বাদ পড়ার কথা কখনই ভাবেননি ম্যাচ সেরা নেইমার
সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে অন্তত তিন-চার গোলে জেতার কথা ছিল তাদের। কিন্তু দারুণ খেলেও গোলমুখে গিয়ে অবিশ্বাস্য সব গোলমালে নেইমার ডুবাতে দলকে। তবে সেই নেইমারই শেষ মুহূর্তে সুযোগ তৈরি করে দলকে নিয়ে গেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে। ম্যাচ শেষে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার বললেন, তাদের দল প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) ৯০ মিনিট পর্যন্ত পিছিয়ে থাকলেও হারের কথা ভাবেনি একদমই।
বুধবার রাতে চরম নাটকীয়তায় ভরা ম্যাচে শেষ মুহূর্তের দুই গোলে বাজিমাত করে পিএসজি। আতালান্তাকে ২-১ গোলে হারিয়ে ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো উঠে যায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে।
গোলের একগাদা সুযোগ হাতছাড়া করলেও ম্যাচসেরা হয়েছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার। কেবল এই তথ্যই বোঝাচ্ছে ম্যাচে কতটা প্রভাব ছিল তার। ডি বক্সের দুই দিক থেকেই বারবার বল নিয়ে তীব্র গতিতে ছুটে কাঁপন ধরিয়েছেন প্রতিপক্ষ ডিফেন্সে।
পুরো ম্যাচে ১৬টি সফল ড্রিবলিং করেছেন। কিন্তু কোনভাবেই জালের নিশানা পাচ্ছিলেন না তিনি। কখনো ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে গোলরক্ষককে একা পেয়েও খেই হারিয়েছেন বিস্ময়করভাবে। কখনো সোজা জাল পেয়েও মারছিলেন আড়াআড়ি শট।
ম্যাচে প্রভাব রেখেও গোলমুখ না খুলতে পারায় ৯০ মিনিট পর্যন্ত পিছিয়ে ছিল পিএসজি। ম্যাচ শেষে আরএমসি স্পোর্টসকে নেইমার জানান তখনো নাকি বিদায় নেওয়ার ভাবনা ভর করেনি তাদের, ‘আমি কখনই ভাবিনি যে আমরা বাদ পড়তে যাচ্ছি। শুরু থেকে একদম শেষ পর্যন্ত, ওয়ার্ম আপ থেকেই চিন্তা ছিল একটাই আমরা সেফি-ফাইনালে যাচ্ছি।’
৯০ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর নেইমারের অ্যাসিস্ট থেকেই টোকা মেরে বল জালে ঢুকান তার স্বদেশী মার্কুইনহোস। যোগ করা সময়েও ঝলক দেখান নেইমার। তার রক্ষণচেরা দারুণ এক পাস যায় কিলিয়ান এমবাপের কাছে। এমবাপের অ্যাসিস্ট থেকে বল নিয়ে সহজেই জালে জড়ান এরিক ম্যাক্সিম চুপো-মোটিং।
১৯৯৪-৯৫ পর ফরাসী ক্লাবকে প্রথমবার সেমিতেই কেবল দেখছেন না নেইমার, তার মাথায় নাকি ফাইনালের চিন্তাই গেঁথে বসে আছে, ‘ফাইনালে উঠার চিন্তা আমার মাথা থেকে কেউ সরাতে পারেনি। আমরা দারুণ এক দল, এক পরিবার। আমরা জানতাম এরকম মনবল নিয়ে আমরা হারছি না। আমরা জানতাম বল আসবে।’
পেছনের সারির দল হয়েও ইতালিয়ান ক্লাব আতলান্তা প্রায় পৌঁছে গিয়েছিল ইউরোপিয়ান সেরা প্রতিযোগিতার সেমিতে। পুরো ম্যাচ জুড়ে দারুণ খেলা প্রতিপক্ষকে সম্মান দিলেন নেইমারও, ‘আতালান্তা দুর্দান্ত দল, দারুণ খেলেছে তারা। এই প্রতিযোগিতার চমক তারা। তারা খুব আগ্রাসী, আমাদের উপর চড়ায় হয়ে খেলেছে।’
সেমিফাইনালে অ্যাতলাটিকো মাদ্রিদ বা আরবি লিপজিগের যেকোনো একটিকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাবে পিএসজি। আরেকটি কঠিন লড়াইয়ের আগে আপাতত দিন দুয়েক সুখনিদ্রার সুযোগ নেইমারদের সামনে, ‘এখন আমাদের বিশ্রাম দরকার। মানসিকভাবে অনেক দখল দেখে। আরেকটি খুব কঠিন ম্যাচ সামনে।’
Comments