পাট, চিংড়ি ও কাঁকড়া থেকে পিপিই উদ্ভাবক ড. মোবারক

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে প্রচলিত ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) অতিমাত্রায় পরিবেশ দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সমাধানে এগিয়ে এসেছেন একজন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী। পাটের পলিমার এবং পলিথিন ব্যাগের বিকল্প হিসেবে পাটের তৈরি সোনালী ব্যাগের আবিষ্কারক এবার তৈরি করেছেন পরিবেশবান্ধব পিপিই।

বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশনের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা ড. মোবারক আহমদ খান এমন পিপিই তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন যা মানের দিক থেকে প্রচলিত পিপিইর মতো হলেও বিষাক্ত নয়। সহজে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই তা মিশে যাবে মাটির সঙ্গে। এমন পিপিই তৈরির উপাদান প্রস্তুত হলেও বাকি বিষয়টি রয়েছে প্রাথমিক পর্যায়ে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিপদজনক কোভিড-১৯ মোকাবিলার জন্য ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ্য যেখানে সেখানে ফেলায় পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এর থেকে সংক্রামক রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনাও রয়েছে।

ড. মোবারক জানান, তার তৈরি পিপিইর প্রধান উপাদান হলো পাটের ফাইবার থেকে নেওয়া সেলুলোজ এবং কিটোসান। কিটোসান হচ্ছে কাঁকড়া, গলদা চিংড়ি এবং চিংড়ির মতো মাছের শরীরের বাইরে থাকা শক্ত আবরণ থেকে তৈরি প্রাকৃতিক তন্তুযুক্ত উপাদান।

তিনি আরও জানান, পাট ও চিংড়ি বাংলাদেশে সহজেই পাওয়া যায় এমন উপকরণ। সেলুলোজ এবং কিটোসান তৈরি এবং বায়োপলিমার প্রস্তুত এক দিকে যেমন পরিবেশ বান্ধব, তেমনি ব্যয় সাশ্রয়ী।

সোনালী ব্যাগের মতো পিপিইর বায়োডিগ্রেডেবল উপাদান সেলুলোজ এবং কিটোসান কোভিড-১৯ এবং অন্যান্য ভাইরাস থেকে রক্ষা করবে বলে জানিয়েছেন এই বিজ্ঞানী।

২০১৫ সালে ড. মোবারক ‘পাটের পলিমার’ আবিষ্কার করেছিলেন এবং এটা থেকে এমন ব্যাগ তৈরি করেছিলেন যা দেখতে পলিথিন ব্যাগের মতোই এবং একই রকম কাজ করে। তবে, তার আবিষ্কৃত ব্যাগটি সম্পূর্ণরূপে পরিবেশ বান্ধব।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক মহাপরিচালক ড. মোবারক জানিয়েছেন, তিনি গত সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) কাছ থেকে এর অনুমোদন পেয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘শিগগির আমরা শিশু হাসপাতালে এই নতুন ধারণাটির পরীক্ষা করতে যাচ্ছি।’

নিরাপত্তা সরঞ্জাম তৈরিতে তিনি আইসিডিডিআর,বি এর সঙ্গেও কাজ করবেন বলে যোগ করেন তিনি।

পরিবেশ ও সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার (ইএসডিও) এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, লকডাউনের প্রথম মাসে সার্জিক্যাল ফেস মাস্ক, গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বোতল এবং পলিথিন ব্যাগ থেকে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার টন বিপদজনক প্লাস্টিকের বর্জ্য উত্পাদিত হয়েছে।

এই বর্জ্যের প্রায় ১১ দশমিক দুই শতাংশ সার্জিক্যাল মাস্ক, ২১ শতাংশ পলিথিনের তৈরি সাধারণ গ্লাভস, ২০ শতাংশ সার্জিক্যাল গ্লাভস, ৪০ দশমিক নয় শতাংশ একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া পলিথিনের শপিং ব্যাগ এবং ছয় দশমিক চার শতাংশ হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বোতল রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
eid-ul-azha emergency cases at pongu hospital

An Eid evening at Pongu Hospital: overflowing emergency, lingering waits

The hospital, formally known as NITOR, is a 1,000-bed tertiary medical facility that receives referral patients from all over the country

2h ago