কুড়িগ্রামে পাউবো’র বাঁধ ভেঙে ১৫ গ্রাম প্লাবিত

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব ও রাজারহাট উপজেলার বুড়িরহাট গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানির তোড়ে ভেসে গেছে ৪০টির বেশি বাড়ি। আজ শুক্রবার কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সারডোব গ্রামে ধরলা পাড়ে ১২০ মিটার ও বুড়িরহাট গ্রামে তিস্তা পাড়ে ৭০ মিটার বাঁধ ভেঙে গেছে। ধরলা নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় সারডোব গ্রামে আপাতত কিছু করা যাচ্ছে না। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে কিছুই করাও যাবে না। বুড়িরহাট গ্রামে জিও-ব্যাগ ফেলা হচ্ছে কিন্তু তিস্তার স্রোতে ভেসে যাচ্ছে। আজ সকাল থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারী স্টেশনে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া স্টেশনে বিপৎসীমার ৬২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রাম ব্রিজ স্টেশনে বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।’
সারডোব গ্রামের কৃষক শামসুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যার পানিতে বসতভিটা, আবাদি জমি সব পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আবাদি জমিতে বিপুল পরিমাণে বালু জমাট বাঁধছে। আগামী ১৫ থেকে ১৬ বছরেও এসব জমিতে ফসল হবে না।’
একই গ্রামের জহির আলী মুন্সী বলেন, ‘নিমিষের মধ্যে ঘরের ভেতরে গলা পানি হয়ে গেল। কোনো রকমে নিরাপদ আশ্রয়ে এলাম। কিন্তু ঘরের কিছু রক্ষা করতে পারিনি। তিনটি ঘর, আসবাবপত্র ভেসে গেছে। এখন পরিবারের সবাইকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছি।’
বুড়িরহাট গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় শত শত বিঘা আবাদি জমি এখন তিস্তার পানির নিচে। ফসলি জমিতে বালু পড়ছে, এসব জমি কত দিনে চাষের উপযোগী হবে বলা কঠিন।’
হলোখানা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বাহিনুর ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সারডোব গ্রামের আরডিআরএস বাজারের অনেক দোকান ও বাড়ি-ঘর নদী গর্ভে চলে গেছে। ধরলার পানিতে গ্রামের কয়েক শ বিঘা আবাদি জমি তলিয়ে গেছে গেছে।’
হলোখানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উমর ফারুখ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা জেলা প্রশাসনে দেওয়া হয়েছে। শিগগির তাদের পুনর্বাসনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত তাকে সরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা হিসেবে চাল ও শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে।’
Comments