মহামারিতে অপরাধ বেড়েছে

কর্মহীন ও আয় কমে যাওয়াকে দায়ী করছে পুলিশ
crime scene

দেশে করোনা মহামারি শুরুর প্রথম দিকে অপরাধের সংখ্যা দ্রুত অনেক কমে গেলেও চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা সম্প্রতি বেড়ে গেছে।

পুলিশের মতে, মহামারির কারণে চাকরিহীনতা ও নিম্ন আয়ের মানুষদের আয় কমে যাওয়া এর জন্যে দায়ী।

জীবন ধারনের জন্যে অনেকেই অপরাধকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন বলে মনে করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২৭ বছর বয়সী আপেল মাহমুদ রাস্তায় জামা-কাপড় ও মৌসুমি ফল বিক্রি করতেন। কিন্তু, দেশে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর তার আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যায়।

এর কয়েকদিন পর তিনি আর স্ত্রীকে অসামাজিক কাজে প্ররোচিত করতে শুরু করেন। যখন কেউ এই ফাঁদে পা দেয় তখন তারা তাকে বন্দি ‍ও নির্যাতন করে অর্থ আদায় করত।

আপেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি সাঈদ নাগর নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছেন। টাকা না দিয়ে পালানোর চেষ্টা করায় তাকে হত্যা করা হয়। ২৪ জুন তার মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হয়।

গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত ১২ জুলাই পুলিশ এই দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে। সে সময় তাদের এক সহযোগী আব্দুর রাকিবকেও (২২) গ্রেপ্তার করা হয়।’

অপর এক ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশ সিএনজি-চালিত অটোরিকশাচালক শফিকুল ইসলাম ও তার সহযোগী সিদ্দিককে রাজধানীর ৩০০-ফুট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশের ভাষ্য, ছিনতাইকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত থেকে রাতের বেলায় ফাঁকা রাস্তায় যাত্রীদের হেনস্তা করার অভিযোগে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গুলশান বিভাগ পুলিশের উপ-কমিশনার সুদীপ চক্রবর্তী ডেইলি স্টারকে জানান যে এই মহামারির সময়ে ছিনতাই, চুরি-ডাকাতির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার তথ্য তাদের কাছে রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে গুলশান বিভাগের প্রতিটি থানায় বিশেষ মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিমকে স্থানীয় চোর-ছিনতাইকারীদের ওপর নজর রাখতে বলা হয়েছে।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদরদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ডিএমপির অধীন ৫০টি থানায় গত মার্চে মামলার সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৫৫টি। এপ্রিলে তা কমে দাঁড়ায় ৩৫২টিতে।

মে মাসে মামলার সংখ্যা বেড়ে হয় ৫১৮টি। জুনে তা আরও বেড়ে হয় ১ হাজার ১৭৭টি।

উপ-কমিশনার মশিউর বলেন, ‘দেখা গেছে অধিকাংশ অপরাধীই কোনো না কোনোভাবে মাদকাসক্ত।’

ওয়ারী বিভাগ পুলিশের উপ-কমিশনার শাহ ইফতেখার আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা সতর্ক আছি। ইতোমধ্যে টহল ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে যাতে কোনো অপরাধ সংগঠিত হতে না পারে।’

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধতত্ত্ব ও পুলিশবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সঙ্কট প্রতারণা ও সম্পত্তি-সম্পর্কিত অপরাধের সংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে কারণ হতে পারে।’

‘এ ধরনের অপরাধ সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সজাগ থাকতে হবে। সরকারকেও জনগণের আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।,’ যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Please don't resign: An appeal to Prof Yunus

Every beat of my patriotic heart, every spark of my nation building energy, every iota of my common sense, every conclusion of my rational thinking compels me to most ardently, passionately and humbly appeal to Prof Yunus not to resign from the position of holding the helm of the nation at this crucial time.

6h ago