লঘু চাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে পটুয়াখালীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
সমুদ্রের লঘু চাপ এবং মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে স্ফীত জোয়ারে পটুয়াখালীর নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার নিম্নাঞ্চল ও ফসলের মাঠ প্লাবিত হয়েছে। এমনকি জেলা শহরের অনেক জায়গা হাঁটু পানিতে ডুবে গেছে।
জেলার রাঙাবালী, কলাপাড়া, বাউফল, মির্জাগঞ্জ উপজেলার কমপক্ষে ২৫টি গ্রাম দুই দিন ধরে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পটুয়াখালী পৌরসভার অনেক এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জোয়ারের পানিতে সরকারি মহিলা কলেজ রোড, পুরাতন এসডিও রোড, পোস্ট অফিস রোড, নতুন বাজার এলাকা, সড়ক ও জনপথ রোড, নবাব পাড়া, সেন্টার পাড়া, পুরাণ বাজার এলাকা এবং অন্যান্য এলাকা জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে। ফলে, মানুষের চলাচল, যানবাহন, রিকশা, অটোরিকশা ও গাড়ি চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পৌরসভার আগের মেয়র শহর সুরক্ষা বাঁধটি যথাযথভাবে নির্মাণ না করায় সমস্যা থেকে গেছে। এই সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, বৈরী আবহাওয়া ও সাগরে নিম্নচাপের কারণে জেলার অনেক স্থানের নিচু অঞ্চল জলোচ্ছ্বসের পানিতে ডুবে গেছে। গত মঙ্গলবার থেকে জেলায় মৌসুমি বৃষ্টিপাত হওয়ায় বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে।’
পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, প্রবল বর্ষার কারণে পটুয়াখালীসহ উপকূলীয় এলাকায় বিরূপ আবহাওয়া বিরাজ করছে। সমুদ্র উত্তাল আছে। পায়রা সমুদ্রবন্দরতে গত দুই দিন ধরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেওয় হচ্ছে।
সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মাহবুবা খুশি বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ১৪০ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।’
আলিপুর মৎস্য অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনসার মোল্লা বলেন, ‘সমুদ্রের স্ফীত জোয়ারের পানিতে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সাগর উত্তাল আছে। মাছধরা অধিকাংশ ট্রলার আলিপুর-মহিপুর মৎস্য বন্দরে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পটুয়াখালী অফিসের উপপরিচালক হৃদয়েশ্বর দত্ত বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। নিচু এলাকার শস্য খেত জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে। জমি প্লাবিত হলেও পানি আবার ভাটায় নেমে যাচ্ছে। এতে আমন ফসলের খুব বেশি ক্ষতি হবে না। তবে, যেসব জমিতে সবজি বীজ বপন করা হয়েছে সেখানে ক্ষতির ঝুঁকি আছে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পটুয়াখালী অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় পায়রা, আগুনমুখা ও আন্ধরমণিকসহ জেলার অনেক নদীর পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হয়।’
Comments