পটুয়াখালীতে সেতু ভেঙে খালে, স্থানীয়দের দুর্ভোগ

পটুয়াখালীতে ১১৬ মিটার দীর্ঘ লোহার সেতু ভেঙে খালে। ছবি: স্টার

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা খালের ওপর নির্মিত ১১৬ মিটার দীর্ঘ লোহার সেতুটি ভেঙে পড়েছে। গত ৫ আগস্ট রাত ১০টার দিকে বিকট শব্দে সেতুটি ভেঙে খালে ডুবে যায়। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় অন্তত পাঁচ গ্রামের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন কৃষকসহ স্থানীয় অধিবাসীরা।

স্থানীয়রা জানায়, কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৩-১৪ অর্থবছরে পাখিমারা খালের ওপর ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ১১৬ মিটার দীর্ঘ এ সেতুটি নির্মাণ করে। ওই এলাকার কয়েকটি পুরনো লোহার সেতুর মালামাল দিয়েই এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ফলে শুরু থেকেই মানুষের মধ্যে সেতুটি ধসের ভয় ও আতঙ্ক ছিল। কেননা সেতুটি নির্মাণের সময় খালের মধ্যে ঠিকভাবে লোহার খুঁটিগুলো পোঁতা হয়নি। খুঁটির সঙ্গে আড়াআড়ি লোহার অ্যাঙ্গেলও লাগানো হয়নি। সে কারণে মানুষ চলাচল করলেই সেতুটি নড়বড় করত। অবশেষে ৫ আগস্ট রাতে হঠাৎ সেতুটির প্রায় ৯০ ভাগ খালে পড়ে তলিয়ে যায়।

দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পাওয়া স্থানীয় কৃষক রুহুল আমিন মৃধা জানান, পাখিমারা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার সেতুটির মাঝ বরাবর আসার পর হঠাৎ বিকট শব্দে এটি ভেঙে পড়তে শুরু করে। তিনি ভয়ে পেছনের দিকে দৌড় দিলেও সেতু ভেঙে খালে পড়ে যান। খালে প্রচণ্ড স্রোত ও কচুরিপানা থাকায় প্রায় ১০ মিনিট অন্ধকারে পানিতে হাবুডুবু খাওয়ার পর তিনি পাড়ে উঠতে সক্ষম হন।

স্থানীয়রা জানান, এ সেতু পার হয়ে কুমিরমারা, মজিদপুর, এলেমপুর, বাইনতলা, ফরিদগঞ্জ গ্রামের মানুষ কলাপাড়া উপজেলা শহর ও পটুয়াখালী জেলা শহরেও যাতায়াত করতেন। এসব গ্রাম কৃষিতে সমৃদ্ধ হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাকে করে গ্রামগুলো থেকে সবজি কিনে নেয়। সেতুটি ভেঙে পড়ায় এখন সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন সবজি চাষিরা। এ ছাড়া, সামনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে শিক্ষার্থীদের ঝামেলায় পড়তে হবে।

নীলগঞ্জ কলেজের শিক্ষার্থী মো. বায়েজিদ, ইমরান ও তাসলিমা জানায়, কিছুদিনের মধ্যেই তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারে। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় তখন খেয়া পার হয়ে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে তাদেরকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হবে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির মাহমুদ জানান, সেতুটি ভেঙে পড়ার বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। বর্তমানে ডিঙি নৌকায় করে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সেতু ভেঙে পড়ার খবর পেয়েছি। এখন বিকল্প উপায়ে চলাচল অব্যাহত রাখতে ইউপি চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে। সেতুটি সংস্কারের বিষয়ে এলজিইডিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

কলাপাড়া এলজিইডির প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পাখিমারা খালে আগে ছিল কাঠের পুল। উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্তে ছয় বছর আগে একটি পুরনো লোহার সেতুর মালামাল দিয়ে ওই খালে সেতুটি নির্মাণ করা হয়।’

‘তবে, কলাপাড়া উপজেলায় ভেঙে পড়া ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই তালিকা অনুমোদন হলেই সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে’, যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

No clear roadmap for investment

The budget for FY26 has drawn strong criticism from business leaders who say it lacks a clear roadmap for improving the investment climate, bolstering industrial competitiveness, and implementing overdue reforms in the banking sector.

15h ago