ব্রডের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পর নিয়ন্ত্রণে ইংল্যান্ড
সুবিধাজনক অবস্থানে থেকে দিন শুরু করার পরও তিনশ রানের নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ছিল ইংল্যান্ড। ব্যাট হাতে ঝড়ো ইনিংস খেলে তাদেরকে পথ দেখান স্টুয়ার্ট ব্রড। এরপর বল হাতেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে প্রথম আঘাতটা করেন তিনি। বাকি পেসাররাও তাকে সঙ্গ দেওয়ায় ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টে চালকের আসনে বসে গেছে স্বাগতিকরা।
শনিবার আলোক-স্বল্পতায় দ্বিতীয় দিনের পুরো ওভার সম্পন্ন করা যায়নি। তার আগে প্রথম ইনিংসে ক্যারিবিয়ানরা সংগ্রহ করেছে ৬ উইকেটে ১৩৭ রান। প্রথম ইনিংসে ৩৬৯ রান করা ইংলিশদের চেয়ে এখনও ২৩২ রানে পিছিয়ে রয়েছে দলটি। উইকেটে আছেন অধিনায়ক জেসন হোল্ডার ২৪ ও শেন ডাওরিচ ১০ রানে।
আগের দিনের ৪ উইকেটে ২৫৮ রান নিয়ে খেলতে নেমেছিল ইংল্যান্ড। তবে দ্বিতীয় নতুন বল নিয়ে সফরকারী পেসাররা তোপ দাগানোয় মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই গুটিয়ে যায় তারা। হাতে থাকা ৬ উইকেট খুইয়ে যোগ করে ১১১ রান।
সেঞ্চুরির আশা জাগানো অলি পোপ এদিন আর কোনো রান যোগ করতে পারেননি। শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের ডেলিভারিতে স্লিপে রাহকিম কর্নওয়ালের হাতে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। তবে মুখোমুখি হওয়া পরের ডেলিভারিতেই বোল্ড হয়ে যান ১৫০ বলে ৯১ রান করা এই ডানহাতি।
ক্রিস ওকস টিকতে পারেননি। তাকে বোল্ড করে টেস্ট ক্যারিয়ারে দুইশ উইকেটের মাইলফলক পূরণ করেন কেমার রোচ। আগের দিনের আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান জস বাটলারকেও এগোতে দেননি গ্যাব্রিয়েল। ১৪২ বলে ৬৭ রান করে হোল্ডারের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। এরপর জোফরা আর্চারকে দ্রুত সাজঘরে ফেরান রোচ। তাতে ১৮ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড।
দশে নামা ব্রড উইন্ডিজ বোলারদের উপর চড়াও হলে স্বস্তি ফেরে স্বাগতিক শিবিরে। ৩৩ বলে হাফসেঞ্চুরি স্পর্শ করেন তিনি। ডম বেসকে নিয়ে নবম উইকেট জুটিতে যোগ করেন গুরুত্বপূর্ণ ৭৬ রান।
৪৫ বলে ৬২ রান করে রোস্টন চেজের বলে ডিপ মিডউইকেটে জারমেইন ব্ল্যাকউডের হাতে ধরা পড়েন ব্রড। তার ইনিংসে ছিল ৯ চার ও ১ ছয়। হোল্ডারের বলে শেষ উইকেট হিসেবে জেমস অ্যান্ডারসন স্লিপে কর্নওয়ালের তালুবন্দি হলে থামে ইংলিশদের ইনিংস।
বেস ৫৫ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ৭২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে উইন্ডিজের সবচেয়ে সফল বোলার রোচ। সমান ২টি করে উইকেট দখল করেন গ্যাব্রিয়েল ও চেজ।
জবাব দিতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট খোয়ায় সফরকারীরা। ব্রডের ডেলিভারিতে স্লিপে জো রুটের হাতে ক্যাচ দেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। দ্বিতীয় উইকেটে প্রতিরোধের আভাস দেন আরেক ওপেনার জন ক্যাম্পবেল ও শেই হোপ। তবে তাদের প্রচেষ্টার অবসান ঘটান জোফরা আর্চার। বাউন্সারে কুপোকাত হয়ে গালিতে ধরা পড়েন ৫০ বলে ৩২ রান করা ক্যাম্পবেল। ভাঙে ৪৩ রানের জুটি।
এরপর ধস নামে উইন্ডিজের ব্যাটিংয়ে। ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দেওয়া হোপ ৬৪ বলে ১৭ রান করে মাঠ ছাড়েন। অ্যান্ডারসনের অসাধারণ এক ডেলিভারিতে উইকেটরক্ষক বাটলারের গ্লাভসবন্দি হন তিনি। শামার ব্রুকসও ফেরেন একই কায়দায়। ব্রডের বলে চেজ এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরলে ৭৩ রানে পতন হয় দলটির পঞ্চম উইকেটের।
ব্ল্যাকউড ও হোল্ডার ষষ্ঠ উইকেটে এগিয়ে নিচ্ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। তবে এই জুটিকে মাথাব্যথার কারণ হতে দেননি ওকস। ৪৫ বলে ২৬ রান করা ব্ল্যাকউডকে বোল্ড করে দেন তিনি। আস্থার সঙ্গে খেলে দিনের বাকিটা পার করেন দলনেতা হোল্ডার ও উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ডাওরিচ।
ইংল্যান্ডের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন অ্যান্ডারসন ও ব্রড। দীর্ঘদিনের দুই বোলিং সঙ্গী সমান ১৭ রান করে দেন। ১টি করে উইকেট গেছে আর্চার ও ওকসের ঝুলিতে।
Comments