ঈদের আনন্দ নয়, বাঁচার সংগ্রামে হাওরপাড়ের মানুষ

তিন দফা বন্যায় সুনামগঞ্জ জেলার হাওরপাড়ের অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙেছে, আশ্রয় হারিয়েছেন অনেকেই। আয় রোজগার না থাকায়, অনেকের ঘরেই নেই খাবার। এমন বাস্তবতায় এ এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষদের কাছে ঈদ উদযাপনের চেয়ে বাঁচার লড়াই এখন গুরুত্বপূর্ণ।
তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের আব্দুল রেজা গতকাল শনিবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কাজকর্ম নেই। ধারদেনা করে পরিবার চালাচ্ছি। বন্যায় ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আমাদের অনেকেই এখনও দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের রামজীবনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। এমন সংকটে ঈদ উদযাপন আমাদের কাছে বিলাসিতা মাত্র। ঈদ উদযাপনের চেয়ে বাঁচার লড়াই এখন গুরুত্বপূর্ণ।’
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের চন্দ্রপুর গ্রামের জিন্নাত আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তিন দফা বন্যায়
আমি একেবারে বিপর্যস্ত। পরিবারে সাত জন সদস্য। বন্যায় আমার ঘর ভেঙে নড়বড়ে হয়ে গেছে। মেরামত কিভাবে করবো, সেই চিন্তাই করছি। ঈদ উদযাপন উপলব্ধিতেই আসেনি।’
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা শহরের ব্যবসায়ী আক্তার আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে ধার করে দোকানে পণ্য তুলেছি। কিন্তু, আশানুরূপ বেচাকেনা হয়নি। ধারের টাকা পরিশোধ করতেই হিমশিম খাচ্ছি।’
ব্যবসার এমন বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে টানা তিন দফা বন্যা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি ডা. শাকিল মুরাদ আফজাল ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এ বছর বন্যার স্থায়িত্ব বেশি হওয়ায়, আমাদের উপজেলার মানুষ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ২০০৪ সালের পর বন্যায় এতো ক্ষয়ক্ষতি বিগত কোনও বছরে হয়নি।’
বিপদগ্রস্ত মানুষদের ত্রাণের পাশাপাশি বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এ বিষয়ে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া ডেইলি স্টারকে, ‘বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনের কোনও বরাদ্দ উপজেলায় এখনও আসেনি। বরাদ্দ এলে ক্ষতিগ্রস্তদের তা বিতরণ করা হবে।’
Comments