বন্যায় মানিকগঞ্জে লক্ষাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত
এবারের বন্যায় মানিকগঞ্জের ৩০ হাজার ৫১৭ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জেলার অন্তত এক লাখ ১৯ হাজার ২৫৬ জন কৃষক।
মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ে (১-১০ জুলাই) চার হাজার ২১৩ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েন ১৯ হাজার ৮৭৬ জন কৃষক। আর দ্বিতীয় ধাপের বন্যায় (১১-২৬ জুলাই) আরও ২৬ হাজার ৩০৪ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় এক লাখ কৃষক।
বন্যার পানিতে সিংগাইর উপজেলায় ছয় হাজার ১০০ হেক্টর, দৌলতপুরে পাঁচ হাজার ৭১৭ হেক্টর, শিবালয়ে চার হাজার ৫১১ হেক্টর, ঘিওরে চার হাজার ৩২ হেক্টর, হরিরামপুরে তিন হাজার ৮২৬ হেক্টর, মানিকগঞ্জ সদরে তিন হাজার ৫৪২ হেক্টর ও সাটুরিয়া উপজেলায় দুই হাজার ৭৮৯ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আটিগ্রাম ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের সোলায়মান খান বলেন, ‘আমি ৩৩ শতাংশ জমিতে পেঁপে, ৫২ শতাংশ জমিতে কাঁচা কলা ও ৪০ শতাংশ জমিতে মাষকলাই আবাদ করেছিলাম। কিন্তু, দুই দফায় বন্যার পানিতে সবই তলিয়ে গেছে। এতে আমার দেড় লাখ টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে।’
হরিরামপুর উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের গোড়াইল গ্রামের কৃষক সোরহাব মিয়া বলেন, ‘আমি সাড়ে পাঁচ বিঘা জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছিলাম। ফলনও ভালো হয়েছিল। কিন্তু, বন্যার পানিতে তলিয়ে গাছসহ ধান পচে গেছে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. শাহজাহান আলী বিশ্বাস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দুই দফায় বন্যায় জেলায় ২৫ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমির বোনা আমন, দুই হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমির রোপা আমন, ৮৫৭ হেক্টর জমির আউশ, এক হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমির সবজি, ১০৮ হেক্টর জমির রোপা আমনের বীজতলাসহ কিছু তিল ও ভুট্টা পানিতে তলিয়ে কৃষকদের ক্ষতি হয়েছে।’
‘আমরা নিয়মিত বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয়ে পাঠাচ্ছি। আশা করি, জমি থেকে পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সার ও বীজ সহায়তা পাবেন’, বলেন তিনি।
এদিকে, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মানিকগঞ্জের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরিচা পয়েন্টে চার সেন্টিমিটার পানি বেড়ে তা বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক ফারুক হোসেন।
Comments