নিউজিল্যান্ডে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, সতর্কতামূলক ব্যবস্থার সময় বাড়লো

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডর্ন। ছবি: রয়টার্স

নিউজিল্যান্ডে করোনা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা লেভেল ২ এবং অকল্যান্ডে লেভেল ৩ এর সময় বাড়িয়েছে দেশটি। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডর্ন ও নিউজিল্যান্ড স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক ড. অ্যাশলে ব্লুমফিল্ড গতকাল শুক্রবার রাজধানী ওয়েলিংটনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেন যে দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণ যাতে আর ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য এ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা আগামী ২৬ আগস্ট পর্যন্ত থাকবে।

এর আগে গত ১১ আগস্ট সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ১৪ আগস্ট পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

১০২ দিন করোনামুক্ত থাকার পর গত ১১ আগস্ট নিউজিল্যান্ডের বৃহত্তম শহর অকল্যান্ডের একটি পরিবারের চার জনের দেহে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। এর দুদিন পর ১৪ জনের এবং গতকাল শুক্রবার আরও ১৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। নতুন আক্রান্তদের নিয়ে নিউজিল্যান্ডে বর্তমানে ‘অ্যাকটিভ’ করোনারোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৯ জনে। এমন পরিস্থিতিতে করোনা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিল দেশটি।

করোনা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা অনুযায়ী পুরো নিউজিল্যান্ড এখন ‌‌‘অ্যালার্ট লেভেল ২’ স্তরে রয়েছে। অ্যালার্ট লেভেল ২ বা দ্বিতীয় মাত্রার বিধিনিষেধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করা এবং ১০০ জনের বেশি লোকের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা।

তবে অকল্যান্ডে বহাল থাকা লেভেল ৩ কিংবা তৃতীয় মাত্রার বিধিনিষেধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরে থাকতে হবে এবং বাড়ি থেকে অফিস করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাজার কিংবা পার্কে যাওয়া যাবে না। স্কুল, রেস্তোরাঁ ও বার বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে এবং ১০ জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। লেভেল ৩ কিংবা তৃতীয় মাত্রার বিধিনিষেধকে অনেকে অবশ্য আংশিক লকডাউন বলেও অভিহিত করে থাকেন। আর সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো অকল্যান্ডসহ পুরো দেশের জন্যই প্রযোজ্য।

এদিকে, নিউজিল্যান্ডে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সাধারণ নির্বাচন। সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। নতুন করে কোভিড সংক্রমণ দেখা দেয়ায় নিউজিল্যান্ডে নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন দেশটির বিরোধী দলীয় নেতা জুডিথ কলিন্স। তবে প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডর্ন বলেছেন, নির্বাচনের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে কোভিডে নতুন যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে তার পূর্ণাঙ্গ প্রভাব বিবেচনা করে দেখতে হবে।

বিশ্বের অধিকাংশ দেশ যখন করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত তখন এই ভাইরাস মোকাবিলায় নজিরবিহীন সাফল্য পেয়েছিল ওশেনিয়া মহাদেশের অন্যতম দ্বীপরাষ্ট্র  নিউজিল্যান্ড। সারা বিশ্বে যখন করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে, তখন টানা ১০২ দিন নিউজিল্যান্ডে করোনা সংক্রমণ ছিল শূন্যের ঘরে। তবে সেই স্বস্তি আর টিকলো না। ১০২ দিন করোনামুক্ত থাকার পর ফের নিউজিল্যান্ডে থাবা বসাল করোনাভাইরাস।

৫০ লাখ জনসংখ্যার দেশ নিউজিল্যান্ডে গতকাল পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৬০২ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২২ জন। অপরদিকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ হাজার ৫৩১ জন। অর্থাৎ আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

(লেখক: মাহবুবুর রহমান, পিএইচডি গবেষক, মেসি ইউনিভার্সিটি, নিউজিল্যান্ড)

Comments

The Daily Star  | English

Israel will take all of Gaza: PM

Strikes kill 52 more; WHO chief says 2 million 'starving'

6h ago