ফেনীতে একই পরিবারের ১২ জনকে অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট

ফেনীর ছাগলনাইয়ায় খাবারে চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে পরিবারের ১২ জনকে অচেতন করে স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের পশ্চিম দেবপুর এলাকার জয়নাল আবেদীন চৌধুরী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার রাতে উপজেলার পশ্চিম দেবপুর এলাকার জয়নাল আবেদীন চৌধুরীর রান্না ঘরে খাবারের সঙ্গে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে দেয়। রাতে জয়নাল আবেদীন চৌধুরীর পরিবারের শশী বেগম (৭৫), মো. স্বপন (৪৮), মো. সেলিম (৪৫), ছকিনা বেগম (৪৮), মায়া বেগম (৩৭), পিংকি আক্তার (২৫), তন্নী আক্তার (২৪), মো. মিনার (১৬), লামিয়া আক্তার (১৪), লুবনা আক্তার (১০), মো. জারিফ (৫) ও মো. ফারাবিসহ (৪) পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাতে কোনো এক সময় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা কৌশলে তাদের ঘরে ঢুকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়।
প্রতিবেশিরা জানান, গতকাল সকালে জয়নাল আবেদীনের পরিবারের কেউ ঘুম থেকে না ওঠায় এবং ঘরের দরজা খোলা দেখে বাড়ির কয়েকজন সদস্য ভেতরে গিয়ে পরিবারে সবাইকে অচেতন অবস্থায় খাটের ওপরে ও নিচে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তারা আত্মীয়-স্বজনদের খবর দিয়ে ১২ জনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করান। বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
খবর পেয়ে গতকাল শনিবার সকালে ছাগলনাইয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
উপজেলার মহামায়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যার গরীব শাহ হোসেন বাদশা চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি বিষয়টি শুনে ওই বাড়িতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নিয়েছেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই বাড়ির জসিম উদ্দিন নামে একজনকে পুলিশ আটক করেছে।
ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. শিহাব উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, শনিবার সকালে কয়েকজন অচেতন অবস্থায় নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ১২ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তাদের চিকিৎসায় তিন সদস্যের একটি চিকিৎসক দল গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে ওষুধ দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে চার-পাঁচজনের সুস্থ হতে একটু সময় লাগবে। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ২৪ ঘণ্টা পর মূল ঘটনা জানা যাবে।
ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেছবাহ উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘খবর পেয়ে সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে অসুস্থদের খোঁজ-খবর নিয়েছি। ঘটনাটি কিভাবে ঘটেছে এবং কারা ঘটিয়েছে পুলিশ সেই রহস্য উদঘটনের চেষ্টা করছে।’
তিনি আরও বলেন, পুলিশের ধারনা রান্নাঘরটি বসত ঘরের বাহিরে হওয়ায় রাতের বেলায় কেউ খাবারে চেতনানাশক কিছু মিশিয়ে দিয়ে যায়। যা খাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এতে করে ঘরে ঢুকে মালামাল নিয়ে যেতে দুর্বৃত্তদের সহজ হয়েছে। তবে কি পরিমাণ টাকা ও স্বর্ণালংকার এবং অন্যান্য জিনিসপত্র লুট হয়েছে তা পরিবারের সদস্যদের জ্ঞান ফেরার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
Comments