করোনা মোকাবিলায় এগিয়ে রয়েছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

'যেখানেই অন্যায়, সেখানেই দ্রুত ব্যবস্থা'
জাহিদ মালেক। ফাইল ফটো

হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ স্বাস্থ্যখাতের অনিয়ম তদন্তে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আজ সোমবার বলেছেন, ‘যেখানেই অন্যায় হবে, সেখানেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি এখন অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যখাতে কোনো অনিয়ম হয় কিনা তার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করে দেয়া হয়েছে। হাসপাতাল সেবা মনিটরিংয়ের জন্য নতুন কমিটি করা হয়েছে। কাজেই এখন যেখানেই অন্যায় হবে সেখানেই দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সংশ্লিষ্ট ৮টি বিভাগের সাথে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশের স্বাস্থ্যখাতের অধিক সমালোচনার কারণে ভিন্ন কোনো মহল সুবিধা নিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাস্থ্যখাত এখন আর সেই ভঙ্গুর অবস্থায় নেই। কিন্তু সারাক্ষণ এই খাতকে বেশি সমালোচিত করলে মানুষ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আস্থা হারাবে এবং চিকিৎসার জন্য সামান্য কিছু হলেই বিদেশমুখী হবে।’

‘এতে অন্যান্য দেশের স্বাস্থ্যখাত লাভবান হবে। আর আমাদের স্বাস্থ্যখাত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অথচ আমাদের দেশে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা এখন বিদ্যমান রয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।

বর্তমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিশ্বের প্রতিটি দেশ করোনা সামলাতে হিমশিম খেয়েছে। আমেরিকাসহ অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর অবস্থা আমরা জানি। আমাদের দেশ অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এবং আমরা অপেক্ষাকৃত কম স্বাস্থ্য সচেতন। এরপরও করোনায় আমাদের মৃত্যুহার বিশ্বের সবচেয়ে কম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম।’

পার্শ্ববর্তী ভারতের থেকেও করোনা মোকাবিলায় এগিয়ে রয়েছেন দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অনেক এগিয়ে রয়েছি। এই ভাইরাস কেবল আমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেনি, এটি বিশ্বের সব দেশেরই ক্ষতি করেছে।’

সমালোচনার পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতের অর্জনগুলো তুলে ধরার দাবি জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘তাহলে দেশের মানুষ চিকিৎসা নিতে বিদেশে গিয়ে অযথা তাদের অর্থ-সম্পদ বেশি নষ্ট করবে না। আর কোথাও কোনো অনিয়ম হলে আমরা অতি দ্রুত সেটির ব্যবস্থা নিতে কোনো রকম পিছুপা হবো না।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের সময়ে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায করুণ অবস্থায় ছিল। দেশে হাতে গোনা কিছু হাসপাতাল ছিল। সেই অবস্থা থেকে বর্তমানে দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলায় হাসপাতাল করা হয়েছে। ১৪ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে গেছে। দেশে এর মধ্যে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল ইনস্টিটিউট করা হয়েছে। নিরাপদ মাতৃত্ব, শহর-গ্রাম সর্বত্র টিকাদান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। দেশের স্বাস্থ্য সেবার মান এখন উন্নত বলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের মর্যাদাশীল পুরস্কার ভ্যাকসিন হিরো, সাউথ সাউথ, এমডিজি গোল অর্জনসহ বহু সংখ্যক পুরস্কার বয়ে এনে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করেছেন।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে দেশের প্রতিটি বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিটি জেলায় মেডিকেল কলেজ নির্মাণের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে।

পাশাপাশি ৮ বিভাগে ৮টি ক্যান্সার হাসপাতাল করা হচ্ছে। ১০ হাজার চিকিৎসক, ১৫ হাজার নার্সসহ পর্যাপ্ত জনবল প্রস্তুত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে সভায় সংশ্লিষ্ট ৮টি বিভাগের প্রধানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তি সম্পাদনকৃত বিভাগগুলো হচ্ছে- স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার, নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, নিমিউ এর টেকনিক্যাল ম্যানেজার, ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ওয়ার্কশপ ও এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড। 

Comments

The Daily Star  | English

Rising remittance provides a breather amid forex crisis

Remittance inflow has continued to rise for the past few months, providing a breather for a country facing multiple challenges, including external payment pressures amid dwindling foreign exchange reserves.

15h ago