ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত সহচর, মুক্তিসংগ্রামের সহযোদ্ধা: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মহীয়সী নারী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত সহচর এবং বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের সহযোদ্ধা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জয়তু বঙ্গমাতা শীর্ষক স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মহীয়সী নারী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত সহচর এবং বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের সহযোদ্ধা।

‘তিনি অসাধারণ বুদ্ধি, সাহস, মনোবল, সর্বংসহা ও দূরদর্শিতার অধিকারী ছিলেন এবং আমৃত্যু দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন’ বলেন তিনি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তিনি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। বিশেষ করে আত্মত্যাগী, লাঞ্ছিত মা-বোনদের সহযোগিতা করা, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করাসহ ব্যক্তিগতভাবে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সান্ত্বনা দেন এবং সামাজিকভাবে তাদের প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ নেন।

প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ দেওয়া এক বাণীতে মহীয়সী নারীর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান ।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে সর্বক্ষণের সহযোগী ও অনুপ্রেরণাদাত্রী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকীতে ‘বঙ্গমাতা ত্যাগ ও সুন্দরের সাহসী প্রতীক’ প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে। যেখানে মহীয়সী নারী বঙ্গমাতার কর্মময় জীবনের প্রকৃত অর্থ প্রতিফলিত হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে বঙ্গবন্ধুর একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত সহচর এবং বাঙালি মুক্তিসংগ্রামের সহযোদ্ধা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি অসাধারণ বুদ্ধি, সাহস, মনোবল, সর্বংসহা ও দূরদর্শিতার অধিকারী ছিলেন। তিনি আমৃত্যু দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের স্বাধীনতার জন্য তিনি জাতির পিতার সঙ্গে একই স্বপ্ন দেখতেন। এ দেশের মানুষ সুন্দর জীবন পাক, ভালভাবে বাঁচুক এই প্রত্যাশা নিয়েই তিনি বাঙালির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সবসময় ছিলেন সজাগ এবং দূরদর্শী। তাইতো একজন সাধারণ বাঙালি নারীর মতো স্বামী-সংসার, আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বাংলাদেশের মহান সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার পর দেশ পুনর্গঠনে তিনি অনন্য ভূমিকা রেখে গেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রাজনৈতিক সাফল্যেও বঙ্গমাতা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। জাতির পিতা রাজনৈতিক কারণে প্রায়শই কারাগারে বন্দী থাকতেন। এই দুঃসহ সময়ে তিনি হিমালয়ের মতো অবিচল থেকে একদিকে স্বামীর কারা মুক্তিসহ আওয়ামী লীগ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। অন্যদিকে সংসার, সন্তানদের লালন-পালন, শিক্ষাদান, বঙ্গবন্ধুকে প্রেরণা, শক্তি ও সাহস যুগিয়ে স্বাধীনতা এবং মুক্তির সংগ্রামকে সঠিক লক্ষ্যে নিয়ে যেতে অনন্য ভূমিকা পালন করেছেন।

৬-দফা ও ১১-দফার আন্দোলনে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গৃহবন্দী থেকে এবং পাকিস্তানে কারাবন্দী স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা সত্ত্বেও তিনি সীমাহীন ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন।

তিনি বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব রাষ্ট্রীয় প্রটোকলসহ অন্যান্য দায়িত্ব সমভাবে ও অত্যন্ত সুচারুভাবে সম্পাদন করতেন। দেশ ও জাতির জন্য তার অপরিসীম ত্যাগ, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতার কারণে জাতি তাকে যথার্থই ‘বঙ্গমাতা’ উপাধিতে ভূষিত করেছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতার সঙ্গে তিনিও সপরিবারে ঘাতকদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন, যা জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।

বঙ্গমাতার যে আদর্শ ও দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তা যুগে যুগে বাঙালি নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে উল্লেখ করে বাণীতে প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জীবনী চর্চার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে।

বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন, বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক অজানা অধ্যায় সম্পর্কে জানতে পারবে প্রত্যাশা করে তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

8h ago