দ্বিতীয় দফা বৈঠক শেষেও খুলছে না দলই চা বাগান

মৌলভীবাজার
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

ভারতের সীমান্তবর্তী দলই চা বাগান বর্তমানে বন্ধ। ফলে, করোনা মহামারিতে অনাহারে ও অর্ধাহারে দিন পার করছেন এখানকার শ্রমিক পরিবার। গত নয় দিন ধরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার এই চা বাগানের শ্রমিকদের কাজ নেই, মজুরি নেই, খাবার নেই। অন্য কোথাও কাজ পাচ্ছেন না তারা। এ অবস্থায় আজ দ্বিতীয দফায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতিত্বেও মিটিং হলেও কোনো সমাধান হয়নি।

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাগানে মোট এক হাজার শ্রমিক আছে। তাদের মধ্যে প্রায় পাঁচশ জন স্থায়ী শ্রমিক। প্রত্যেক শ্রমিক দৈনিক ১০২ টাকা করে মজুরি পান।

চা বাগান পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক সেতু রায় বলেন, ‘শ্রমিকরা এমনিতেই সামান্য মজুরি পান। এরপর চা বাগান বন্ধ। ঘরে চাল-ডাল নেই। উপোষ করে দিন কাটাতে হচ্ছে। বাগান কর্তৃপক্ষও আমাদের কথা শুনছে না।’

বাগানে নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রতিকারের দাবি জানিয়ে চা শ্রমিক সন্তান প্রদীপ পাশি বলেন, ‘এই দুর্যোগের সময় আমরাতো কারো দয়া চাইছি না। আমরা চা বাগানে কাজ করতে চাই।’

চা শ্রমিক ফাতেমা বেগম বলেন, ‘একদিকে কাজ বঞ্চিত, অন্যদিকে করোনার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন এই বাগানের শ্রমিকরা। অবিলম্বে এই বাগানের সংকট নিরসন করা না গেলে শত শত চা শ্রমিকের জীবন বাঁচানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।’

অতিদ্রুত যদি সমাধান না হয় তাহলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও জানান তিনি।

চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি গৌরাঙ্গ নায়েক বলেন, ‘বাগানে দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যা। অনেক শ্রমিক জরাজীর্ণ কাঁচাঘরে বাস করছেন। এসব ঘর মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। যে অজুহাতে গত ২৮ জুলাই চা বাগান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, তা শ্রম আইনের পরিপন্থী।’

দলই চা বাগানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক জাকারিয়া হাবিবকে ফোন দিয়ে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

মাধবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু বলেন, ‘গাছ কাটার অভিযোগ তুলে গত ২৩ জুন শ্রমিকসন্তান হীরা ভরকে (২২) ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামসহ কয়েকজন পাহারাদার মিলে বেধড়ক পিটিয়েছিলেন। একই সঙ্গে ঘটনার দিন বিকেলে নির্যাতনের শিকার হীরা ভরের বাবা চা শ্রমিক রাধেশ্যামের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়েছিলেন ২৯ জুনের মধ্যে হীরাকে সপরিবারে চা–বাগান ত্যাগ করতে হবে। এ ঘটনায় শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।’

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, ‘শ্রম কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, বাংলাদেশী চা সংসদ (চা বাগান মালিকদের সংগঠন) প্রতিনিধিসহ সকল পক্ষের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে এ বৈঠক করা হয়। দ্বিতীয় দিনের মতো মিটিংয়ে ব্যবস্থাপকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে সমস্যার সমাধান করা যায়নি। তাই আগামী সপ্তাহে পরবর্তী বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপাতত পরবর্তী সিদ্ধান্ত ছাড়া দলই চা বাগান বন্ধ থাকছে।’

Comments

The Daily Star  | English
Climate debt in Bangladesh from 2009 to 2022

Bangladesh’s climate debt keeps climbing

As global leaders gather in Baku, Azerbaijan to discuss finance at the 29th climate conference, the most vulnerable countries like Bangladesh are demanding new and additional climate finance that does not exacerbate climate debt.

14h ago