বন্যা পরিস্থিতি

টাঙ্গাইলে নতুন এলাকা প্লাবিত, ঝুঁকিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ

যমুনাসহ জেলার সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার পানির তোড়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন স্থানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।
টাঙ্গাইলের ভূয়াপুরের তারাইয়ে শহর রক্ষা বাঁধে বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

যমুনাসহ জেলার সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার পানির তোড়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন স্থানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, আজ শনিবার যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী বিপৎসীমার ১৫১ সেন্টিমিটার এবং ঝিনাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

বন্যার পানির প্রবল চাপে মারাত্মক ঝুঁকিতে আছে ভুয়াপুর উপজেলায় যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। ইতোমধ্যে অর্জুনা ইউনিয়নের তারাই এলাকায় বাঁধের একটি অংশ ভেঙ্গে গেছে এবং বালির বস্তা ফেলে সেটি মেরামতের চেষ্টা চলছে।

অপরদিকে যমুনা নদী ঘেষা ভূয়াপুর-তারাকান্দি পাকা সড়কটিও ঝুঁকিতে রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির ২৬টি স্থানে ইতোমধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। এই সড়কটি ভেঙ্গে গেলে নদীর পানি প্রবেশ করে পার্শ্ববর্তী আরও চারটি উপজেলা বন্যা কবলিত হয়ে পড়বে।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বাঁধ এবং সড়কটি রক্ষার জন্য কাজ করছেন তারা এবং পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আছে।

এদিকে পুংলি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পানির চাপে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে টাঙ্গাইল শহর রক্ষা বাঁধ। বাঁধ ভেঙ্গে গেলে টাঙ্গাইল জেলা শহরসহ পার্শ্ববর্তী বাসাইল উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

এছাড়াও ঝিনাই নদীর পানির তোড়ে বাসাইল উপজেলার কাশিল ইউনিয়নের কামুটিয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একটি অংশ ভেঙ্গে যাওয়ায় সংলগ্ন কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

বন্যার পানির প্রবল স্রোতে বাসাইল-কাঞ্চনপুর সড়কের ছনকাপাড়া এলাকার একটি ব্রিজ ভেসে গেছে। এতে বাসাইল ও মির্জাপুর উপজেলার একটি অংশে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গনি গতকাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে ভূয়াপুরের তারাইতে ক্ষতিগ্রস্ত যমুনার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং টাঙ্গাইল সদর উপজেলার শহর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বাঁধগুলি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে ছয়টি উপজেলার প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছে। সহস্রাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে প্রায় ৫,০০০ হেক্টর জমির ফসল।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী দুই-তিন দিন যমুনার পানি কিছুটা কমলেও জুলাইয়ের ২১ তারিখ থেকে তা আবার বাড়তে শুরু করবে এবং ২৫ এবং ২৬ তারিখে এটি সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাবে।

Comments

The Daily Star  | English

Religious affairs ministry directs DCs to maintain peace, order at mazars

The directive was issued in response to planned attacks on shrines, allegedly aimed at embarrassing the interim government

14m ago