নারায়ণগঞ্জে গরুর চামড়া ২৫০ টাকা, ছাগলের চামড়া কিনছেন না কেউ

বাজার নিয়ন্ত্রণে কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও নারায়ণগঞ্জে চামড়ার দামে ধস নেমেছে। বিক্রেতা ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ চামড়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে কোরবানির পশুর চামড়ার দামে এই বিপর্যয় হয়েছে।
Narayanganj_Lather_1Aug20.jpg
নারায়ণগঞ্জে এবারও কোরবানির পশুর চামড়ার দামে বিপর্যয় হয়েছে। ছবি: স্টার

বাজার নিয়ন্ত্রণে কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও নারায়ণগঞ্জে চামড়ার দামে ধস নেমেছে। বিক্রেতা ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ চামড়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে কোরবানির পশুর চামড়ার দামে এই বিপর্যয় হয়েছে।

আজ শনিবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত নগরীর চাষাঢ়া এলাকার চামড়ার অস্থায়ী বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ছোট গরুর চামড়া ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, মাঝারি আকারের প্রতিটি চামড়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা এবং বড় চামড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ছাগলের চামড়া কেউ কিনতে রাজি হচ্ছেন না।

শহরের উকিলপাড়া, গলাচিপা, আমলাপাড়া, টানবাজার, মিনাবাজার, উত্তর চাষাঢ়া এলাকার চিত্র ছিল একই রকম।

সদর উপজেলার সস্তাপুর এলাকার রাসেল হোসেন অপেক্ষা করছিলেন ভালো দাম পেলে চামড়া বিক্রি করবেন। প্রায় দুই লাখ টাকায় কেনা একটি গরুটির চামড়া বিক্রি করেন ২৫০ টাকায়।

গলাচিপা এলাকার বাসিন্দা হাফিজুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আগে কোরবানি দেওয়ার আগেই চামড়ার দাম বাসায় দিয়ে যেতো। যেন অন্য কাউকে চামড়া না দেই। এবার কেউ এসে জিজ্ঞাসাও করেনি।’

আমলাপাড়া বড় মাদরাসার শিক্ষক মো. তারেক হাসান বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৪৫৫ পিস গরুর চামড়া পেয়েছি। এখানে ব্যাপারীরা চামড়া প্রতি ১৫০ টাকা দাম দিতে চাইছে। ছাগলের চামড়া বিনামূল্যেও নিতে রাজি না। বিক্রি না করে এগুলো ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি, চামড়া প্রতি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দাম পাব।’

শহরের মাসদাইর এলাকার মৌসুমী ব্যবসায়ী মো. রনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এক লাখ থেকে দুই লাখ টাকা দামের আটটি গরুর চামড়া ২৫০ টাকা করে বিক্রি করতে হয়েছে। তিনটা ছাগলের চামড়া রেখে ২০ টাকা চা খাওয়ার জন্য দিয়েছে।’

একই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা পারভেজ মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এখানে ব্যাপারীরা সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম কমিয়ে দিয়েছেন। কেউ ২৫০ টাকার ওপরে দাম বলছেন না। সারাদিন পরিশ্রম করে চামড়া সংগ্রহ করেছি, প্রতিটি চামড়া আমরা তিন শ টাকা দরে কিনেছি।’

এ প্রসঙ্গে আড়তদার নাজিম উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত লবণযুক্ত গরুর কাঁচা চামড়ার প্রতি বর্গফুটের দাম ঢাকায় ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ঢাকার বাইরে ২৮ থেকে ৩২ টাকা। ছাগলের চামড়া ঢাকায় ১৩ থেকে ১৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ১০ থেকে ১২ টাকা। সে হিসাবে একটি ১৫ ফুটের চামড়ার দাম আসে ৪২০ থেকে ৪৮০ টাকা। এখানে আমরা যেগুলো কিনছি সেগুলো লবণ ছাড়া। প্রতিটি চামড়ায় পরিবহন খরচ, লবণ খরচ, শ্রমিকের মজুরিসহ আরও ১২০ থেকে ১৫০ টাকা খরচ হবে।’

আড়তদার নির্মল চন্দ্র দাস বলেন, ‘গরুর চামড়া যেটা খুব ভালো সেটা তিন শ টাকা দিয়ে কিনছি। অধিকাংশ চামড়া নষ্ট করে ফেলেছে। যার জন্য কম দাম বলা হচ্ছে। এগুলো ঢাকায় নিয়ে গেলে আমরাও ভালো দাম পাব না। ঢাকায় ছাগলের চামড়া নেয় না, তাই আমরাও কিনছি না। কেউ কেউ গরুর চামড়ার সঙ্গে এমনিতেই ছাগলের চামড়া দিয়ে

যাচ্ছে। তখন ১০ থেকে ২০ টাকা দেওয়া হচ্ছে।’

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago