‘নতুন বাস্তবতার’ সামনে দাঁড়াতে দ্বিধা বিসিবির?

Mushfiqur Rahim
ব্যক্তিগত অনুশীলনের শুরু থেকেই মাঠে আছেন মুশফিকুর রহিম। ছবি: বিসিবি

সামনে বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ। ক্যাম্প তাই শুরু করতেই হতো বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে। সেই ক্যাম্প শুরুর প্রক্রিয়া করতে গিয়ে অনুমেয় এক কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে বাফুফে। পরীক্ষা করা ২৪ ফুটবলারের ১৮ জনের শরীরেই শনাক্ত হয়েছে করোনাভাইরাস। বিসিবিকে সামনের পথে হাঁটতে আগাম এক শিক্ষণীয় বার্তা দিচ্ছে এই ঘটনা। তবে ‘নতুন বাস্তবতা’ মেনে সম্ভাব্য কঠিন পরিস্থিতির সামনে দাঁড়াতে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানটি যেন এখনো দ্বিধাগ্রস্ত।

শনিবার থেকে আগের মতোই ব্যক্তিগত অনুশীলন শুরু করেছেন ক্রিকেটাররা। ঈদের আগে দেশের চার ভেন্যুতে সীমিত অনুশীলন করা ১৬ জনের সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছেন আরও ১২ জন।

অনুশীলনের জন্য তীব্র তাড়নাবোধ করছেন কিন্তু সাহসটা ভেতর থেকে মিলছে না। সেই সাহস পাওয়া যাচ্ছে না অভিভাবক সংস্থা বিসিবির কাছ থেকেও। মাঠে নামতে মরিয়া মুশফিকুর রহিমের মতো কয়েকজনকে দেখে উদ্যোগী হয়েছেন আরও কয়েকজন।

তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব ব্যক্তি অনুশীলনে সায় দিলেও নিরুৎসাহিত করার কথাও জানিয়ে দিচ্ছে বিসিবি। প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরীর কথায় স্পষ্ট মিলছিল সেই সুর, ফুটবলারের করোনা আক্রান্তের খবরের পর সেই সুর যেন আরেকটু চড়া, ‘শুরু থেকেই আমরা ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত অনুশীলন নিরুৎসাহিত করছি। ফুটবলাররা যে পরিস্থিতিতে পড়েছে, আমাদের জন্যও তা বড় চ্যালেঞ্জ হবে। যে কারণে আমরা দলীয় অনুশীলন শুরু করছি না। এটা এখন ভীতিকর, পরিস্থিতির কথা মাথায় রাখতে হবে। তাড়াহুড়োর কোন কারণ দেখছি না।’

বর্তমানে দেশের চার ভেন্যুতে ২৮ ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত অনুশীলন চালানোর সূচি ঠিক করা আছে। বিসিবি স্বাস্থবিধির কথা বললেও মাঠে নামানোর আগে এদের কারোরই করোনা পরীক্ষা করায়নি। শুক্রবার দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপে নিজামউদ্দিন জানান দলীয় অনুশীলন শুরু করলেই তবে পরীক্ষা করাবেন তারা, ‘যারা অনুশীলন করতে চায় তাদের আমরা সুযোগ সুবিধা দিচ্ছি। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানছি। মাঠকর্মীদের পরীক্ষা করানো হয়েছে। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ স্থগিত হয়ে যাওয়ায় আমাদের সামনে কোন খেলার সূচি নেই। এই কারণে দলীয় অনুশীলন শুরু করছি না। দলীয় অনুশীলন ক্যাম্প শুরু আগে আমরা পরীক্ষা করাবো।’

ক্যাম্প শুরুর আগে বাংলাদেশের ফুটবলারও যার যার বাড়িতে ছিলেন। ঘরে বসেই ফিটনেস নিয়ে খাটছিলেন। ক্যাম্প শুরুর জন্য সবার পরীক্ষা করতে গিয়েই কঠিন এক বাস্তবতা দেখল বাফুফে। যে ১৮ জন ফুটবলারের করোনা শনাক্ত হয়েছে তাদের কারো শরীরেই তেমন কোন উপসর্গ নেই। অর্থাৎ করোনা নিয়ে স্বাভাবিক চলাফেরা করছিলেন তারা।  

অক্টোবরের ৮ তারিখ সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাছাইপর্বে ফিরতি লেগের ম্যাচ ফুটবল দলের। বর্তমানে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়লেও ওই ম্যাচের আগে আক্রান্ত এসব ফুটবলারের সেরে উঠার কথা। তিতা হজম করে তাই ফুরফুরে হওয়ার সুযোগ আছে বাফুফের সামনে।

একই পরিস্থিতিতে পড়েছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও। নির্দিষ্ট দিনের আইসোলেশন মানতে ইংল্যান্ড সফর উপলক্ষে আগেভাগে পরীক্ষা করানো হয় তাদের ক্রিকেটারদের। বেশ কয়েকজন কোভিড-১৯ পজিটিভও হন। হাতে সময় থাকায় পরিস্থিতি সামলে এখন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলছে পাকিস্তান।

অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সফরের আলাপ চলছে। সেই সিরিজটি হলে আইসোলেশন নীতি মেনে খেলায় ফিরতে বেশ আগেভাগে প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে বোর্ডকে।  ক্যাম্প শুরু করতে গিয়ে ফুটবলারদের মতো ক্রিকেটারদের শনাক্তের হারও যে এমন থাকবে না, তা নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই।

একটা সময় গিয়ে হলেও দলীয় অনুশীলন শুরু করতে হবে বিসিবিকে। ক্যাম্প শুরুর আগে করাতে হবে করোনাপরীক্ষা। যত দেরিতে সেই প্রক্রিয়া শুরু করা হবে, বাংলাদেশের খেলায় ফেরাও সেই অনুযায়ী পেছানোর শঙ্কা থেকে যায়।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus inaugurates month-long programme on July uprising

The chief adviser said the annual observance aimed to prevent the reemergence of authoritarian rule in the country

1h ago