আবারও ঘর ছাড়ছেন ধরলা পাড়ের বাসিন্দারা
ধরলা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন লালমনিরহাটের সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের চর ফলিমারীর বাসিন্দারা। ডুবে গেছে ফসলি জমি। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।
চর ফলিমারীর বাসিন্দা ময়না বেওয়া (৬৪) বলেন, ‘ক্যাং করি এইল্যা সহ্য করি। ফের বান আসিল। অ্যাং করি বারবার বান আইসলে হামরাগুলা ক্যাদোন করি বাঁচং। বাড়িত থাইকবারেই পাবার নাগছোং না। কয়দিন আগোত যদিল বাড়িত আইসলোং ফের অ্যালা বান শুরু হয়া গ্যালো। হামারগুলার কপালোত খালি কষ্ট আর কষ্ট।’
একই এলাকার বাসিন্দা রমিজ উদ্দিন (৮৫)। তিনি বলেন, বন্যার পানিতে তার ঘরের আসবাবপত্র নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়ির একাংশ। জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। এভাবে দফায় দফায় বন্যা হতে থাকলে নদী এলাকা ছাড়তে হবে।’
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর চর গোবর্ধানের বাসিন্দা ফজলার রহমান (৬০) বলেন, গত ২১ জুন থেকে ২ জুলাই পযর্ন্ত প্রথম দফায় বন্যার কবলে পড়েন তারা। ১০ জুলাই আবার তাদের ঘর ছাড়তে হয়। ১৬ জুলাই থেকে তারা বাড়ি-ঘরে ফিরতে শুরু করেন। ২২ জুলাই সন্ধ্যার পর থেকে তাদের বাড়িতে পানি উঠতে শুরু করে।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী এলাকার বাসিন্দা সুরমান আলী (৬৫) বলেন, বুধবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিস্তার পানি অনেক বেড়ে গেছে। তবে আজ সকাল থেকে কমতে শুরু করেছে।
লালমনিরহাটের সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, দফায দফায় বন্যা পরিস্থিতির কারণে বিপাকে পড়েছেন নদীপাড়ের মানুষ। বুধবার থেকে ধরলায় পানি বাড়ছে। অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ে গেছে। তবে এখনো অধিকাংশ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি কমে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত রাতে তিস্তার পানি বিপৎসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।’
Comments