ধরলাপাড়ে কলা চাষিদের মাথায় হাত

লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের ধরলা নদীর পাড়ের প্রায় ২০টি চরে কলা চাষ করেন কৃষকরা। দুই দফা বন্যায় এসব কলাগাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে করে লোকসানের অংক কষতেই মাথায় হাত পরেছে কৃষকের।
লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের ধরলা নদীর পাড়ের প্রায় ২০টি চরে দুই দফা বন্যায় কলাচাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ছবি: স্টার

লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের ধরলা নদীর পাড়ের প্রায় ২০টি চরে কলা চাষ করেন কৃষকরা। দুই দফা বন্যায় এসব কলাগাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে করে লোকসানের অংক কষতেই মাথায় হাত পরেছে কৃষকের।

অনেক কলাগাছ ভেসে গেছে বানের পানিতে। অধিকাংশ কলাগাছ বন্যার পানিতে প্রায় ২০দিন ডুবে থাকায় গোঁড়া পঁচে গেছে। এতে করে ওই গাছ থেকে আর ফলন আসা সম্ভব নয়।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার ধরলা নদীর বুকে চর ফলিমারী এলাকার কলা চাষি আজিজুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তিন একর জমিতে আমার কলার বাগান। সাড়ে সাত হাজার গাছ লাগিয়েছিলাম। এবারের বন্যায় পানিতে ভেসে গেছে ৫০০ কলাগাছ, নষ্ট হয়েছে আরও অন্তত ২০০। বাকি যেগুলো আছে তার মধ্যে অধিকাংশরই গোঁড়া পঁচে গেছে। প্রথমদফা বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছিল সেটা হয়ত কাটিয়ে ওঠা যেত, কিন্তু অল্প সময়ের ব্যবধানে দ্বিতীয়দফা বন্যার কারণে ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে গেছে।’

একই চরের কলা চাষি আলিম উদ্দিন বলেন, ‘দেড় একর জমিতে তিন হাজার ৭০০ কলাগাছ লাগিয়েছিলাম। কিন্তু বন্যায় অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। যে টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম সেটা তুলতেই হিমশিম খেতে হবে। প্রতিটি কলাগাছের পিছনে আমাদের খরচ হয় ৯০ থেকে ১০০ টাকা। ফলন ভালো হলে প্রতিটি গাছ থেকে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকার কলা বিক্রি হয়। প্রতি বছর চরে কলা চাষ করে লাভবান হলেও এবার বন্যায় বড় ক্ষতির মুখে পড়ে গেলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘লালমনিরহাট সদর উপজেলা, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার প্রায় ২০টি চরে ২৫০টির মতো কলা বাগান আছে। প্রত্যেকটি বাগান দেড় থেকে পাঁচ একর জমির উপর। চরে উৎপাদিত কলা এই দুই জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। এখানে কলা চাষের সঙ্গে জড়িত আছে দুই হাজারের বেশি কৃষক।’

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চর গোড়কমন্ডলের কলা চাষি নুর ইসলাম বলেন, ‘এ বছর কলা চাষ করে আমাদের মাথায় হাত। বন্যার কারণে কলা চাষ করে লোকসানে পড়েছি। গত বছর দুই একর জমিতে কলা চাষ করে সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় করেছিলাম। আর এবার আসল তুলতে পারব কিনা সন্দেহ।’

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলার বুকে চর সারডোব এলাকার কলা চাষি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বাগানের কলাগাছ বানের পানিতে তিন সপ্তাহ ধরে ডুবে থাকায় গোঁড়া পঁচনে আক্রান্ত হয়েছে। এতে কলাগাছে ফলন আসবে না। আর আসলেও তা স্বাভাবিক হবে না।’

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago