গাইবান্ধায় বাঙালি নদীর বাঁধ ভেঙ্গে ২০ গ্রাম প্লাবিত

‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে নামমাত্র কাজ করার অভিযোগ এলাকাবাসীর’
গাইবান্ধায় বাঙালি নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ছবিটি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বোচাদাহ এলাকা থেকে তোলা। ছবি: মোস্তফা সবুজ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বোচাদাহ এবং চর বালুয়া এলাকায় বাঙালি নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে মহিমাগঞ্জ, সালমারা, শিবপুর, রাখালবুরুজ এবং কোচাশহর ইউনিয়নেরপ্রায় ২০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এতে করে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

গত শনিবার সন্ধায় মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের বোচাদাহ এলাকায় বাঙালি নদীর পানিতে প্রথমে বাঁধের ৪০ মিটার ভেঙ্গে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। এরপর গত সোমবার বালুয়া গ্রামে সেই একই বাঁধের প্রায় ৩০ মিটার অংশ ভেঙ্গে যায় এবং আরো কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। 

এলাকাবাসীর অভিযোগ গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড গত তিন বছর ধরে এই বাঁধে শুধু লোকদেখানো কাজ করেছে। বাঁধের কাছেই নদীর বালু উত্তোলন করে জিও ব্যাগে ভরে বাঁধ মেরামতের কাজ করে তাই প্রতি বছরই বন্যার সময় এই বাঁধে ভাঙন দেখা দেয় এবং এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়।

আজ সরেজমিনে গিয়ে এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। ভাঙনের কিছু দূরেই নদীর ভেতর থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে তা জিও ব্যাগে ভরে বাঁধ মেরামত করতে দেখা যায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে|

মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন যুব লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাফিরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত তিন বছর ধরে এই একই এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে কিন্তু সমাধানের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড তেমন কোনো উদ্যোগ নেয় না। তারা গত তিন বছর ধরেই এই বাঁধে মেরামতের কাজ করে শুধু জিও ব্যাগ দিয়ে। তবে বাঁধটি যদি সিসি ব্লক দিয়ে মেরামত করা হতো তবে প্রতিবছর অনেক মানুষ এই বন্যার হাত থেকে স্থায়ীভাবে মুক্তি পেত।

বালুয়া গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, ‘বাঁধের অবস্থা ভালো নয়। আরও একাধিক জায়গায় ভাঙন দেখা দিতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এই বছরও জুন থেকে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করে কিন্তু যেই জায়গায় তারা মেরামত করছে ঠিক সেখানেই এই ভাঙন দেখা দিয়েছে। আকস্মিক এই বন্যায় অনেক মানুষের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই সাথে সরকার থেকে এখনো কোনো সাহায্য দেওয়া হয়নি।’

এই বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘৩৯ কিমি দৈর্ঘের এই বাঁধটির ভাঙন অঞ্চলের মাটি বেশ খারাপ হওয়ায় বছর বছর ভাঙ্গে। আমি এই এলাকায় বাঁধটিতে গত তিন বছর ধরেই কাজ করছি যাতে না ভাঙ্গে, কিন্তু মাটির কারণে ভাঙন ঠেকানো যায় না। এখানে সিসি ব্লকের কোনো বরাদ্দ নেই। সেই কারণে জিও ব্যাগে বালি ভরে বাঁধটি মেরামত করা হয়। এবার জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে কাজ শুরু করেছি।’

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago