সাংবাদিক কাজলের শারীরিক অবস্থার অবনতির অভিযোগ

অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলায় হাতকড়া পরিয়ে আদালতে হাজির করা হয় সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে। ফাইল ছবি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের শারীরিক অবস্থা গুরুতর অবনতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ছেলে মনোরম পলক।

আজ মঙ্গলবার বিকালে মনোরম পলক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রায় ১০ দিন আগে সর্বশেষ বাবার সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়েছে। বাবা জানিয়েছেন যে, তার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে খুবই খারাপ। বাম হাত প্যারালাইজড হয়ে আছে। বাম হাত দিয়ে কোনো কাজ করতে পারছেন না। ঘনঘন বমি হচ্ছে। বমির সঙ্গে রক্ত যাচ্ছে।’

‘বাবার এই করুণ অবস্থার কথা শুনে আমরা আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা বাবার চিকিৎসা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। আদালত আবেদনে সাড়া দিয়ে বাবাকে যথাযথ চিকিৎসা দিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এখনো বাবাকে কারাগারে বন্দি করে রেখেছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য কোনো হাসপাতালে ভর্তি পর্যন্ত করেনি’, যোগ করেন পলক।

সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের স্ত্রী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমার স্বামী মহামারিকালে জেলে বন্দি একজন সাংবাদিক ও সম্পাদক। বার বার তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেওয়া হচ্ছে। শারীরিক অবস্থা গুরুতর অবনতি হলেও তাকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে না। এর চেয়ে কষ্টের আর কিছুই হতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ওপর এই জুলুম কবে শেষ হবে? দেশের ভাবমূর্তি এভাবে নষ্ট করে লাভ কাদের? একজন সাংবাদিককে মহামারির মধ্যে জেলে রাখলে কি দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় না? আজ ১৬৪ দিন হলো আমি ও আমার সন্তানরা কাজলকে দেখতে পারলাম না!’

কাজলের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সাংবাদিক কাজলের অসুস্থতার খবর শুনে আমরা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর আবেদন করি। আদালত আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কারা কর্তৃপক্ষকে কাজলের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে কারা কর্তৃপক্ষ এখনো কাজলকে কোনো হাসপাতালে ভর্তি করেনি।’

‘আমরা যতদূর শুনেছি কর্তৃপক্ষ কাজলকে কারাগারের ভেতরে রেখেই চিকিৎসা দিচ্ছে। তবে সেখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা খুবই অপ্রতুল, হয়তো জ্বর, সর্দিকাশির চিকিৎসা হতে পারে। কিন্তু বিশেষ ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে সেখানে কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই’, যোগ করেন তিনি।

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া আরও বলেন, ‘সাংবাদিক কাজল হৃদরোগী। এ ছাড়া, তার আরও কিছু শারীরিক সমস্যা আছে। যেহেতু আদালতের পজিটিভ নির্দেশ আছে, তাই এখন কারা কর্তৃপক্ষ কি ব্যবস্থা নেয়, আমরা সেদিকে তাকিয়ে আছি। না হলে পরবর্তীতে আবার আমরা বিষয়টি জানিয়ে আদালতে আবেদন করব।’

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সাংবাদিক কাজল আড়াই থেকে তিন মাস ধরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। তাকে যথাযথ চিকিৎসা প্রদানে আদালতের নির্দেশ সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র আমরা এখনো হাতে পাইনি।’

কাজলের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলার মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ‘অবশ্যই কাজলের শারীরিক অবস্থা ভালো আছে, খারাপ থাকলে তো তিনি হাসপাতালেই থাকতেন।’

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago