অসচ্ছল শিল্পীদের ভাতা বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে প্রতিবাদ সমাবেশ

সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে অস্বচ্ছল সংস্কৃতিসেবী ও প্রতিষ্ঠানের জন্য বাৎসরিক বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পী ও সংগঠকবৃন্দ।
সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অস্বচ্ছল সংস্কৃতিসেবী ও প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দের টাকা লুটপাটের প্রতিবাদে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর আয়োজনে ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তাসহ জেলার পীরগঞ্জ ও রানীশংকৈল উপজেলা সদরে একযোগে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সংস্কৃতিসেবীরা বরাদ্দের তালিকা সংশোধন করে প্রকৃত অসচ্ছল শিল্পী ও সংগঠনের নামে এই ভাতা বরাদ্দের দাবি জানান।
এতে জেলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা অংশ নেন।
ঠাকুরগাঁও শহরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে উদীচী জেলা সংসদের সভাপতি সেতারা বেগম, শাহী বাউল গোষ্ঠীর হানিস মিয়া, নিক্কণ সংগীত বিদ্যালয়ের রাজন ঠাকুর, নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ডমিনিগ তিগ্যা, উদীচী জেলা সংসদের সহসভাপতি অমল কুমার টিক্কু, আহমেদ রাজু, সদস্য সুচরিতা সেনগুপ্ত প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, ঠাকুরগাঁওয়ের সংগীত শিল্পী লোকমান হাকিম খাঁ ও ছবি সেনগুপ্ত সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া ভাতা পেতেন। বছর পাঁচেক আগে লোকমান হাকিম ও তিন বছর আগে ছবি সেনগুপ্ত মারা যান। মারা যাওয়ার পরও তাদের নামে অস্বচ্ছল সংস্কৃতিসেবীর ভাতা উত্তোলন করা হয়েছে।
মৃত ব্যক্তির নামে এই ভাতা কারা উত্তোলন করছে তা খতিয়ে দেখার দাবি জানান বক্তারা।
বাউল হানিস মিয়া বলেন, ‘আমরা গরিব বাউল গান গেয়ে কায়ক্লেশে সংসার চালালেও কখনোই সরকারি কোনো ভাতা বা অনুদান পাইনি। করোনাকালে শিল্পীদের সরকারি যে অনুদান দেওয়া হয়েছে, সেটাও ভাগ্যে জোটেনি। এই অভাগাদের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ চলে গেছে সচ্ছল ও অশিল্পীদের পকেটে।’
অমল কুমার টিক্কু বলেন, ‘তালিকায় সচ্ছল ও সংস্কৃতিসেবী নয় এমন ব্যক্তিও ভাতা নিচ্ছেন, কিন্তু প্রকৃত অসচ্ছল শিল্পীরা এই ভাতা থেকে বরাবর বঞ্চিত হচ্ছেন। বরাদ্দের তালিকা সংশোধন করে প্রকৃত অসচ্ছল শিল্পী ও সংগঠনের নামে বরাদ্দের দাবি জানাই।’
পরে সেতারা বেগম অসচ্ছল সংস্কৃতিসেবী ও সংগঠনের সরকারি ভাতা-অনুদান বাড়াতে হবে, তালিকা থেকে সচ্ছল ও ভুয়া শিল্পীদের নাম বাদ দিতে হবে, মৃত ব্যক্তিদের নামে বরাদ্দের টাকা উত্তোলনকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে, ভাতা অসচ্ছল সংস্কৃতিসেবীর নিজস্ব ব্যাংক হিসেবে জমা দিতে হবে, সংস্কৃতিসেবী ডাটাবেজ তৈরি করে তাদের মধ্য থেকে অনুদান দেওয়ার দাবিসহ শিল্পীদের ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন তারা।
Comments