ইনকিউবেটরের অভাবে এক মায়ের গর্ভে জন্ম নেওয়া ৫ শিশুর মৃত্যু

চাঁদপুরের কচুয়ায় স্বাভাবিক ডেলিভারির মাধ্যমে এক মায়ের গর্ভে এক সঙ্গে জন্ম নেয় পাঁচ শিশু। কিন্তু হাসপাতালটিতে ইনকিউবেটর না থাকায় জন্ম নেওয়ার তিন ঘণ্টার ব্যবধানে মারা যায় পাঁচ শিশুই।
Chandpur
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

চাঁদপুরের কচুয়ায় স্বাভাবিক ডেলিভারির মাধ্যমে এক মায়ের গর্ভে এক সঙ্গে জন্ম নেয় পাঁচ শিশু। কিন্তু হাসপাতালটিতে ইনকিউবেটর না থাকায় জন্ম নেওয়ার তিন ঘণ্টার ব্যবধানে মারা যায় পাঁচ শিশুই।

জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যেই তিন শিশু মারা যায় হাসপাতালে। বাকি দুই শিশু মারা যায় বাড়ি নেওয়ার পর। তবে তাদের মা সুস্থ রয়েছেন।

গতকাল শনিবার রাতে কচুয়া উপজেলার কচুয়া টাওয়ার হসপিটাল এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনাটি ঘটে।

হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক শাহাজালাল বলেন, ‘কচুয়া উপজেলার আন্দিরপাড় এলাকা থেকে ছয় মাসের প্রসব ব্যথা নিয়ে মারুফা বেগম (২৫) শনিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তির কিছুক্ষণ পরই নরমাল ডেলিভারি হয়ে একে একে চারটি ছেলে ও একটি মেয়ে শিশুর জন্ম দেন তিনি।’

তিনি আরও জানান, হাসপাতালে ইনকেউবেউটর না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জন্ম নেওয়া এসব শিশুদের অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু এক ঘণ্টার ব্যবধানে পরপর তিনটি শিশু হাসপাতালেই মারা যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেঁচে থাকা দুই শিশুকে নিয়ে অন্য কোথাও চিকিৎসা দেওয়ার পরামর্শ দিলে তারা তাদের গ্রামে চলে যান। পরে রাতেই বাড়িতে ওই দুই শিশুর মৃত্যু হয়।

মারুফার স্বামী দুবাইফেরত মো. ইউনুস বলেন, ‘বিয়ের ছয় বছর পর আমার স্ত্রী এই প্রথম এক সঙ্গে পাঁচ শিশুর জন্ম দেন। কিন্তু, টাকার অভাবে আমরা তাকে ডেলিভারির জন্য অন্য কোথাও নিতে পারিনি। এ জন্য বাড়ির কাছে কচুয়া টাওয়ার হসপিটালে তার ডেলিভারি করানো হয়।’

হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সিনথিয়া সাহা বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই তার চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র দিয়ে আসছি। ডেলিভারির আগে আলট্রা করে আমরা তার পেটে পাঁচটি শিশুর ব্যাপারে নিশ্চিত হই। কিন্তু, সম্ভাব্য সময়ের চার মাস আগেই তার প্রসব ব্যথা ও রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এ জন্য তারা তাকে এই হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে আনার আধা ঘণ্টার মধ্যে পাঁচটি বাচ্চাই নরমাল ডেলিভারি হয়। তাৎক্ষনিক আমরা তাদের অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করি। কিন্তু আর অন্য কোনো ব্যবস্থা না থাকায় হাসপাতালেই তিনটি বাচ্চা মারা যায়। এ জন্য বাকি দুই শিশুকে অন্যত্র নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেই।’

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ‘ছয় মাসে জন্ম নেওয়া শিশুকে বাঁচানো কঠিন। তবে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেহেতু আগেই জানত যে পাঁচটি শিশু রয়েছে ওই নারীর গর্ভে, তাদের উচিত ছিল শুরু থেকেই উন্নত সুবিধাসম্পন্ন হাসপাতালে তাদের রেফার করা। এতে করে শিশুগুলোকে বাঁচানোর যথাযথ চেষ্টা অন্তত করা যেত।’

Comments

The Daily Star  | English

Country must be back in business without delay

Amid worker unrest and insecurity in the industrial sector, entrepreneurs and bankers have urged the new administration to focus on rebuilding confidence in the economy.

1h ago