মঞ্চ থেকে বলিউডে

Naseeruddin Shah
বলিউড অভিনেতা নাসিরুদ্দীন শাহ। ছবি: সংগৃহীত

বলিউডে যে কয়জন অভিনেতার অভিনয় দর্শক খুব আগ্রহভরে দেখে তাদের মধ্যে ধ্রুপদী অভিনেতা হলেন নাসিরুদ্দীন শাহ। মূলধারার হিন্দি চলচ্চিত্র ও আর্ট ফিল্ম, দুই ধরনের চলচ্চিত্রেই নাসিরুদ্দিন অত্যন্ত সফল একজন অভিনেতা। শুধু কি বলিউড, হলিউডেও অভিনয় করেছেন তিনি।

তিন তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ’সহ ভারতের সব গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কারই রয়েছে তার ঝুলিতে।

তিনি মূলত মঞ্চ অভিনেতা ছিলেন বা ঘুরিয়ে বললে মঞ্চ থেকেই তার বলিউডে আসা। যার কারণে তার অভিনয়ে পাওয়া যায় অন্য এক রকম ক্যারিশমা।

নাসিরুদ্দিন শাহ ঊনিশ শতকের বিখ্যাত আফগান যোদ্ধা জান ফিশান খান বা সৈয়দ মোহাম্মদ শাহ’র বংশধর। ১৯৫০ সালের এই দিনে ভারতের উত্তর প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন এই শক্তিশালী অভিনেতা। বাবা আলি মোহাম্মদ শাহ ছিলেন সেনা কর্মকর্তা এবং মা ছিলেন গৃহিনী।

উত্তরাখণ্ড রাজ্যের রাজধানী নৈনিতালে তিনি সেন্ট জোসেফ স্কুলে লেখাপড়া করেন। তারপর আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭১ সালে মানবিক বিভাগে স্নাতক পাস করেন। পরে তিনি দিল্লিতে ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামায় পড়াশোনা করেন।

১৯৭৭ সালে বেঞ্জামিন গিলানি ও মার্কিন বংশোদ্ভূত ভারতীয় অভিনেতা টম অল্টারকে সঙ্গে নিয়ে ‘মটলি প্রোডাকশন’ নামে একটি নাটকের দল গড়ে তোলেন নাসিরউদ্দিন। যদিও ১৯৭৫ সালে ‘নিশান্ত’ ছবিতে ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন তিনি। তারপর থেকে অভিনয় আর অভিনয়।

চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে নাসিরুদ্দিন শাহ কখনো অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে অভিনয় করেননি। নাসিরুদ্দিন শাহ অভিনেতা হিসেবে যেমন আলোচিত ঠিক তেমনি বিভিন্ন সময়ে ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে কথা বলেও আলোচিত।

এই তো ২০১৮ সালে তিনি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে কথা বলে বেশ রোশানলে পড়েছিলেন। কিন্তু তিনি তার বক্তব্য থেকে সরে আসেননি।

তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আর আমার স্ত্রী দুজন দুই ধর্ম থেকে এসেছিলাম। কিন্তু, আমাদের সন্তানদের আমরা কোনো ধর্মই পালন করাইনি। এখন চিন্তা হয় যে কাল যদি একদল মানুষ আমার সন্তানদের ঘিরে ধরে জানতে চায় যে ওরা হিন্দু না মুসলমান, তাহলে তো তারা কোনো জবাব দিতে পারবে না! এই পরিস্থিতিটার কোনো উন্নতি খুব তাড়াতাড়ি হবে বলে মনে হয় না। একবার যে জ্বিন বোতল থেকে বেরিয়ে গেছে, তাকে আবার বোতলে ফেরত পাঠানো কঠিন।’

তার ব্যক্তিজীবনও বেশ আলোচিত-সমালোচিত। মাত্র ২০ বছর বয়সে বিয়ে করেন তিনি। তবে তার স্ত্রী মানারা সিক্রি ওরফে পারভিন মুরাদ ছিলেন নাসিরুদ্দিনের চেয়ে ১৬ বছরের বড়। কিন্তু, নাসিরুদ্দিনের পরিবারের অমতে ওই বিয়ে মাত্র এক বছর টেকে। পরে ১৯৮২ সালে অভিনেত্রী সুপ্রিয়া পাঠককে বিয়ে করেন তিনি।

ভারতীয় চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য ভারত সরকার তাকে ১৯৮৭ সালে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ ও ২০০৩ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘পদ্মভূষণ’ পদকে ভূষিত করে।

Comments

The Daily Star  | English

Decision on AL’s registration after receiving govt ban order: CEC

The decision to ban was made at a special meeting of the council following three days of demonstrations demanding a ban on the party

59m ago