চোরাকারবারিদের ইয়াবা ‘লুটকারী’ মিজান ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

কক্সবাজার শহরের মাঝিরঘাট এলাকায় বাঁকখালী নদীতে নোঙ্গর করা একটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে বড় একটি ইয়াবা চালান লুটের মূলহোতা মিজানুর রহমান মিজান (৩২) পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে।
নিহত মিজান কক্সবাজার পৌর এলাকার পশ্চিম টেকপাড়ার বাসিন্দা গোলাম মওলা প্রকাশ জজ বাবুলের বড় ছেলে।
আজ সোমবার ভোর চারটার দিকে কক্সবাজার জেলা শহরের খুরুশকুল সেতু এলাকায় এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত ১৭ জুলাই রাতে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ মিজানুর রহমান মিজানকে আটক করে।
গতকাল রোববার কক্সবাজার জেলা পুলিশের একটি দল বেনাপোল থেকে তাকে কক্সবাজারে নিয়ে আসে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি সৈয়দ মুহাম্মদ শাহজাহান কবির বলেন, ‘মিজানুর রহমান মিজানকে গতকাল রাতে বেনাপোল থেকে কক্সবাজারে নিয়ে এসে ইয়াবা চালান লুটের ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মিজান ইয়াবা লুটের বিষয়ে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে পুলিশকে অনেক তথ্য দেন। তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ তাকে নিয়ে আজ ভোররাতে কক্সবাজার শহরের খুরুশকুল সেতু সংলগ্ন এলাকায় ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারে যায়। পৌঁছানোর পর সেখানে পূর্ব থেকে অবস্থান করা মিজানের সহযোগিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ছুঁড়ে তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালালে এক পর্যায়ে সহযোগিদের গুলিতে মিজান গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। তাকে দ্রুত কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের নিয়ে আসা হলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
তিনি আরও জানান, তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ১০ হাজার পিস ইয়াবা, একটি দেশি বন্দুক ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার শহরের মাঝেরঘাটে আবু ছৈয়দ কোম্পানির জেটিতে চোরাকারবারিদের বড় একটি ইয়াবার চালানটি লুট হয়। সেই ঘটনার মূলহোতা ছিলেন মিজান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে মিজান ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেই ইয়াবাগুলো বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করেন।
এ ঘটনায় কক্সবাজার শহর জুড়ে আলোচনার ঝড় উঠলে ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোরে মিজান চট্টগ্রাম চলে যায়। চট্টগ্রাম শহরে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অবস্থান করে মিজান । এরপর ২০ ফেব্রুয়ারি রাতেই বিমানযোগে তিনি ভারত পালিয়ে যান। মিজানের মোবাইলের সিডিএমএস পর্যবেক্ষণ ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনের সঙ্গে কথা বলে মিজানের ভারতে পালিয়ে যাওয়ার খবরটি নিশ্চিত হয় পুলিশ।
এই ঘটনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মাদক আইনে মামলা দায়ের করে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ। ওই দিন কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলে অভিযান চালিয়ে ফিরোজ আহমদ ও মোস্তাক আহমদ লালু নামে আপন দুই ভাইকে দুই লাখ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে। তারা বর্তমানে জেলা কারাগারে বন্দী আছে। মামলার অপর পাঁচ অভিযুক্ত আসামী পলাতক রয়েছে।
এ বিষয়ে নিহত মিজানুর রহমান মিজানের পরিবারের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Comments