচু চাষ লাভজনক হলেও দীর্ঘমেয়াদি হওয়ায় অনেক কৃষকের তেমন আগ্রহ দেখান না। সাধারণ নিচু জমি, যেখানে পানি জমতে পারে ও অন্য ফসলের ফলন তেমন আসে না, সেখানে এ ফসলের চাষ করছেন কৃষকরা।’
তবে ফলন ভালো হলে কৃষকরা কাঠকচু থেকে যে পরিমাণে আয় করতে পারেন, একই সময়ে অন্য ফসল থেকে সে পরিমাণে আয় আসে না বলে জানান তিনি।
Comments