প্রাথমিকের পাঠ্যসূচি সংক্ষিপ্ত করার পরিকল্পনা করছে সরকার
শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাব এবং স্কুল খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় সরকার প্রাথমিক পর্যায়ের পাঠ্যসূচি সংক্ষিপ্ত করার পরিকল্পনা করছে।
সেপ্টেম্বরে স্কুল খোলার সম্ভাবনা থাকায়, শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ের সিলেবাস ছোট করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) ও জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) কাজ করছে। সেপ্টেম্বরে স্কুল খুললেও, শিক্ষার্থীদের প্রায় পাঁচ মাস ক্লাস না হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ও শ্রেণিভিত্তিক মৌলিক বিষয়ে জ্ঞানার্জনের বিষয় মাথায় রেখে একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রস্তুত করছে নেপ ও ডিপিই।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। সেপ্টেম্বরে স্কুল খুললে, কয়টি ক্লাস হতে পারে তা হিসাব করে, ডিপিই ও নেপকে একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ্যক্রম তৈরি করতে বলেছি।’
আজ সোমবার ‘প্রাথমিক শিক্ষায় কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত একটি ওয়েবিনারে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিক সমাপনী ও অন্যান্য চূড়ান্ত পরীক্ষা কীভাবে নেওয়া যেতে পারে সে বিষয়েও ডিপিই ও নেপ কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যেন ক্লাস ভিত্তিক মৌলিক বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারে এবং পরবর্তী ক্লাসের বিষয়গুলির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলোর ওপর জোর দিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি তৈরি করতে ডিপিই ও নেপকে বলা হয়েছে।’
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে এবং পরে ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন যে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
করোনা সংকটে প্রাথমিকের প্রায় দেড় কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। মহামারির কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা দেরিতে হয়েছে। শিক্ষাবর্ষের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি সময় নষ্ট হওয়ায়, পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী ও অন্যান্য শ্রেণির চূড়ান্ত পরীক্ষা নিয়ে অভিভাবকদের উদ্বেগ রয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, ‘স্কুলগুলো আবার খোলার বিষয়ে আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।’
‘তবে, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বাতিলের কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। নিয়মিত সময়ে পরীক্ষা নিতে আমরা প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড তৈরির পরিকল্পনা করছি’, যোগ করেন তিনি।
বিকল্প হিসেবে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাবর্ষের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে বলেও জানান মন্ত্রী।
Comments