শৈলেন্দ্রের সঙ্গে শচীন দেব বর্মণের ‘ঝামেলার’ কারণে সিনেমার গীতিকার হন গুলজার
৮৬ বছরে পা রাখলেন ‘সম্পূর্ণ সিং কালরা’। নাম শুনে মনে হবে, উনি আবার কে? এই নামের কাউকে কি চিনি? যদি বলা হয় গুলজার, তাহলে চিনতে আর অসুবিধা হবার কথা নয়।
ভারতের প্রখ্যাত কবি, গীতিকার ও চলচ্চিত্র পরিচালক। তিনি ১৯৩৪ সালে পাকিস্তানে জন্মেছেন। দেশভাগের পর পরিবারের সঙ্গে চলে যান ভারতে। আজ বুধবার (১৮ আগস্ট) এই খ্যাতিমান কবি, গীতিকারের জন্মদিন।
রুটিরুজির সন্ধানে মুম্বাইয়ে আসেন গুলজার। অনেক খোঁজার পর একটি মোটর গ্যারেজে মেকানিকের কাজ শুরু করেন। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই তার কবিতা লেখার বাসনা, সারাদিন কাজের পর রাত জেগে কবিতা লিখতেন। মোটর গ্যারেজের কাজে মন বসতো না একসময়। তাই মুম্বাইয়ের সেই সময়ের স্বনামখ্যাত পরিচালক হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের সহকারী হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন তিনি।
একটি ‘ঝামেলা’ তাঁকে প্রথমে সিনেমার গীতিকার হিসেবে জায়গা করে দেয়। ‘বন্দিনী’ সিনেমায় গীতিকার শৈলেন্দ্রের সঙ্গে সুরকার শচীন দেব বর্মণের একটু ‘ঝামেলা’ তৈরি হয়। তাই নতুন একজন গীতিকারের খোঁজ পড়ে। খ্যাতিমান পরিচালক বিমল রায়ের সহকারী দেবু সেনের মাধ্যমে গুলজার গেলেন দেখা করতে। বিমল রায় তখন গুলজারকে চিনতেন না। অনেক ঘটনার পর তৈরি হয় গুলজারের লেখা ‘মোরা গোরা অঙ্গ লেই লে’ শিরোনামের প্রথম গানটি। পরে বিমল রায়ের সহকারী হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।
গুলজারের লেখা বিখ্যাত অন্য গানগুলির মধ্যে রয়েছে- ‘তুজসে নারাজ নেহি জিন্দেগি’, ‘ছাঁইয়া ছাঁইয়া’, ‘তুম আগায়্যা হো নূর’, ‘মেরা কুছ সামান’, ‘চুপকে সে’, ‘মেরে তেরে লিয়ে হি সাত রঙ্গ কে স্বপ্নে চুনে’, ‘জিন্দেগি ক্যায়সি হ্যায় পহেলি’, ‘না জিয়া লাগে না’, ‘সজন আয়ো রে’, ‘অ্যায় বতন’, ‘চপ্পা চপ্পা চরখা চলে’সহ অনেক গান।
গান রচনার পাশাপাশি ছবি পরিচালনা করেও সফল হয়েছেন তিনি। গুলজার পরিচালিত প্রথম সিনেমার নাম ‘মেরে আপনে’। এরপর একে একে নির্মাণ করেছেন ‘আঁধি’, ‘মৌসম’, ‘ইজাজত’, ‘পরিচয়’, ‘কোশিশ’, ‘মাচিস’, ‘হু তু তু’সহ বেশকিছু সিনেমা।
বাংলার প্রেমে পড়ে বাংলা শিখেছেন গুলজার। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা, গান পড়েছেন, অনুবাদও করেছেন। বিয়েও করেছিলেন বাঙালি নায়িকা রাখীকে। যদিও মেয়ে মেঘনা জন্মানোর আগেই বিচ্ছেদ হয় দুজনার। বাবার মতোই নামি পরিচালক মেঘনা গুলজার।
কবি, গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক গুলজার ২০ বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, ৫ বার ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস পেয়েছেন। এ ছাড়া, ২০০৪ সালে পেয়েছেন পদ্মভূষণ। ২০০৯ সালে ‘স্ল্যাম ডগ মিলিওনিয়ার’-এ ‘জয় হো’ গানের জন্য এ আর রহমানের সঙ্গে যৌথভাবে পেয়েছেন অস্কারও।
Comments