বাড়ছে পানি, বাড়ছে বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ

বানভাসি হয়ে কুড়িগ্রামের সরকারি রাস্তা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ, রেল লাইন ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নেয়া মানুষেরা নলকূপ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় চরম দুর্ভোগে পরেছেন।
বন্যায় ডুবেছে ঘর। কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের হেলিবোর্ড এলাকার উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। ছবি: এস দিলীপ রায়

বানভাসি হয়ে কুড়িগ্রামের সরকারি রাস্তা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ, রেল লাইন ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নেয়া মানুষেরা নলকূপ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় চরম দুর্ভোগে পরেছেন। 

কুড়িগ্রাম জেলার ৯টি উপজেলার ৫৬টি ইউনিয়নের ৪০০টি গ্রামের প্রায় তিন লাখ বানভাসি মানুষের মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার বানভাসি মানুষ বাড়ি-ঘর ছেড়ে সরকারি রাস্তা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ ও রেল লাইনের উপর আশ্রয় নিয়েছেন।

দ্বিতীয় দফা বন্যার ৯ দিন পার হলেও কোন উন্নতি নেই কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতির। এখনো কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানির বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আজ রোববার সকাল ৬টা থেকে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া ঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম।

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের বানভাসি গৃহবধু শেফালি বলেন, তারা গত আট দিন ধরে রেল লাইনে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছেন। এখানে কোনো নলকূপ ও শৌচাগার নেই।

তিনি বলেন, ‘আমার কাছে খাবারের চেয়ে নলকূপ ও টয়লেট ব্যবস্থা না থাকাটাই বড় সংকট বলে মনে হচ্ছে।’ 

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের হেলিবোর্ড এলাকার বানভাসি এক গৃহবধু অভিযোগ করে বলেন, তাদের বাড়িগুলি বন্যার পানিতে ডুবে গেছে এবং তারা হেলিবোর্ড এলাকার উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। তার মতো শত শত পরিবার এখানে আশ্রয় নিয়েছে। তবে খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধার তীব্র ঘাটতি রয়েছে এখানে। 

তিনি বলেন, অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে বিশেষ করে বানভাসি নারীরা অত্যন্ত সংকটে আছেন।

একই এলাকার বানভাসি শফিকুল ইসলাম (৫৫) জানান, তাদের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে নলকূপ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় তীব্র কষ্টে আছেন। নারী ও শিশুদের দুর্ভোগ বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তিনি জানান।

কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদীর দুর্গম চর উত্তর বোদালকাটি গ্রামের দবিয়ার রহমান বলেন, তারা গত আট দিন ধরে অমানবিক পরিস্থিতিতে জীবনযাপন করছেন কিন্তু কেউ তাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন না। তাদের মধ্যে খাবার এবং বিশুদ্ধ পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেন, নলকূপগুলি বন্যার পানিতে ডুবে গেছে এবং তারা নদীর পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছেন।

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রায়হান শাহ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি বানভাসিদের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেছেন এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে নলকূপ স্থাপন ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট স্থাপনের জন্য পদক্ষেপ নিয়ে তা তাৎক্ষণিক বাস্তবায়ন করছেন।

তিনি বানভাসি ও পানিবন্দি মানুষজনের সাথে দেখা করছেন এবং তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান ইউএনও।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

5h ago